হামাস বুধবার বলেছে, তাদের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়াহ ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। তিনি সেখানে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার ইসরায়েল দক্ষিণ বৈরুতে হিজবুল্লাহর একটি শক্তিশালী ঘাঁটিতে আঘাত হানার পর হানিয়েহের হত্যাকাণ্ড ঘটল। ইরান-সমর্থিত হামাসের একজন সিনিয়র কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েল-অধিভুক্ত গোলান মালভূমিতে সপ্তাহান্তে রকেট হামলার জন্য হানিয়াকে দায়ী করা হয়েছিল।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের আন্দোলনের প্রধান ‘ভাই, নেতা, মুজাহিদ ইসমাইল হানিয়াহ তেহরানে তার সদর দফতরে ইহুদিবাদী হামলায় মারা গিয়েছেন। তিনি সেখানে নতুন ইরানি প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডসও মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেছে, তেহরানে হানিয়াহের বাসভবনে ‘হামলা’ হয়েছে এবং একজন দেহরক্ষীসহ তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সিপাহ নিউজ ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হামাস ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ইসমাইল হানিয়াহের বাসভবন তেহরানে আঘাত হেনেছে এবং এই ঘটনার ফলে তিনি এবং তার এক দেহরক্ষী শহীদ হয়েছেন।’
বিপ্লবী গার্ডস জানিয়েছে, ঘটনার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার নয় তবে ‘তদন্ত করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন হানিয়েহ।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে ধ্বংস করার এবং গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের সূত্রপাতকারী ৭ অক্টোবরের হামলার সময় নেওয়া সমস্ত জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইসরায়েলের সরকারী পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এএফপি’র তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে ১,১৯৭ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
হামাস এই সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করেছে। যাদের মধ্যে ১১১ জনকে এখনও গাজায় বন্দী করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ জন মারা গেছে বলে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে কমপক্ষে ৩৯,৪০০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে,নিহতদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু।
হানিয়াহ খালেদ মেশালের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য ২০১৭ সালে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন।
সেই বছরের সংসদ নির্বাচনে হামাসের বিপর্যস্ত বিজয়ের পর ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি ইতিমধ্যেই একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন।
একজন বাস্তববাদী হিসেবে বিবেচিত হানিয়াহ নির্বাসনে বসবাস করতেন।
যুদ্ধের সময় তিনি ইরান ও তুরস্কে কূটনৈতিক মিশনে ভ্রমণ করেছিলেন তুর্কি ও ইরানের উভয় প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করেছিলেন।
হানিয়াহ হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বীসহ বিভিন্ন ফিলিস্তিনি উপদলের প্রধানদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বলেছিলেন।
তিনি ১৯৮৭ সালে হামাসে যোগদান করেন যখন ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রথম ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে হামাস প্রতিষ্ঠিত হয়।
হামাস হল ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ এর অংশ তেহরান-সঙ্গীত গ্রুপ যেমন লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথিরা চিরশত্রু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
বাসস