মরুর বুকে সবুজ চত্বরে আফগানদের হত্যাযজ্ঞ

সালেক সুফী: প্রথমে করোনার অভিঘাত তারপর শ্রীলংকার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পর কাল সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হয় ১৫ম এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে নির্মম হত্যাযজ্ঞ নিষ্ঠুর ভাবে চালিয়েছে আফগানিস্তান। টস জয় করে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে ১০৫ রানের মামুলি সংগ্রহে বেঁধে ফেলে। তারপর অনেকটা হেসে খেলেই ১০৬/২ করে হত্যা করেছে অসহায় লংকানদের। কখনো মনেই হয়নি ৫ বারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে খেলেছে ওরা।

আফগানরা সবুজ ঘাসের প্রাচুর্যে ঢাকা উইকেটে টস জয় করা থেকেই শরীরী ভাষায় জয়ের নেশায় ছিল  উন্মুখ। ক্ষুরধার বোলিং আর তুখোড় ফিল্ডিংয়ে ছিল জয়ের নেশা। আর তাই ওদের নিরঙ্কুশ জয়ে বিষয়টি হয়নি। তিন দলের মৃত্যুকূপ থেকে ওরা এখন সেরা হয়ে বিসনেস রাউন্ডের প্রধান দাবিদার।

টি২০ ফরম্যাটে খেলা ৬ জাতির এবারের এশিয়া কাপ বিশ্বকাপের ড্রেস রিসার্সেল বলা যায়। দুই গ্রুপে বিভক্ত ৬ দল থেকে ৪টি খেলবে নক আউট পর্ব। গ্রুপ এ থেকে পাকিস্তান, ভারত অনেকটা নিশ্চিত হলেও আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকা থেকে উন্নীত হবে দুটি দল।  শ্রীলংকার পরাজয়ে এখন সবার দৃষ্টি থাকবে বাংলাদেশ শ্রীলংকা ম্যাচের উপর।

নানা সমীকরণ ছিল কাল খেলা প্রথম ম্যাচের উপর। তীব্র গরম, মরুর বুকে লু হাওয়া।  দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সবুজ ঘাসের গালিচার মাঝে ঘাসে ঢাকা উইকেটে টস জয় ছিল অর্ধেকটা ম্যাচ জিতে নেওয়া। বোলিং বেছে নিতে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীকে আদৌ বেগ পেতে হয়নি।

ওদের দুই কৃতি নবীন পেসার ফারুকী, নাভীন কিছুটা ভেজা সবুজ উইকেটের সহায়তা নিয়ে শুরুতেই চেপে ধরে লংকানদের। উদীয়মান বাম হাতি পেসার ফারুকীর প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারিয়ে হাঁস ফাঁস করতে থাকে ওরা। নাভিনের বলে নিশাকার আউট নিয়ে কিছুটা সন্দেহ ছিল। গুনাটিলাকা আর রাজাপাকসের যোগাযোগে সীমিত সময়ের জন্য লড়াই করেছিল লংকান লায়ন্সরা।

কিন্তু শুরুতেই পিছিয়ে পড়া লংকানদের বিশ্বমানের ত্রিমুখী স্পিন আক্রমণে দিশেহারা করে দেয় মুজিব, নবি, রাশিদ। ওদের করা ১২ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট তুলে নেওয়া আফগানিস্তান মাত্র ১০৫ রানে সঙ্গে করে লংকান ইনিংস। রাজাপাকশে (৩৮), চামিকা (৩১), গুনাটিলাকা (১৭) ছাড়া বাকি ৮ জন দুই অংকের ঘরেই পৌঁছতে পারেনি। আফগান আক্রমণের মূল অস্ত্র ছিল সদ্য কৈশোর পেরুনো বাম হাতি পেসার ফজল হক ফারুকী ( ৩/১১)।  মুজিব (২/ ২৪) এবং নবি (২/১৪) ) ফারুকীর সফলতার ধারবাহিকতা বজায় রেখেছে। উইকেট না নিয়েও নিজের ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়েছে রাশিদ খান। আফগানদের তুখোড় ফিল্ডিং ছিল দেখার মতো।

মামুলি এই স্কোর তাড়া করতে আফগানদের কিন্তু অস্থিরতা দেখা যায়নি। জাজাই (৩৭) আর গুরবাজের (৪০)  ৮৩ রানের প্রথম উইকেট জুটি নিরঙ্কুশ ব্যাবধানে ম্যাচ জয়ের আভাস দিয়েছিলো। দুটি উইকেট স্বল্প ব্যাবধানে পড়ে গেলেও ৮ উইকেটের বিশাল জয় নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত আফগানিস্তান সতর্ক বার্তা দিলো।–

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 + one =