বাংলাদেশ -শ্রীলংকা টি ২০ সিরিজ: ৭২ ঘন্টার ব্যাবধানে মুদ্রার অপর পিঠ দেখলো বাংলাদেশ

তিন ম্যাচ টি ২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৭  উইকেটের বিশাল ব্যাবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ কাল  ডাম্বুলায় একই শ্রীলংকা দলের বিরুদ্ধে বাঁচা মরার লড়াইয়ে দারুন ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৮৩ রানে ম্যাচ জিতে সমতা আনলো সিরিজে।  টস হেরে ব্যাটিং করতে এসে অধিনায়ক লিটন কুমার দাসের ম্যাচ সেরা ৫০ বলে ৭৬ রান আর শামীম পাটোয়ারী ৪৮ আর তাওহীদ হৃদয়ের ৩১ রানের কল্লানে ১৭৭/৭ রান করেছিল। দুর্দান্ত বোলিং আর তুখোড় ফিল্ডিং করে বাংলাদেশ শ্রীলংকাকে ৯৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮৩ রানে জয় ছিনিয়ে নিলো। কাল ম্যাচ প্রিভিউতে লিখেছিলাম ১৭০-১৮০ রান করলে বাংলাদেশ জিতবে। বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক ফর্মের বিবেচনায় এমন জয় নিঃসন্দেহে কল্পনার বাইরে। প্রশংসা করতেই হবে বাংলাদেশের এই বিশাল অর্জনের। ওডিআই সিরিজের মতোই এই সিরিজেও শেষ ম্যাচটি সিরিজ নির্ধারণী হয়ে গেলো।

জাকের আলী, মস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম তিনটি পরিবর্তন নিয়ে খেলা বাংলাদেশের শারিরিক ভাষায় ছিল ভিন্ন মাত্রায়।  শুরুতে মাত্র ৭ রানেই দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশের পিঠ দেয়ালে থেকে গিয়েছিলো। দীর্ঘ দিন রান খরায় থাকা অধিনায়ক লিটন দাসের ব্যাটে ছিল রোদেলা দুপুরের উজ্জ্বলতা। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটির সাবলীল ৬৯ রান ম্যাচের মোমেন্টাম পাল্টে দিয়েছিলো। মেহেদী মিরাজ ব্যর্থ হবার পর উইকেটে এসে শামীম পাটোয়ারী উপহার দিলো ২৭ বলে ৪৮ রানের এক ম্যাচ ডিফাইনিং ইনিংস। ৫ম উইকেট জুটিতে যুক্ত হলো ৭৭ রান। ৫০ বলে ৭৬ রান করা লিটনের ইনিংসে ছিল ১ চার আর ৫ বিশাল ছক্কা। ইনিংসটি ছিল রান খরায় থাকা  দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আষাঢ়ের বারিধারা।  বাংলাদেশের দুর্দান্ত ঘুরে দাড়ানোর ইনিংসে এলোমেলো হয়েছিল শ্রীলংকার ব্যাটিং ফিল্ডিং।

শ্রীলংকা দলের জবাবে ওদের উড়ন্ত ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানরা যেন খেই হারিয়ে ফেলেছিলো। বাংলাদেশ দুই বাম হাতি পেসার  মুস্তাফিজ আর শরিফুলকে ফিরিয়ে আনায় হালে  পানি পায়নি লংকান ব্যাটসম্যানরা। কুশল মেন্ডিস (৮), কুশল পেরেরা (০), আভিস্কা ফের্নান্দো (২), চরিথা আসালংকা (৫) বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিং ফিল্ডিংয়ের শিকার হলে দলের ইনিংস কখনো গতি পায়নি। কেবল মাত্র পাথুম নিঃশঙ্কা ৩২ আর দাসুন শানাকা ২০ ছাড়া কোনো ব্যাটসম্যান দুই অনেকেই পৌঁছতে পারেনি। শরিফুল (২/১২), মুস্তফিজ (১/১৪), শরীফুদ্দিনের  (২/২১) কিপ্টে বোলিংয়ের সঙ্গে রিশাদ হোসেনের (৩/১৮) আক্রমণাত্মক লেগ স্পিন যুক্ত হওয়ায় ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় লংকান ইনিংস।

কাল লিখেছিলাম নিরাশার বালুচরে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে অপেক্ষার কথা। সেই প্রতীক্ষার ভরা পেয়ালাটা অর্জনে অনেকটাই পরিপূর্ণ। ১-১ সমতায় থাকা সিরিজ জয়ের স্বপ্নটা এখন দেখা যেতেই পারে। ক্রিকেটকে কেন সুন্দরী ললনার মত রহস্যময়ী বলা হয় কাল সেটির প্রদর্শনী হয়ে গেলো। স্বস্তির কারণ যে লিটন রানে ফিরেছে। নিজের মূর্তিতে সক্রিয় থাকলে লিটন এমনি ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলার যোগ্যতা রাখে। অধিনায়ক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলে দলের শারিরিক ভাষা পাল্টে যায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × five =