রিয়াদের দোকানে দোকানে সাজান লাল আন্তর্বাস!

ভ্যালেন্টাইন্স বা ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের দোকানে দোকানে লাল রঙের বিভিন্ন পণ্য এবং অন্তর্বাস সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তবে কোথাও নেই ভালোবাসা দিবসের কথা। অথচ আজকের এ দিনটিকেই সামনে রেখে লাল রঙের ফুল থেকে লাল রঙের অন্তর্বাস পর্যন্ত বিক্রি করছেন সৌদি ব্যবসায়ীরা। সৌদির তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এ দিবসটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উৎসাহও দেখা গেছে। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে আয়োজন। কিন্তু কোথাও ‘ভালোবাসা’ শব্দটি নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াদের একটি বিপণি কেন্দ্রের বিক্রেতা এএফপিকে বলেন, ‘প্রশাসন থেকে আমাদের লাল রং দিয়ে দোকান সাজাতে বলা হয়েছে। কিন্তু কোথাও ভালোবাসা দিবসের কথা উল্লেখ করা যাবে না। দোকানের জানালায় আমাদের লাল অন্তর্বাস দিয়ে সাজিয়ে রাখতে বলা হয়েছে’।

সৌদি আরবের দোকানগুলোর এ রূপান্তরই বলে দিচ্ছে কতটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। একটা সময় ১৪ ফেব্রুয়ারির দিনে দেশটির ধর্মীয় পুলিশ বেশ তৎপর থাকত, যাতে কেউ ঘটা করে দিবসটি পালন না করতে পারে।

সৌদি আরব এখন তার নারীদের স্বাধীনতা দিতে শুরু করেছে। ধর্মীয় পুলিশের কার্যপরিধি কমানো হয়েছে। নারীরা এখন ঐতিহ্যবাহী কালো রঙের পোশাক ছাড়াও অন্য রঙের পোশাক পরতে পারছেন। দেশটির বেশ কিছু কট্টর ধর্মীয় নেতাকে কারাগারে নিক্ষেপ করতে হয়েছে রিয়াদকে। কারণ তারা সৌদির এ তথাকথিত উন্নয়নের পক্ষে নন।

রিয়াদের গ্রেনাদা মলের এক বিক্রেতা বলেন, ‘ক্রেতাদের দেখানোর জন্য আমরা লাল রঙের কাপড় টানিয়ে রেখেছি। ভালোবাসা দিবসে অনেক ক্রেতাই লাল রঙের অন্তর্বাস কিনতে আসেন। এ সময় আমরা মূল্যছাড় দিই। কিন্তু এ ছাড়কে আমরা ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বলতে পারি না’।

অথচ একটা সময় সৌদিতে প্রকাশ্যে অন্তর্বাস বিক্রি করাকে অপরাধ হিসেবে দেখা হতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী ক্রেতা দোকানে টানিয়ে রাখা অন্তর্বাস প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি এগুলো দেখতে চাই না। আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। কিন্তু অনেকেই এটা পছন্দ করে। এটা তাদের পছন্দের স্বাধীনতা’।

সৌদি আরবের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়সই ৩৬ বছরের নিচে। তরুণ এ প্রজন্ম ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতে চায়। মুখে বা লিখে ভালোবাসা দিবস পালন করতে না পারলেও, উদযাপনের মধ্য দিয়ে তারা উপভোগ করতে চাইছে।

 দেশ রূপান্তর

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

16 − 11 =