শ্রীলঙ্কা সফরে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ২-১ এ টি ২০ সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ দেশের মাটিতে ২০ জুলাই শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি ২০ সিরিজ জয়ের প্রত্যয় নিয়ে শুরু করবে। ২২ এবং ২৪ হবে বাকি দুটি ম্যাচ। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে কিন্তু পাল্লা পাকিস্তানের পক্ষে। বাংলাদেশ পাকিস্তান ২২ বার টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। পাকিস্তান জিতেছে ১৯ বার ,বাংলাদেশ ৩ বার। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে বাংলা ওয়াশ করেছিল। কিন্তু একই ভাবে বাংলাদেশকে পাকিস্তান ওডিআই সিরিজে ধবল ধোলাই করে। পরিস্থিতি আর প্রেক্ষাপট পাল্টে গেছে। বাংলাদেশ স্কোয়াডে যেমন নেই এখন সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ ঠিক তেমনি পাকিস্তান স্কোয়াডে নেই বাবর আজম, শাহীন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ রিজওয়ান, হাসান রউফ, শাদাব খান। খেলাগুলো হবে বেঙ্গল টাইগার্সদের অভয় অরণ্য মীরপুর শেরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। মনে করা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুর্গম দুর্গ। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিলান্ড দলও যেখানে খাবি খেয়েছে। এছাড়া সদ্য শ্রীলংকার বিরুদ্ধে দাপুটে সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাসী লিটন নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল। অপরিবর্তিত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ: লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক) তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, শেখ মোহাম্মদ নাঈম, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, মাহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
পাকিস্তান: সালমান আলী আগা (অধিনায়ক), ফখর জামান, মোহাম্মদ হারিস , আবরার আহমেদ, আহমেদ দানিয়াল, খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফ, হাসান নাওয়াজ, হুসাইন তালাত, মোহাম্মদ আব্বাস আফ্রিদি, মোহাম্মদ নাওয়াজ, সাহিবজাদা ফারহান, সাইম আয়ুব, সালমান মির্জা এবং সুফিয়ান মুকিম।
বাংলাদেশ কিন্তু শ্রীলংকার বিরুদ্ধে প্রথম টি ২০ হেরে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টি ২০ দাপুটে জয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে শ্রীলংকায় ঐতিহাসিক প্রথম সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করে কিছু কৌশলগত পরিবর্তন এবং কয়েকজন খেলোয়াড় (লিটন, তানজিদ, মাহেদী, তাওহিদ হৃদয় ) দারুন পারফর্ম করায়। বিজয়ী দলের মনোবল এখন তুঙ্গে। আর আছে পাকিস্তানের সঙ্গে সর্বশেষে ওডিআই সিরিজে ধবল ধোলাইয়ের জবাব দেয়ার প্রতিজ্ঞা।
তবে পাকিস্তান দল কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী। বাংলাদেশকে সিরিজে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়েই খেলতে হবে।
পাকিস্তান দলে শাহীন শাহ, হারিস রউফ, মোহাম্মদ নাসিম না থাকলেও মিরপুরের ধীর, শ্লথ গতির উইকেটে ভালো বোলিং করার জন্য আছে আব্বাস আফ্রিদি, ফাহিম আশরাফ, মোহাম্মদ নাওয়াজ। আছে আবরার আহমেদ, সুফিয়ান মুকিমের মত স্পিনার। এই ধরণের উইকেটে ভালো ব্যাটিং করার মত ফকর জামান, সাইম আয়ুব, সালমান আগা। খুশদিল শাহ বাংলাদেশ ক্রিকেটে খেলে অভিজ্ঞ। তাই পাকিস্তান বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক পরিকল্পনা নিয়েই খেলতে হবে্।
বাংলাদেশের তানজিদ তামিম উড়ন্ত ফর্মে আছে। তবে উইকেটের হের-ফেরে তাকে মানিয়ে নিতে হবে। পারভেজ ইমনের টেকনিক পাল্টানো প্রয়োজন। হয়ত নাঈম সুযোগ পাবে। কিন্তু ওকে দলে নিলে যেন ৪ নম্বরে ব্যাটিং করতে পাঠানো না হয়। দেখতে হবে লিটন কতটা ধারাবাহিক থাকে। তাওহীদ হৃদয় নিজেকে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে মুশফিকের মত নির্ভর যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশ সুবিধা এখন শামীম পাটোয়ারী, জাকের আলী ভালো খেলায়। কয়েকটি ভালো ইনিংস খেলেছে তানজিম সাকিব, স্কোয়াডে ফিরেছে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
বাংলাদেশকে হয়তো পেস বোলিং নিয়ে কিছুটা চিন্তা করতে হবে। মুস্তাফিজ অবশ্যই খেলবে। কিন্তু ধীর গতির উইকেটে তাসকিন, তানজিম, শরিফুলকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলতে হবে। আমি তিন স্পিনার নিয়ে খেলতে পরামর্শ দিবো। সেই ক্ষেত্রে মাহেদী, মেহেদী এবং নাসুম প্রথম চয়েস হতে পারে। পরিস্থিতি বুঝে রিশাদ হোসেনকে খেলাতে হবে। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ দেশের মাটিতে ফেভারিট। কিন্তু ভালো খেলে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির চোখ রাঙানি থাকবে। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে সংক্ষিপ্ত ম্যাচের কথা মাথায় রাখতে হবে।