ডেনমার্কের বিপক্ষে ফোডেনের ভালো খেলার আশা

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিজের দুর্দান্ত ফর্ম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রমানে ব্যর্থ হচ্ছেন ইংলিশ প্লেমেকার ফিল ফোডেন। ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট এখন তার দলের অন্যতম মূল এই খেলোয়াড়ের ফর্মে ফেরার আশা করছেন।

আগামীকাল ফ্র্যাঙ্কফুর্টে গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে ডেনমার্ককে হারাতে পারলেই শেষ ষোল নিশ্চিত হবে ইংল্যান্ডের। রোববার জেলসেনকার্চেনে গ্রুপ-সি’র প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয়ের ম্যাচটিতে ফোডেন কোন আস্থাই অর্জণ করতে পারেননি। আর সে কারনেই গুঞ্জন উঠেছে সাউথগেট হয়তো ফোডেনকে সেভাবে কাজে লাগাতে পারছেন না।

২৪ বছর বয়সী এই প্লেমেকার প্রিমিয়ার লিগের বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছে। সিটির হয়ে চতুর্থ শিরোপা জয়ে ফোডেন ১৯ গোল করা ছাড়াও আটটি এ্যাসিস্ট করেছেন। সিটি জার্সিতে নিজের দুর্দান্ত ফর্ম এখনো পর্যন্ত থ্রি লায়ন্সদের হয়ে কোন এক অজানা কারনে দেখাতে পারছেন না ফোডেন।

২০২০ ইউরো ফাইনালে খেলা ইংল্যান্ডের হয়ে আগের আসর থেকেই ফোডেন জাতীয় দলের জার্সিতে ফর্মহীনতায় ভুগছেন। তিন বছর আগে ইউরোতে প্রথম দুই ম্যাচে মূল দলে খেললেও পরের ম্যাচে মাত্র ২৫ মিনিট খেলেছেন। এমনকি ইনজুরির কারনে ইতালির বিপক্ষে ফাইনালেও খেলতে পারেননি। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও তার মধ্যে ধারাবাহিকতার অভাব ছিল। শেষ ১৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফোডেন মাত্র এক গোল করেছেন।

ইংল্যান্ডের নাম্বার ১০ জার্সি জুড বেলিংহামকে দেবার সাউথগেটের সিদ্ধান্ত এখন সকলের কাছেই সঠিক মনে হচ্ছে। একইসাথে সার্বিয়ার বিপক্ষে ডান দিকে বুকায়ো সাকাকে নিয়ে গিয়ে ফোডেনকে লেফট-উইংয়ে পাঠানোরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাউথগেট। এই প্রথমবারই নয়, আগেও ফোডেন এই পজিশনে খেলেছেন। কিন্তু অন্য সব সময়ের মতই হ্যারি কেনের নেতৃত্বে তিনজনের আক্রমনভাগে ফোডেন নিজেকে খুঁজে পাননি।

সিটিতে পেপ গার্দিওলা নাম্বার টেন হিসেবে ফোডেনকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই ব্যবহার করেছেন। রাইট উইংয়েও ফোডেন প্রায়ই খেলে সফল ছিলেন। ইনজুরিতে থাকা কেভিন ডি ব্রুইনার অনুপস্থিতিতে ফোডেন আরো বেশী শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছেন। সার্বিয়ার বিপক্ষে তিনি অবশ্য খুব একটা নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।

ম্যানচেস্টার সিটি ও ইংল্যান্ডের সাবেক ডিফেন্ডার মিকা রিচার্ডস জাতীয় দলে ফোডেনের সঠিক ভূমিকা নিয়ে সাউথগেট সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ফিল ফোডেনের মত অতি প্রতিভাবান কোন খেলোয়াড় যখন দলে থাকবে তখন তাকে পুরো মাঠের মধ্যমনি হিসেবে খেলাতে হবে। মাঝে মাঝে যখন সে বাম-দিকে চলে যায়, কার্যত কোচ তাকে সেখানে নিয়ে যায় তখন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এটা তার স্বাভাবিক পজিশন নয়।’

বিশেষজ্ঞদের মতে বেলিংহামকে ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ডের স্থানে ডিক্লান রাইসের সাথে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে নিয়ে গিয়ে ফোডেনকে তার নিজস্ব পজিশন দিলে ইংল্যান্ড হয়তো আরো কিছুটা ভালভাবে আক্রমনে যেতে পারবে। এক্ষেত্রে চেলসির কোল পালমার কিংবা নিউক্যাসলের এন্থনি গর্ডনকে বামদিকে খেলানো হতে পারে।

ফোডেন এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৩৫ ম্যাচ খেলে মাত্র চার গোল দিয়েছেন। সাবেক স্প্যানিশ তারকা মিডফিল্ডার সেস ফ্যাব্রেগাস বলেছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফোডেনের আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। এ সম্পর্কে ফ্রাব্রেগাস বলেন, ‘বিষয়টা এমন যে তুমি বেশী বল চাচ্ছো, কিন্তু সেই বল নিয়ে তোমাকে পার্থক্য গড়ে দিতে হবে। চাপের মধ্যে থেকে বল নিয়ে যদি উপভোগই করতে না পারো তাহলে কিসের লাভ। দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ড যখন কিছুটা চাপ প্রয়োগ করে খেলা শুরু করে তখন ফোডেন কোন কিছু না দেখে ৪০ গজ দুর থেকে শট নেয়া শুরু করেছিল। ফোডেনকে আরো বেশী দায়িত্বশীল হয়ে খেলা উচিৎ।’

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three + fifteen =