সালেক সুফী: আজ নিজেদের সেরাটি দিয়ে বাংলাদেশ যদি ম্যাচটি জিতে নেয় তাহলে ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হবে। প্রথমবারের মতো পূর্ণ শক্তির একটি তুখোড় বিদেশি দলের বিরুদ্ধে ওদের মাঠে সিরিজ জয় ৫১ ম স্বাধীনতা উৎসবকে আরো বর্ণিল করে তুলবে। আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত হবে আলোজ্বলা বাংলাদেশ। কাজটি অসম্ভব না হলেও সোজা হবে না। চৌকষ সাকিবকে ম্যাচ জয়ী অবদান রাখতে হবে। ক্যারিয়ারের গোধূলি বেলায় তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাকে নিজেদের সেরা খেলাটি খেলতে হবে। লিটন, আফিফ, মিরাজ ভালো ব্যাটিং করছে। বল হাতে তাসকিন, শরিফুলের মতো মুস্তাফিজকেও আজ কিছু করতে হবে। একটি জয় বাংলাদেশকে পাল্টে দিবে দারুন ভাবে। হয়তো সেই সম্ভাবনার কপথ ভেবেই মা, শাশুড়ি আর মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও দল ছেড়ে দেশে ফেরেননি সাকিব।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এবারের প্রথম ওডিআই ম্যাচটির আগেই হয়তো বাংলাদেশ অন্তপ্রাণ অনুরাগীরাও ভাবেনি সিরিজের শেষ ম্যাচে এসেও ভাগ্য দোলক দোলায় দুলবে। সাউথ আফ্রিকা দুর্দান্ত খেলে কিছুদিন আগেই শক্তিশালী ভারত দলকে ধবল ধোলাই করায় কেউ ভাবেনি সুপার স্পোর্টস পার্কে প্রথম ম্যাচে দারুন জয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। অবশ্য ওডিআই বাংলাদেশের প্রিয় ফরমেট আর এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সব কারিগর ( মাশরাফি ছাড়া ) বাংলাদেশ দলে সমবেত। পূর্ণ শক্তির প্রোটিয়া দলের বিরুদ্ধে অনায়াসলব্ধ জয়টি বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন মাইল ফলক ছিল। বাংলাদেশ ২০ বছর পর এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় কোনো ফরম্যাটে স্থানীয় দলের বিরুদ্ধে প্রথম জয় পেলো।
দ্বিতীয় ম্যাচটি জোহানেসবার্গের দ্রুতগতির অসম বাউন্সের উইকেটে খেলা হলো। এই ধরনের উইকেটে বাংলাদেশ খেলে কদাচিৎ। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের বুক সোজা দ্রুত গতির বলের মোকাবিলার টেম্পারমেন্ট বা স্কিল দুটোরই ঘাটতি সর্বজনবিদিত। তবে তামিম, সাকিব, মুশফিক, ইয়াসির আনাড়ীর মতো আউট হয়েছে বললে আদৌ ভুল হবে না। ৩৫/৫ অবস্থান থেকে যেভাবে আফিফ মেহেদির লড়াকু ব্যাটিং ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেটি বলে দেয় আফিফের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ভাবার সময় এসে গাছে। বর্তমান ওডিআই দলে ওকে অবশ্যই ৫ নম্বরে বিবেচনার সময় এসেছে।
আজকের উইকেটটি যে প্রথম ম্যাচের মতো হবে না হলপ করেই বলতে পারি। লিটন, তামিম প্রথম ১০ ওভার অবিচ্ছিন্ন থেকে ৩০ রান করলেও চিন্তার কিছু নেই। তবে দ্রুত উইকেট হারালে বাংলাদেশকে আউট অফ দি বক্স কিছু ভাবতে হবে। ব্যাটিং অর্ডার একই থাকবে এটি ভেবে নেওয়ার কারণ নেই। আর দ্রুত গতির উইকেট থাকলে আমি ইয়াসিরের স্থানে মাহমুদ হাসান জয়কে খেলানোর উপদেশ দিবো।
ঘরের দল কোমর কোষে লড়বে। বাংলাদেশকেও ভয়হীন চোখে চোখ রাখা ক্রিকেট খেলতে হবে। রাত জেগে খেলা দেখবো। খেলা শেষে প্রতিবেদন লিখবো। আমি আজ জয় ছাড়া কিছই ভাবছি না।