অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া বাংলাদেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হোক এবং বাংলাদেশিরা তাদের সরকার পছন্দ করুক, তাও দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিষয়ে উদ্বোধনী বক্তব্যে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার একথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে অন্তত ১১টি প্রশ্ন করা হয়। ব্রিফিংয়ের শুরুতে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সূচনা বক্তব্য দেওয়ার পরে সাংবাদিকরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন।
ম্যাথু মিলার বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই।একইসঙ্গে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করারও আহ্বান জানাই।’
মিলার বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের ঘোষণার কথা শুনেছি। সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি দেখছি। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আছি। সবাইকে সহিংসতা পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি। গত কয়েক সপ্তাহে অনেক প্রাণ ঝরেছে।’ আমরা সামনের দিনগুলোতে সবাইকে শান্ত ও সংযত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি বলেও ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেন তিনি।
এরপর ম্যাথু মিলারকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। প্রশ্নগুলো ছিল যুক্তরোষ্ট্রের অবস্থান, সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ, শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় দেবে কিনা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দেবে কিনা, বাংলাদেশি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ অন্যান্য বিষয়।
এসব প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে মিলার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, সহিংসতা ঠেকানো এবং দায়বদ্ধতার জন্য সহায়তা করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়টি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনি ব্যবস্থা ও বাংলাদেশিদের ইচ্ছা অনুযায়ী হওয়া উচিত।’
শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনও অনুরোধের বিষয়ে আমি অবগত নই।’
গত কয়েক সপ্তাহে নিহতদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের জন্য পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত জরুরি প্রয়োজন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনীকে সহায়তা দেওয়া হবে কিনা, জানতে চাইলে ম্যাথু মিলার বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সরকার বাংলাদেশিরা নির্ধারণ করবে, এটি যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায়।’
বাংলাদেশি কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেছে কিনা— এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দূতাবাসে তারা যোগাযোগ করেছে।’
সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনুভূতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আমরা রিপোর্ট দেখছি যে, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিষয়টি আর্মি মানেনি এবং সেটি যদি সত্যি হয়ে থাকে, তবে আমরা এটিকে উৎসাহিত করি। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, জনগণের আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার আছে। আমরা যেকোনও ধরনের সহিংস হামলার বিরোধী। যদি আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করতে সেনাবাহিনী অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে এটি একটি ইতিবাচক দিক।’
বাংলা ট্রিবিউন