কেন চট্টগ্রাম টেস্ট জয় অতি গুরুত্বপূর্ণ

আইসিসি রাঙ্কিংয়ে তলানিতে থাকা  সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টে অপ্রত্যাশিতভাবে পরাজিত বাংলাদেশের জন্য চট্টগ্রামে সোমবার থেকে শুরু হওয়া টেস্ট জয় করা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সম্মান রক্ষার স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হেরে গেলে অথবা টেস্ট অমিমাংশিতভাবে শেষ হলে সিরিজ জয় করবে সফরকারী দল। সেটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক  ক্রিকেট ভাবমূর্তির জন্য শুভ ইঙ্গিত বহন করবে না। সবাই জানে একসময়ের তুখোড় দল জিম্বাবুয়ের এখন সেই জৌলুশ নেই। একসময় ক্রিকেট বিশ্বের সেরা দলগুলোর সঙ্গে টক্কর দিত দলটি। নানা জটিলতায় জিম্বাবুয়ে এখন পিছিয়ে পড়েছে। বেশ কয়েক বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলা থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়েছিল। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আবার ফিরেছে, কিন্তু শীর্ষ আট দলের বাইরে থাকায় এখন মূল স্রোতে খেলছে না।

বাংলাদেশের সব চেয়ে কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী দলটি। সম্পন্ন বা বিপন্ন মুহূর্তে যখনি আহবান জানানো হয় ছুটে আসে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এখন আকাল চলছে। কোন ফরম্যাটেই সাফল্য নেই। দেশ সেরা ৫ আইকন ধীরে ধীরে অবসরের পথে। পরিবর্তনের পথে থাকা নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা খেই হারিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। তবুও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে যাবে সেটি কেউ কল্পনা করেনি।

সরাসরি বিশ্লেষণ করলে বলবো বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্বলতা টেস্ট পরজয়ের মূল কারণ। ওপেনারদের টেকনিক, টেম্পেরামেন্ট বা স্কিল বলতে কিছু নেই। নাজমুল শান্ত আর মোমিনুল একাধিক বার জীবন পেয়েও দলকে বড় স্কোরের দিকে নিতে ব্যর্থ ছিল। নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে মুশফিক, মেহেদী মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর প্রথম ইনিংসে ৮২ রানে পিছিয়ে পড়া ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।

অনেকে বলেন স্কোয়াড এবং একাদশ নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ ছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেটে নানা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তামিম, সাকিব দলে নেই।  লিটন, তাসকিন, রিশাদ, হৃদয় টেস্ট খেলছে না। দেশে চলমান ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলা কাউকে বিবেচনা করা হয় নি। দ্বিতীয় টেস্টে দেখলাম বর্ষীয়ান আনামুল হক বিজয়কে দলে নেয়া হয়েছে। নেয়া হয়েছে তরুণ বাম হাতি স্পিনারকে। প্রথম টেস্টে মেহেদী মিরাজ ছাড়া অন্য বোলাররা ভালো বোলিং করেছে বলা যাবে না। টেস্ট জয় করতে হলে বাংলাদেশকে ভালো ব্যাটিং করে ৩৫০-৪০০ রান করতে হবে। সেটি করতে হলে টপ অর্ডারের অন্তত দুইজনকে লম্বা সময় উইকেটে থেকে দলের ব্যাটিং নেতৃত্ব দিতে হবে। মুশফিক, শান্ত, মোমিনুল এবং দলে ফেরা বিজয়কে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। জিম্বাবুয়ে বোলিংয়ে এমন কোনো দুধর্ষ বোলার নেই। ব্লেসিং মুজারামবাণীর সামনে লুটিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্ভাগ্য জনক ভাবে। বাংলাদেশের বোলারদের দ্বিতীয় ইনিংসের শেষ দিক ছাড়া একটু অপ্রস্তুত অগোছালো মনে হয়েছে। ধারাবাহিকতার অভাব ছিল। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফস্কে গেছে দুই দলের।

আশা করি প্রথম টেস্টের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। আর না হলে লজ্জার বিড়ম্বনা সইতে হবে। এমনিতেই বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্ভ্রম এখন তলানিতে। অতয়েব জয় ছাড়া বিকল্প নেই। জানি সিরিজের ফলাফল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কোন প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মনোবল চূর্ণ হয়ে যাবে। হতাশা সৃষ্টি হবে ভক্ত সমর্থকদের মাঝে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eight + 12 =