টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা যেন জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি

সালেক সুফী: তৃতীয় দিন শেষে নিশ্চিত টেস্ট পরাজয় এবং সিরিজ ধবল ধোলাইয়ের প্রান্তে বাংলাদেশ। ৯.১ ওভার খেলে মাত্র ২৭ রান করতেই তামিম,  জয়, শান্ত তাঁবুতে ফিরেছে। আকাশ উঁচু ৩৮৬ রান ধরাছোঁয়ার অনেক বাইরে। বাংলাদেশ চতুর্থ দিন কত সময় মহারাজ-হার্মার যুগলের  সাঁড়াশি আক্রমণ সামাল দিতে পারবে সেটির জন্য অপেক্ষা।

চাইলে ডিন এলগার বাংলাদেশকে ফলো অন্যের লজ্জায় ফেলতে পারতো।  সেটি হলে ম্যাচটি চতুর্থ দিনে আদৌ গড়াতো কিনা সন্দেহ। যাহোক বাংলাদেশ ২১৭ রানে গুটিয়ে যাবার পর দক্ষিণ আফ্রিকা দ্রুত ব্যাটিং করে ৩৯.১ ওভারে ১৭৬/৬ উইকেটে ইনিংস ঘোষণা করলো।

ওদের ইনিংসে বাংলাদেশের জন্য দেখার ছিল অবহেলিত তুখোড় স্পিনার তাইজুল ১০ উইকেট অর্জন করে কিনা।  ভালো বোলিং করে ৩/৬৭ শেষ করে ম্যাচে ওর অর্জন দাঁড়ালো ৯/২০২।  কি দারুণ ভাবে নির্বাচকদের অবহেলার জবাব দেয়া। ৪১৩ রানের পাহাড় তুলে এলগার দিনের শেষ প্রহরে বাংলাদশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলো। দিনশেষে বাংলাদেশ মহারাজ-হার্মার আতঙ্কে কাঁপছিলো।

যেমনটি ভাবা গিয়েছিলো ভালো শুরু করেও মুশফিক ইয়াসির জুটি বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করতে পারেনি। ইয়াসির হ্যাট্রিক চার দিয়ে ঝলমলে সূচনা করেছিল। কিছুটা অনিশ্চয়তার পর মুশফিক ভালো খেলা শুরু করলো। কিন্তু যেই না অনুরাগীদের স্বপ্নের জাল বোনা শুরু ভালো খেলতে থাকা ইয়াসির ফায়ার হয়ে গেলো মহারাজার বলে ওকে ক্যাচ দিয়ে।

ওদের দুজনের যোগাযোগে ৭০ রান আরো বিস্তৃত হবে সে আশায় বুক বেঁধেছিলো অনুরাগীরা। তবুও আশা ছিল মুশফিককে ঘিরে।  দীর্ঘদিন পরে রানের দেখা মিলেছে। কিন্তু কি করলো মুশফিক।  অর্ধশত রানের মাইল ফলক পেরুতেই ভীমরতি। হার্মারকে রিভার্স সুইপ করার বার্থ প্রয়াসে মোক্ষম সময়ে নিজেকে বিসর্জন। বার বার এভাবে নিজেকে বিসর্জন দেওয়া রীতিমতো দৃষ্টিকটু। বাংলাদেশ সবাই ২১৭ রানে গুটিয়ে গেলো।

আগেই বলেছি পর্যাপ্ত সময় হাতে থাকায় এলগার ফলো অন  প্রয়োগ না করে লজ্জার হাত থেকে বাঁচালো। যদি করতো তাহলে খেলাটি হয়তো কাল শেষ হয়ে যেত। মোটামুটি একদিনের ক্রিকেট ঢঙে খেলে ১৭৬/৬ ইনিংস ঘোষণা করলো স্বাগতিক দল।

বাংলাদেশ ইনিংসে যথারীতি মহামারী। জানিনা দলটি চতুর্থ ইনিংস ব্যাটিং করে জলাতংকে ভুগছে কিনা। দুঃখ  হয় নবীন মাহমুদুল হাসান জয়ের জন্য। দাঁড়াবেন টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাইলফলক স্থাপনকারী ১৩৭ রানের ম্যারাথন ইনিংসের পর তিন ইনিংসে ব্যার্থতা। স্বল্প সময়ে চাঁদের দুই পিঠ দেখে ফেলেছে জয়। চলতি টেস্টে পেয়ার মিলেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে গোল্ডেন ডাক। কিছু করতে পারলো না তামিম ( ১৩) এবং শান্ত (৭)।

দিন শেষে ২৭ রানে তিন উইকেট হারানো বর্ণহীন বাংলাদেশ  যেন টেস্ট ক্রিকেটে ওদের দুরবস্থার প্রতিচ্ছবি। দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশ দুঃস্বপ্ন দীর্ঘায়িত হলো। জানিনা কি শিক্ষা নিবে বাংলাদেশ চলতি সফরের টেস্ট সিরিজ থেকে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × 4 =