চার বছর পর আবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প

বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে তাক লাগিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শেষমেশ যুদ্ধবাজ ডেমোক্রেটিকদের প্রত্যাখ্যান করে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। বিশেষ করে এবারের নির্বাচনে ৭টি দোদুল্যমান বা রণক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত রাজ্যগুলোর ভোটারদের অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খবব বাসস।

মার্কিন নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার-বাসস’র দায়িত্বপ্রাপ্ত বার্তা সম্পাদক মো. আজম সারওয়ার চৌধুরী প্রবাসী বাংলদেশি নাগরিকদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে বলেছেন ট্রাম্পই জয়ী হবেন। তারা আরো থেকেই বলে আসছিলেন, ডেমোক্র্যাটরা তামাম দুনিয়াকে রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে । প্রবাসীরা হচ্ছেন মাহবুব মোর্শেদ মামুন, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সুলতানা আজিম, এবং আরিফা রহমান।

বাইডেনের দল আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা। মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্কট, রাশিয়া-ইউক্রেন-যুদ্ধ, সুদানে গৃহযুদ্ধ এবং ইউরোপসহ বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে সংঘাতময় পরিস্থিতির জন্য তারাই দায়ী। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গুলোর পরিচালিত জরিপেও  ট্রাম্পের পাল্লাভারি দেখিয়েছে।

কমলাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিন একথা বলেছেন মস্কারা করেই। তার অনেক কথা ইঙ্গিত দেয়, তিনি আসলেই ট্রাম্পের জয়ের পক্ষে।এদিকে মার্কিন বংশোদ্ভুত ভারতীয় নাগরিক হয়েও কমলা বর্ণবাদ ও অভিবাসন বিরোধী বক্তব্য দেওয়াতে প্রবাসী ভারতীয়রাও তাকে ভোট দেয়নি বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।

চাথাম হাউসের রাশিয়া এবং ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের সহযোগি ফেলো টিমোথি অ্যাশ আল-জাজিরা’কে বলেছেন, ‘পুতিন বিভিন্ন কারণে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান।’ পুতিন মনে করেন,  ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি নমনীয় এবং ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা না দেওয়া ও রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে পারেন।

অ্যাশ আরো বলেছেন, ‘আমার মতে, পুতিন ট্রাম্পের দিকে তাকিয়ে বলেছেন, আমি বিশ্ব শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য ট্রাম্পকে ছাড়া আর কিছুই বঝি না।’

এদিকে দুই প্রার্থীর কাউকেই সমর্থন দেননি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। তিনি বলেছেন, ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয়ই চীনের প্রতি কঠোর। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালিন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। ২০১৮ সালে চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২শ’ ৫০ বিলিয়ন ডলারের শুল্ক আরোপ করেছিলেন  ট্রাম্প।

শি বলেছেন, যদি আবারো ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত ১শ’ ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করবেন না।শি বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছেন।

ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেন নি। তবে এটা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, তিনি ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকেছেন। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নেতানিয়াহু সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল।

২০১৯ সালে ইসরাইলি-আমেরিকান কাউন্সিলে ট্রাম্প বলেছিলেন,  ‘হোয়াইট হাউসে ইহুদি রাষ্ট্রের জন্য এই প্রেসিডেন্টের মতো ভালো বন্ধু কখনো পাওয়া যাবে না। ’অপরদিকে নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ট্রাম্প  ‘হোয়াইট হাউসে ইসরাইলিদের ঘনিষ্ট বন্ধু। তবে বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে। বাইডেন শপথ নিলে নেতানিয়াহু তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। পরে এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ‘প্রতারিত’ হয়েছেন।

গত ৪ অক্টোবর বাইডেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, নেতানিয়াহু ‘ইন্টেনশনালী’ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি থেকে সরে আসতে চাচ্ছেন না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ‘উদ্দেশ্যমূলক’ একটি চুক্তি করেছিলেন।

নেতানিয়াহুর নাম উল্লেখ করে বাইডেন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আমার চেয়ে কোনো প্রশাসন ইসরাইলকে বেশি সাহায্য করেনি। নেতানিয়াহুর বিষয়টি মনে রাখা উচিত ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলাকে বেশিরভাগ ইউরোপীয় নেতারা পছন্দ করেন।

এদিকে ট্রাম্প বেশ কয়েকবার ন্যাটো  থেকে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে পলিটিকো’র রিপোর্ট বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

12 − 9 =