একটি প্রতিদ্বন্দিতামুখর ফাইনাল ম্যাচের অপেক্ষায়

আগামী রবিবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে পিসিবি আয়োজিত হাইব্রিড পদ্ধতির আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল খেলা। প্রতিদ্বন্দী ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির রানার্স আপ দল ভারত এবং টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে থাকা তাসমান সাগর পাড়ের দেশ নিউজিলণ্ড। ভারত কিন্তু টুর্নামেন্টের শুরু থেকে আজ অবধি দুবাই অবস্থান করছে। গ্রূপের তিনটি এবং একটি সেমি ফাইনাল একই মাঠে খেলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সব কয়েকটি ম্যাচ জয়ী হয়েছে। নিউজিল্যান্ড গ্রূপের ম্যাচে পাকিস্তান, বাংলাদেশকে পরাজিত করলেও ভারতের সঙ্গে হেরে গ্রূপে দ্বিতীয় হয়ে সেমি ফাইনালে উঠে। সেমি ফাইনালে অপর গ্রূপের শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে ফাইনালে উঠে। নিউজিল্যান্ড সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে ভারতে টেস্ট সিরিজে ধবল ধোলাই অর্জন করেছিল। চেনা প্রতিদ্বন্দ্বী।  তবে ভারত কিন্তু ওডিআই ফরম্যাটে তুখোড় দল এবং এই মুহূর্তে দুবাই উইকেট, পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে। অপেক্ষাকৃত শ্লথ গতির উইকেটে সাফল্য সম্ভাবনাময় চার চার জন উচ্চমানের স্পিনার সমন্বিত ভারতীয় একাদশে আছে ৮ জন তুখোড় ব্যাটসম্যান। কাগজ কলমে ভারত শিরোপা জয়ের জন্য ফেভারিট দল। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্রিকেট গৌরবোজ্জ্বল অনিশ্চয়তার খেলা। আর নিকট অতীতে ভারতকে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে যে দুটি দলের তার অন্যতম নিউজিল্যান্ড।  ব্ল্যাক ক্যাপসরা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে পাকিস্তানে পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে একটি তিন জাতির ওডিআই টুর্নামেন্ট জিতেছে। এই টুর্নামেন্টে সূচনাকারী এবং মিডল অর্ডার অনেক ব্যাটসম্যান দারুন ফর্মে আছে। পেস এবং স্পিন বোলিং মিলে একটি ভারসাম্যমূলক বোলিং আক্রমণ রয়েছে। গ্রূপের শেষ ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে খেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে কৌশল সাজানো নিউজিলান্ডকে ফাইনালে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার দল হবেনা। বিশ্বাস দারুন উপভোগ্য একটি হাড্ডা হাড্ডি লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছে বিশ্বের ক্রিকেট প্রেমিরা।

শুরুতেই বলি ভারত আক্রমণের ক্স-ফ্যাক্টর জাসপ্রিত বুমরার অনুপস্থিতি কিন্তু আদৌ অনুভূত হতে দেয়নি দারুন ফর্ম নিয়ে দলে ফিরে আশা মোহাম্মদ সামি। ওর সঙ্গে নতুন বলে বোলিং করছে মানসম্পন্ন চৌকষ খেলোয়াড় হার্দিক পান্ডিয়া।  জানিনা আজ নতুন কৌশলে মোহাম্মদ সিরাজ খেলবে কিনা। সেই ক্ষেত্রে হয়ত চার জন স্পিনার থেকে একজন নাও খেলতে পারে। এদের মাঝে আবার আক্সার প্যাটেল এবং রাভিন্দ্রা জাদেজা কিন্তু ব্যাট হাতেও দারুন কার্যকরী। দুই ভিন্ন লেগ স্পিনার কুলদ্বীপ যাদব এবং ভারুন চক্রবর্তী ভারতের তুরুপের তাস। আর তাই কি সিদ্ধান্ত নেবে ভারত সেটি দেখতে হবে। নিউজিল্যান্ডরে টপ এবং মিডল অর্ডারে রাচীন রাভিন্দ্রা, কেন উইল্লিয়ামসন, উইল ইয়ং, ড্যারিল মিচেল এবং গেলেন ফিলিপ্স কিন্তু ছন্দে আছে। টপ লাথাম আর মিচেল সান্টনার কিছু হেলাফেলার নয়। যদি নিউজিল্যান্ড প্রথম ব্যাটিং করে ২৮০-৩০০ করে ফেলে তাহলে কিন্তু দারুন জমে উঠবে ফাইনাল। ভারত দল কিন্তু মাঠে উপস্থিত ৯০% দর্শক এবং বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি ভক্ত অনুরাগীদের প্রচন্ড মানসিক চাপে থাকবে। দুই কিংবদন্তি রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলির জন্য হয়তো আইসিসি আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টে এটাই শেষ ম্যাচ। ভারত দল কিন্তু সম্ভাব্য বিদায়ী ম্যাচটি রাঙিয়ে দিতে চাইবে। রোহিত, গিল, ভিরাট ছাড়াও ভারত দলে রয়েছে রাহুল, শ্রেষ আয়ার, হার্দিক পান্ডিয়া, আক্সার প্যাটেল, রবীন্দ্র জাদেজার মত সাদা বল ক্রিকেটে পরিণত সৈনিক। কিন্তু মনে রাখতে হবে মাট হেনরী, উইল অরুখ, বেনসিয়ার্স সমন্বিত পেস আক্রমণ এবং মিচেল সান্টনার, ব্রেসওয়েল এবং প্রয়োজনে গ্লেন ফিলিপ্স সমন্বয়ে গড়া স্পিন আক্রমণ কিন্তু ফেলনা নয়।  আর ব্ল্যাক ক্যাপসরা কিন্তু টুর্নামেন্টের সেরা ফিল্ডিং করা দল। খেলাটি সম্ভবত ব্ল্যাক ক্যাপ্স কিংবদন্তি কেন উইলিয়ামসনের জন্য বিদায়ী ম্যাচ হতেও পারে। ভারতের দিকে জয়ের পাল্লা ঝুকে থাকলেও একটি দারুন ম্যাচ দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব তা আশা করা যেতেই পারে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five − one =