হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ম্যাচ জিতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ভারতের

সালেক সুফী

পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা এবারের হট ফেভারিট টিম ইন্ডিয়া লড়াই করে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত শিরোপা জয় করলো। দুর্ভাগা দক্ষিণ আফ্রিকা। শিরোপার কাছে এসেও চোকার ট্যাগ বজায় রেখেই ৭ রানে হেরে গেলো।স্বপ্নের  ফাইনালে দুটি দল ভিন্ন ঘরানার ক্রিকেট খেলে অপরাজিত দল হিসাবে ফাইনালে এসেছিলো। টস জয়ী ভারত দক্ষিণ আফ্রিকার ভালো বোলিং এবং ফিল্ডিং মোকাবিলা করে ১৭৬/৭ রানের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক স্কোর করেছিল।

টুর্নামেন্ট জুড়ে নিষ্প্রভ থাকা সর্বযুগের অন্যতম সেরা বিরাট কোহলি কাল জ্বলে উঠেছিল। ৫৯ বলে ৭৬ রান করা কোহলি বিপরীত স্রোতে ব্যাটিং করে ভারতকে নেতৃত্ব দিলো। বড় খেলোয়াড়রা  বড় ম্যাচে নিজেদের মুন্সিয়ানা দেখায়।  জাত খেলোয়াড় কোহলি। কাল ফাইনালে কঠিন মুহূর্তে নিজেকে আবারো প্রমাণ করেছে। কাল রোহিত-দ্রাবিড় আক্সার প্যাটেলকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোট করে চমক দেখালো। প্যাটেল ভয়ডরহীন ব্যাটিং করে ৩১ বলে ৪৭ রান করে দলকে স্বস্তির অবস্থানে নিয়ে যায়।

জবাবে শুরুতে ১২ রানে দুই উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা কুইন্টন ডি কক (৩৯) এবং ক্রিস্টান স্টাবের (৩১) যোগাযোগে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৮ রান যোগ করে বিশ্বজোড়া ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের শঙ্কায় ফেলে। হেনরিক ক্লাসেন (৫২) এবং ডেভিড মিলার দ্রুত ২১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ১৫০ রানে পৌঁছায়। খেই হারায়নি ভারত।

জাসপ্রিত বুমরা (২/১৮), হার্দিক পান্ডিয়া (৩/২০) দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচে ফেরায় ভারতকে। শেষদিকে সূর্যকুমার যাদব অসামান্য দক্ষতায় ডেভিড মিলারের ক্যাচ লুফে নিলে চোক করে দক্ষিণ আফ্রিকা।  হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হেরে ৭ রানে হেরে যায়। জয় ক্ষুদার্থ ভারত ১২ বছর পর জিতে নেয় আইসিসি আয়োজিত কোনো টুর্নামেন্ট। কোহলি, রোহিত, দ্রাবিড়ের শেষ বিশ্বকাপ ভারত যোগ্য দল হিসাবে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন শিরোপা জয় করে।

স্নায়ুক্ষয়ী কালকের ফাইনাল খেলায় কাল টস জয় করে প্রথম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত। ভালো সূচনা করে বিরাট কোহলি বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিলো। কেশব মহারাজ দ্রুত রোহিত শর্মা এবং রিশাভ পান্তকে ফিরিয়ে ভারত শিবিরে কাঁপুনি ধরায়। রাবাদা এই সময় সূর্যকুমার যাদবকে সহসা ফিরিয়ে দিলে ৪.৩ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পরে ভারত।

ভরসা ছিল একপ্রান্তে ভালো খেলে আগলে রাখা বিরাট কোহলি। মাস্টার স্ট্রোক দেখায় রোহিত-দ্রাবিড়। আক্সার প্যাটেলকে প্রমোট করে মুন্সিয়ানা দেখায় এই জুটি। আক্সার-বিরাট জুটি ৭২ রান যোগ করে ম্যাচে ফেরায় ভারতকে। দায়িত্ব নিয়ে খেলা বিরাটের ৭৬ রানের ইনিংস ভারতকে ১৭৬/৭ রানের লড়াকু পুঁজি এনে দেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার সূচনাও ভালো হয়নি। শুরুতেই দ্রুত রেজা হেনড্রিক্স এবং এইডেন মার্করাম ফিরে গেলে ব্যাকফুটে চলে যায়। কুইন্টন ডি কক (৩৯), ক্রিস্টান স্টাব (৩১) ভালো খেলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ম্যাচে ফেরায়। হেনরিক ক্লাসেন (৫২) এবং ডেভিড মিল্লার (২১) স্বভাবসুলভ মারকুটে ব্যাটিং করে জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।

রোহিত বাধ্য হয় তুরুপের তাস জাসপ্রিত বুমরাহকে আক্রমণে ফিরিয়ে আনতে। কিপ্টে বোলিংয়ে চাপ সৃষ্টি করে বুমরাহ। মোক্ষম সময় দারুন বোলিং করে হার্দিক পান্ডিয়া। তুখোড় ফিল্ডিং করা ভারত দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ন্ত্রণ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেয়। ক্রমাগত পিছিয়ে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ১৬৯/৮।  মাত্র ৭ রানে পরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টুর্নামেন্ট শিরোপা অধরা থেকে যায়।

অনেক কাঙ্ক্ষিত শিরোপা জয় করে ভারত।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seventeen − three =