আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খালেদা জিয়ার স্মরণীয় মুহূর্ত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শুধু দেশের রাজনীতিতেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ছিলেন পরিচিত ও সম্মানিত এক নেতৃত্ব। রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ, বৈঠক ও আনুষ্ঠানিক মুহূর্তগুলো আজও বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে আছে। খবর বার্তা২৪.কম

২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রস্তুতি দেখতে বাংলাদেশ সফরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। সে সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়, যেখানে দুজনকে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে ক্যামেরাবন্দি হতে দেখা যায়।

২০০২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় চীন–বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় চীনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঝু রংজির সঙ্গে খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতা নজর কাড়ে। একই বছর পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি পারভেজ মোশাররফ বাংলাদেশ সফরে এলে তাকে রাষ্ট্রীয় লালগালিচা সংবর্ধনা জানান খালেদা জিয়া।

২০০২ সালে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান সিনিয়র জেনারেল থান শোয়ের বাংলাদেশ সফর, ভারতের নয়াদিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার সঙ্গে বৈঠক—সবই সে সময়ের আঞ্চলিক কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে আছে।

২০০৩ ও ২০০৪ সালে ওআইসি ও সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময় দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও গুরুত্ব পায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জাফরুল্লাহ জামালি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সূর্য বাহাদুর থাপাসহ আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর যৌথ উপস্থিতি সার্ক ইতিহাসের স্মরণীয় ছবি হয়ে রয়েছে।

২০০৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১৩তম সার্ক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে একসঙ্গে নীরবতা পালন করেন খালেদা জিয়া। একই বছরে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী হুয়াং জু, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট মেগাবতী সুকর্ণপুত্রী, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ট্রান ডাক লুং এবং কুয়েত ও কাতারের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেয়।

২০০৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানির সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। একই বছরে কুয়েত ও পাকিস্তান সফরেও তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়।

পরবর্তী সময়ে বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে ভারতের আজমির শরিফে খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর দরগা জিয়ারত এবং ২০১৭ সালে ঢাকায় তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ তার প্রমাণ।

বিভিন্ন সময়ে ধারণ করা এসব ছবি শুধু ব্যক্তিগত স্মৃতি নয়, বরং বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব ও সম্পর্কের সাক্ষ্য বহন করে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

6 + nine =