অভিনেত্রী শিমুর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

এক দিন আগে কলাবাগানের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর খণ্ডিত লাশ পাওয়া গেছে ঢাকার কেরানীগঞ্জের রাস্তার পাশে বস্তাবন্দি অবস্থায়।এ ঘটনায় সোমবার রাতে শিমুর স্বামী শাখাওয়াত আলী নোবেল এবং তার বন্ধু ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার জানিয়েছেন।

স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর গ্রিনরোড এলাকার বাসায় থাকতেন ৪০ বছর বয়সী শিমু। তিনি নিখোঁজ জানিয়ে সোমবার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্বামী নোবেল। নিউ মার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বলেন, জিডিতে নোবেল বলেছিলেন, মাওয়ায় শুটিংয়ের কথা বলে রোববার সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি তার স্ত্রী।

এদিকে সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে দুটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে বস্তার ভেতর থেকে খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আবু সালাম মিয়া সে সময় বলেছিলেন, “অন্য কোথাও তাকে হত্যার পর লাশ টুকরো করে বস্তায় ভরে গাড়িতে করে ওখানে ফেলে রেখে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।”

পরে সোমবার রাতে হাসপাতারের মর্গে গিয়ে দেখে ওই লাশ শিমুর বলে জানান বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন।তিন সাংবাদিকদের বলেন, শিমু রোববার গভীর রাতেও বাসায় না ফেরায় এবং তার ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সন্দেহ হয়। এরপর সম্ভাব্য সব জায়গায় তারা খোঁজ নিতে শুরু করেন। বিভিন্ন হাসপাতাল, থানা ও এফডিসিতেও যান। সোমবার রাতে কেরানীগঞ্জে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধারের খবর পেয়েই তিনি থানায় ছুটে যান। পরে সেখান থেকে মর্গে গিয়ে  নিশ্চিত হন, সেটা তারই বোনের লাশ।পরে রাতেই ছয়জনকে আসামি করে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন খোকন। শিমুর স্বামী নোবেল, তার বন্ধু ফরহাদ এবং তাদের গাড়িচালককেও রাখা হয় আসামির তালিকায়।

মামলা হওয়ার পর নোবেল ও ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নোবেলের গাড়িটিও জব্দ করা হয়। গাড়িতে রক্তের আলামত ছিল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন খোকন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, “কলাবাগান থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা সংক্রান্ত বেশ কিছু আলামতও আমরা পেয়েছি।”

কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে ১৯৯৮ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে শিমুর। পরের বছরগুলোতে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ আরও বেশ কিছু পরিচালকের প্রায় ২৫ সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে দেখা যায় তাকে। শাকিব খান, অমিত হাসানসহ কয়েকজন তারকার সঙ্গেও কাজ করেছেন।

শিমু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহযোগী সদস্য ছিলেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় এবং প্রযোজনায়ও করেছেন।তার ফেসবুক পেইজে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একটি বাণিজ্য বিষয়ক সাময়িকী, একটি বেসরকারি টেলিভিশনের বিপণন বিভাগে কাজ করার পাশাপাশি একটি প্রডাকশন হাউজও চালাতেন এই অভিনেত্রী।

বিডিনিউজ

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 × 5 =