আফগান-বাংলাদেশ ওডিআই: বাংলাদেশ কি পারবে ঘুরে দাঁড়াতে?

সালেক সুফী

বুধবার (৬ নভেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় শুরু হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ। ৯ এবং ১১ নভেম্বর বাকি দুটি ওডিআই হবে একই মাঠে। সংযুক্ত আরব আমিরাত আফগানিস্তান দলের বিকল্প হোম গ্রাউন্ড।  এখানে  নিয়মিত আফগান দল দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে থাকে।

বাংলাদেশের কাছেও উইকেটের পরিবেশ অজানা নয়। আর ওডিআই ফরম্যাটে বাংলাদেশ ভিন্ন দল। তবে প্রশ্ন সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে ভারতে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দেশের মাটিতে ধবল ধোলাই হওয়ার ধকল কাটিয়ে বাংলাদেশ কি পারবে সক্ষিপ্ত ফরম্যাটে সাদা বলের ক্রিকেটে ক্রমাগত উজ্জ্বল হতে থাকা আফগানিস্তান দলের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে?

আফগানিস্তান কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সব পর্যায়ের ক্রিকেটে ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে ভূমিধস ব্যর্থতা ছাড়াও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পথ ধরে বিসিবিতে পরিবর্তন হয়েছে, হেড কোচ হাতুরাসিংহেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, বিশ্বসেরা তুখোড় অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ক্রিকেট জীবনের শেষ বেলায় সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

এতো সবের মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাও খেলতে পারেনি। জানিনা পেশাদার বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা পরাজয়ের ধকল কতটা সামলে নিতে পারবে।

বাংলাদেশের ঘোষিত স্কোয়াডে সাকিব নাই, লিটন দাস সম্ভবত ম্যাচ ফিট না। নাজমুল শান্তকে অধিনায়ক এবং মেহেদী হাসানকে সহ অধিনায়ক করে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। বাম হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং নবীন পেসার নাহিদ রানাকে দলভুক্ত করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে টেস্ট ক্রিকেটে সফল তাইজুল ইসলামকে কেন নেওয়া হলো না যখন সাকিবকে স্কোয়াডভুক্ত করা হয়নি।

বাংলাদেশ স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাওহীদ  হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ (সহ অধিনায়ক), জাকির আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ,  রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাহিদ রানা।

বর্তমান মুহূর্তে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মোট মানসম্পন্ন বিকল্প খেলোয়াড় খুব একটা নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটের বিপর্যস্ত অবস্থায় মানসম্পন্ন ক্রিকেটার সৃষ্টির পরিবেশ আর পরিকল্পনা নাই। পঞ্চ পাণ্ডবের তিন জন নেই। বাকি দুইজনের গোধূলি বেলা। টপ অর্ডার, মিডল অর্ডার, লেট্ অর্ডার কোথাও ভরসা করার মতো ব্যাটসম্যান নাই।

মূলত ব্যাটিং সমস্যার কারণে বাংলাদেশ ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করেছে। ঘুরে দাঁড়াতে হলে মুশফিক, মাহমুদুল্লাহকে মূল দায়িত্ব নিতে হবে। অধিনায়ক শান্ত এবং সহ অধিনায়ক মেহেদী মির্জাকে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে হবে।

হয়তো জাকের অনীক, রিশাদ কিছু বিধ্বংসী ইনিংস খেলবে। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং করে নিয়মিত ১৮০-২০০ স্কোর করে শক্তিশালী বোলিং লাইন আপকে লড়াই করার সুযোগ দিতে হবে। জানিনা সৌম্যকে ফিরিয়ে আনা কতটুকু কাজে আসবে। তানজিদ তামিম, জাকের হাসান সুযোগ কাজে লাগবে আশা করি।

তাসকিন, মুস্তাফিজ, শরিফুলকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ ফিল্ডারদের কাছ থেকে সহায়তা পেলে আফগান দলকে চেপে ধরতে পারবে। মিরাজ, নাসুম, রিশাদ স্পিন আক্রমণের দায়িত্ব কতটুকু সফলভাবে পালন করে তার উপর নির্ভর করবে আফগান দলের স্কোর নির্দি ষ্সীটমায় সীমিত রাখা। দেখতে হবে নাহিদ রানাকে কিভাবে ব্যবহার করে টিম ম্যানেজমেন্ট।

স্বাভাবিক সময় হলে বলতাম বাংলাদেশ ফেভারিট। কিন্তু ক্রিকেটের নাজুক সময়ে ক্রিকেট চরিত্র গড়ে না ওঠা বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে আশাবাদী হতে কাউকে অনেক সাহসী হতে হবে। সিরিজ পর্যায় এড়ানো সহজ হবে বলে মনে করি না। ভুল প্রমাণিত হলে অবশ্য খুশি হবো। চলো বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

8 − five =