বাংলাদেশের এক স্কুল শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ চলতি বছরের আগস্ট মাসে রাশিয়ার পরমানু শক্তি চালিত আইসব্রেকার ‘বিজয়ের পঞ্চাশ বছর’ এ চড়ে উত্তর মেরুতে এক রোমাঞ্চকর অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন। তিনি ১৪-১৬ বছর বয়সী বিশজন বিদেশী স্কুল শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন যিনি এই অনন্য সুযোগ লাভ করেছেন। অভিযানে বিদেশী শিক্ষার্থী ছাড়াও রাশিয়ার উন্মুক্ত এবং আন্তর্জাতিক নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী আরও ৪৫জন অংশ নেবেন।
সম্প্রতি মস্কো’র আয়োজিত ‘আইসব্রেকার অফ নলেজ’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রকল্পের অধীণে পরিচালিত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ২০জন বিদেশী শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এটি ছিল এই প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসর যা, রাশিয়ার পরমাণু শিল্পের ৮০বছর এবং উত্তর সমূদ্র পথ আবিষ্কারের ৫০০বছর পূর্তি।
চলতি বছর ‘আইসব্রেকার অফ নলেজ’ প্রতিযোগিতায় রাশিয়া ব্যাতীরেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০টি দেশের ৩,৫০০ এর অধিক ১৪- ১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা আবেদন করে। রসাটমের সহায়তায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে রাশিয়ার পারমানবিক শিল্প তথ্যকেন্দ্র নেটওয়ার্ক। এবারের নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, বেলারুশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, হাঙ্গেরী, ভিয়েতনাম, ভারতসহ ২০টি দেশের স্কুল শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেছে রেকর্ড সংখ্যক ১৫৩জন শিক্ষার্থী। এই প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন এবং পরমাণু প্রযুক্তির প্রচার।
প্রতিযোগিতাটি অনলাইনে মড়ধৎপঃরপ.বহবৎম ওয়েবসাইটে তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতাটি শুরু হয় ২৮ এপ্রিল ২০২৫; প্রথম ধাপে বিদেশী শিক্ষার্থীরা একটি বিজ্ঞান সংক্রান্ত কুইজে অংশ নেন। দ্বিতীয় ধাপে তাদেরকে অনেকগুলো ওয়েবিনারে অংশ নিতে হয়, যার মূল বিষয়বস্তু ছিল রসাটমের যুগান্তকারী প্রযুক্তি এবং নিরাপদ উত্তর মেরু শিপিং এ ব্যবহৃত প্রযুক্তি। এর ভিত্তিতে তাদের আরেকটি পরীক্ষা নেয়া হয়। চূড়ান্ত পর্বে তাদেরকে একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে বলা হয়, যার মুল বিষয় ছিল তাদের নিজস্ব ভাবনায় কীভাবে নিজের দেশের জনগনের জীবনযাত্রার উন্নয়নে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতে পারে। একটি আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেল প্রেজেন্টেশনগুলো মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবে।
প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন এবং পরমাণু প্রযুক্তির প্রচার ছাড়াও এই প্রকল্পটির অন্য একটি লক্ষ্য হলো, প্রতিভাবান শিশুদের খুঁজে বের করা এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা ও ক্যারিয়ার গাইডেন্স প্রদান করা। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীরা আইসব্রেকারে করে উত্তরমেরু অভিযানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকেন। গত ছয় বছরে বিভিন্ন দেশের ৩৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী এই অভিযানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।
বর্তমানে বিশ্বে একমাত্র রাশিয়ারই একটি নিজস্ব পরমাণু শক্তিচালিত আইসব্রেকারের বহর রয়েছে। এই বহরে পরমাণু আইসব্রেকার সংখ্যা মোট আটটি।