কোটা-বিরোধী আন্দোলন স্থবির করেছে বাংলাদেশকে

সালেক সুফী

চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনের আড়ালে ‘বাংলা ব্লকেড’ ঢাকা সহ সমগ্র দেশকে অচল করে ফেলেছে। নানা গুজব ডানা পালা মেলছে।  শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। দেশ জুড়ে নানা ধরনের দুর্নীতির রূপকথা উন্মোচন এবং দেশব্যাপী বিরাজমান গ্যাস বিদ্যুৎ মহাসংকট ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। তবে চলতি সংকট অবিলম্বে উত্তরণ করা না হলে সরকার বিপদে পড়তে পারে।

এমনিতেই নানা কারণে সাধারণ জনসাধারণ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে আছে। সরকার বিরোধী রাজনীতি দিশেহারা তাই সরকারের কাছে সুযোগ আছে অবিলম্বে কোটা আন্দোলনকারীদের এক দফার দাবি কোটা সংস্কার যৌক্তিকভাবে করে আন্দোলনের ইতি টানার।  বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবার আগেই সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে মনে করি।

মূল সমস্যা ২০১৮ সালে সরকারি চাকরির কয়েকটি পর্যায়ে কোটা বাতিল পরিপত্র আদালতে বাতিল ঘিরে। গতকাল সেই আদেশ আপিলেট ডিভিশন স্থগিত করেছে। ৭ অগাস্ট হেয়ারিংয়ের পর চূড়ান্ত আদেশ ঘোষিত হতে পারে।

মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে ১৯৭১ সালে। মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা এবং শোষণহীন সমাজব্যবস্থা ছাড়া  কিছুই চায়নি কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।  কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পরেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বা রাজাকারদের তালিকা হয়নি। অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের উল্টো স্রোতে নিয়ে গেছে।

দেশ জুড়ে দুর্নীতি, অপরাজনীতি। মেধাবী জনগোষ্ঠী সকলভাবে বঞ্চিত। বেকার সমস্যা প্রকট। এমতাবস্থায় দেশের কনস্টিটিউশন অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যাবস্থার সংস্কার যৌক্তিক দাবি। ৫৩ বছর পর আমি মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা যুক্তিযুক্ত মনে করি না। আর সরকারি চাকরিতে প্রশ্ন ফাঁস সহ স্বজন প্রীতি আর দুর্নীতির ভয়াবহ রূপ এখন দৃশ্যমান।

আমি সুপারিশ করবো সরকার প্রধান যেন অবিলম্বে উদ্যোগী হয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা যৌক্তিক ভাবে সংস্কার করার জন্য জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন করেন। প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে অঙ্গীকার করা হলে ছাত্র সমাজ পড়ার টেবিলে ফিরে যাবে।

দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে মেধার প্রকৃত মূল্যয়ন অপরিহার্য। বিদ্যমান অবস্থায় এবং সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি নির্মূল না হলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই ভুলুন্ঠিত হতে থাকবে। মেধাহীন দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ ভেঙে পড়বে। এমনিতেই কিন্তু নানা সংকটে আঁধার ঘনিয়ে আসছে। কোটা বিরোধী আন্দোলন অবিলম্বে ইতি টানা জরুরি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × 5 =