বাংলাদেশ আরো একটি ধবল ধোলাইয়ের লজ্জা পেলো

সালেক সুফী: দুর্ভাগ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট সমাজের।  ২২ বছরের টেস্ট ক্রিকেট জয়ন্তীর পরের দিনেই ১০০ টেস্ট পরাজয়ের লজ্জা পেলো। ভাগ্যলিপি কাল লেখা হয়ে গিয়েছিলো। দেখার ছিল ১৩২/৬ অবস্থান থেকে বাংলাদেশ ইনিংস পরাজয়ের কালিমা থেকে রক্ষা পাবে কি না?

ভারী বর্ষণে আউট ফিল্ড সিক্ত হয়ে খেলা দীর্ঘ সময় স্থগিত ছিল। খেলা শুরু হলে নুরুল-সোহানের সাহসী ব্যাটিং বাংলাদেশকে ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা থেকে বাঁচালেও ১০ উইকেট টেস্ট পরাজয় সেই সূত্রে  ধবল ধোলাই থেকে রক্ষা হয়নি।

বাংলাদেশ ২৬ জুন ২০০০ আইসিসি পূর্ণ সদস্য/টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জন করেছিল। জানিনা বিসিবি দিনটি মনে রেখেছিলো কিনা। কিন্তু এক দিন পরেই সেন্ট ভিন্সেন্ট টেস্ট পর্যায়ে বাংলাদেশ ২২ বছরের টেস্ট জীবনে ১০০তম টেস্ট পরাজয় বরণ করলো।

বছর দুয়েক আগে অপেক্ষারত দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতেও ধবল ধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ। এর পরেও বিসিবি সভাপতির কাছে কাল শুনলাম টেস্ট ক্রিকেটে নাকি বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। আরো নাকি সময় লাগবে।  কথা হলো অন্য দেশগুলো কি বসে থাকবে? পুচকে আফগানিস্থান বাংলাদেশকে হারিয়েছে।

বাংলাদেশ প্রথম ব্যাটিং করে প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রান সংগ্রহ করেছিল। প্রথম টেস্ট থেকে অপেক্ষাকৃত ভালো ব্যাটিং হলেও টেস্ট ম্যাচে টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট মেজাজে বাংলাদেশের জন্য উপমাধর্মী ব্যাটিং করে ৪০৮ রান সংগ্রহ করে ১৭৪ রানে এগিয়ে যায়। খালেদ, মিরাজ, শরিফুল ভালো বোলিং করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং বীর ছিল কাইল মায়ার্স ১৪৬ রান করে। প্রথম উইকেট, ৫ম উইকেট, ৬ষ্ঠ উইকেটে বড় জুটি হয়েছিল।

বাংলাদেশ হয়তো দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের নিবেদন করে সিরিজ থেকে কিছু সালভেজ করতে পারতো। তামিম, সাকিব পারলো না সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে। শান্ত ভালো খেলছিল।  হয়তো মনে করেছে ৪২ রান করে দলে স্থান পাকা হয়ে গাছে।

বাংলাদেশ ইনিংসে সোহানের অপরাজিত ৬০ রান ছাড়া বলার কিছু নেই। তবুও ওর প্রচেষ্টায় ইনিংস পরাজয়ের কালিমা থেকে রক্ষা। ১৩ রানে এগিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি উইকেট নেয়ার সুযোগ এসেছিলো।  এবাদতের হাত থেকে ক্যাচ ফস্কালে হয়নি তাও।  ১০ উইকেটে টেস্ট জয়, সিরিজ জয়, ধবল ধোলাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০টি সিরিজের ৮ টি জিতলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা বলতেই হয়। ধীরে ধীরে টেস্ট ক্রিকেটের একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়ে উঠছে। রোচ এই সিরিজের কথা মনে রাখবে দীর্ঘ দিন। ২৫০ টেস্ট উইকেটের মাইল ফলকের জন্য। পেস বোলিংয়ে এখন ওদের অনেক বিকল্প।  ব্রাফেট, ব্লাকউড, ক্যাম্পবেল, মায়ার্স পরিণত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। ক্রমাগত হারের বৃত্ত থেকে বেরুতেই পারছে না। টেস্ট ক্রিকেট খেলার সংস্কৃতি গড়ে উঠছে না। আমি মনে করি অ্যালেন ডোনাল্ডের হাতে পেস বোলারদের উন্নয়ন অনুসরণীয়। জেমি সিডন্সকে এখন নতুনদের মাঝে সম্ভাবনা খুঁজতে হবে।  তামিম, সাকিব দায়িত্ব নিতে পারেনি। বিসিবি নাকি টেস্ট নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছে। দেখার অপক্ষায় রইলাম কী সে পরিকল্পনা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × two =