বার্বাডোজের রাজধানী ব্রিজটাউন ‘ফান্ড ফর রেসপন্ডিং টু লস অ্যান্ড ড্যামেজ (এফআরএলডি)’ বোর্ডের পঞ্চম বৈঠকে তহবিলের প্রাথমিক অর্থ ছাড়ের রূপরেখা নির্ধারণ করার কথা রয়েছে। খবর বাসস
বৈঠককে কেন্দ্র করে, জলবায়ু সুবিচার, তরুণদের কার্যকর অংশগ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য সরাসরি অর্থায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছে ২০১৬ সাল থেকে সারাদেশে ক্লাইমেট জাস্টিস নিয়ে কাজ করা সংগঠন ইয়ুথনেট গ্লোবাল।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, জলবায়ু সংকট এখন ভবিষ্যতের হুমকি নয়। বিশেষত বাংলাদেশের মতো সামনের সারির দেশগুলোর জন্য এটি ইতোমধ্যে আমাদের প্রতিদিনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে সরাসরি লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড বিতরণ নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায় দ্রুত সহায়তা পাবে এবং তাদের পুনরুদ্ধারের পথ সুগম হবে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল বছরের পর বছর ধরে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ছিল। গরিব দেশগুলো প্রায় তিন দশক ধরে বিশ্ব ঊষ্ণায়নের কারণে তাদের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করতে ধনী দেশগুলোর সহায়তা দাবি করে আসছে। ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর উদ্যোগের মাধ্যমে এই তহবিল সম্পর্কে প্রথম বিশ্বব্যাপী নজর তৈরি হয়। প্রয়াত জলবায়ুবিজ্ঞানী ড. সালিমুল হক দীর্ঘদিন ধরে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ বিষয়টিকে জাতিসংঘের কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
এফআরএলডি বৈঠকটি জলবায়ু ক্ষতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী। এই উদ্যোগটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।
এতে বলা হয়, ২০২২ সালে মিশরের শার্ম এল শেখ শহরে জাতিসংঘের ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৭) লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডের প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই তহবিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলা করতে সাহায্য করা হবে। ২০২৩ সালের দুবাইয়ে কপ-২৮ সম্মেলনে ফান্ডটির কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০২৪ সালে কপ-২৯-এর অধীনে এই ফান্ডের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালুর জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মধ্যে ‘ ট্রাস্টি অ্যাগ্রিমেন্ট’ এবং ‘সেক্রেটারিয়েট হোস্টিং অ্যাগ্রিমেন্ট’ উল্লেখযোগ্য। অস্থায়ী হোস্ট হিসেবে বিশ্বব্যাংকের তত্ত্ববধানে তহবিলটির সচিবালয় ফিলিপাইনের ম্যানিলায় স্থাপিত হয়েছে। এই পর্যন্ত লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে মোট আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৭৩০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এই অর্থায়নের মাধ্যমে ২০২৫ সাল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই বৈঠকটি চলবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত।