সালেক সুফী
ধ্বংসস্তুপের মাঝে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অভিষিক্ত যাকের আলীকে সঙ্গী করে বীরের মত সাহসী ব্যাটিং করে মেহেদী হাসান মিরাজ বাংলাদেশকে এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলো। কিন্তু নতুন বলে কাগিসো রাবাদাকে সামাল দেয়া সম্ভব হলো না. ২৮৭/৭ উইকেট থেকে ৩০৭ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশ দক্কিন আফ্রিকাকে ১০৬ রানের টার্গেট দিয়েছিলো।ওরা ৩ উইকেট হারিয়রে সেই স্কোর তুলে নিয়ে ৭ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিলো। স্পিন ফাঁদ পেতেও দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট জয় অধরা রয়ে গেলো। প্রথম ইনিংসে টস জয় করে মেরুদন্ডহীন ব্যাটিং তাই কাল হলো. কোনো অজুহাত দিতে পারবে না বাংলাদেশ ১০৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার। জানিনা এই একজন পেসার খেলিয়ে কি ফায়েদা পেয়েছে। নিদেনপক্ষে আরো এখন বাম হাতি স্পিনার থাকলেও ভালো হত। দুই দলের গুনে মানে যে ব্যাবধান মনে হয় আরো একটি সিরিজ ধবল ধোলাই আসন্ন বাংলাদেশের।
উইকেটে প্রথম দিনে বাড়তি সিম মুভমেন্ট ছিল ,স্পিন ধরছিল। কিন্তু তাই বলে প্রথম ব্যাটিং করা বাংলাদেশের জন্য মাত্র ৪০.১ ওভারে ১০৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার জন্য সেটি কোনো অজুহাত হতে পারে না. লজ্জাজনক ভাবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। সেই যে পিছিয়ে পড়া সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অতিমানবীয় কিছু করা সম্ভব হয় নি।
উইকেটের সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ কিন্তু প্রথম দিনশেষে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৪০/৬ সীমিত রেখেছিলো। দ্বিতীয় দিনে কিন্তু নিজেদের প্রয়োগ করে ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার লেট্ মিডল অর্ডার জুটি। কাইল ভেরিন ( ১১৪) আর উইলিয়ান মুল্ডারের (৫৪) ভর করে ৩০৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বলতেই হয় ওদের প্রতিরোধের মুখে বাংলাদেশের ব্যাটিং ফিল্ডিং কিছু এলোমেলো ছিল. বাংলাদেশ অবশ্যই একজন পেসার নিয়ে খেলার অভাব অনুভব করেছে। ২০২ রানের বিশাল ব্যাবধানে এগিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের রসদ জুগিয়েছে সন্দেহ নাই.
দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশের টপ অর্ডার একমাত্র মাহমুদুল হাসান জয় ছাড়া প্রথম ইনিংসের মত ভুল করেছে। না পেরেছে রাবাদার পিসি বোলিং খেলতে না সামাল দিতে পড়েছে কেশব মহারাজের স্পিন সামাল দিতে। ১১২/৬ উইকেট হারিয়ে যখন ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা চোখ রাঙাচ্ছে তখন বিশ্বস্থ মেহেদি হাসান মিরাজ ,এই ম্যাচে অভিষিক্ত জাকের আলী অনিককে সাথী করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওদের অনবদ্দ ১১৭ রানের জুটি ঘাঁটিটি মিটিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়। তৃতীয় দিনশেষে ২৯৭/৭ উইকেটে পৌঁছে ৮৬ রানে এগিয়ে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু চতুর্থ দিন সকালে নতুন বলে দ্রুত বাংলাদেশ ইনিংস ৩০৭ রানে গুটিয়ে গেলে মাত্র ১০৬ রানের টার্গেট দিতে পারে বাংলাদেশ। সেই টার্গেট অনেকটা হেসে খেলে ৩ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭ উইকেটের বিশাল জয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় ১-০. ২৯ তারিখ চট্টগ্রামে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দুই ইনিংসে মাহমুদুল হাসান জয়ের মাটি কামড়ানো ইনিংস, দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী মিরাজ (৯৭) ,জাকের আলীর (৫৮) এবং উভয় ইনিংস মিলে তাইজুলের স্বভাব সুলভ স্পিন বোলিং দিয়ে ৮ উইকেট অর্জন মাইল ফলক. আমার মনে হয় টপ অর্ডার ব্যাটিং নিয়ে পরিবর্তন ভাবতে পারে দল। এই ব্যাটিং লাইন আপে মেহেদী মিরাজ অবস্যই ৫ র উপর ব্যাটিং করার যোগ্যতা রাখে। দ্বিতীয় টেস্টে আরো একজন পেসার এবং বাম হাতি স্পিনে অতিথিদের অসস্থির বিবেচনায় আরো এখজন বাম হাতি স্পিনারের কথা ভাবা যেতে পারে। এই টেস্টে যেভাবে মোমিনুল, মুশফিক এবং লিটন ব্যাটিং করেছে ফুটেজ দেখলে ওদের লজ্জা পাবার কথা.
যাহোক অছোয়া হয়ে রইলো দক্ষিণ আফ্রিকা। পারবে কি বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে?