সালেক সুফী
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে উন্নয়নের মহাসড়কে স্থির গতিতে এগিয়ে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সহায়ক দেশ নিকট প্রতিবেশী ভারত নির্ভরতা স্বাভাবিক কারণে অধিকতর দৃশ্যমান হলেও বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সহযোগী চীন। পাশাপাশি অবদান আছে জাপান, কোরিয়া, রাশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য, ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর।
স্বীকার করতেই হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে কৌশলগত সমতা বজায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রেখেছেন। কিছুদিন আগে ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল উন্নয়ন সহযোগী দেশ চীন সফরে যাচ্ছেন। জানা মতে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
চীন বাংলাদেশের যোগাযোগ খাত উন্নয়ন এবং আধুনিকরণে প্রধান সহযোগী। পদ্মা বাহুমুখী সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশের টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে নির্মাণসহ অনেক সড়ক এবং সেতু নির্মাণে অবদান রেখেছে চীন। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা রোহিঙ্গা শরণার্থী দেশে প্রত্যাবর্তন বিষয়েও চীনের মুখ ভূমিকা নেওয়া অত্যাবশ্যক।
জানি কিছু বিষয়ে ভারতের আপত্তি আছে। যেমন তিস্তা নদীর পানি সংরক্ষণে ভারত, চীন উভয়ে আগ্রহী। যদি উভয় দেশ যৌথভাবে কাজটি সম্পাদনে আগ্রহী হয় সেটি হবে বিশাল অর্জন। বিদ্যমান অবস্থায় তিস্তা নদীতে যথেষ্ট পরিমাণ পানি না থাকায় পশ্চিমবঙ্গ কোনোভাবেই পানি বণ্টনে রাজি হবে না। এমতাবস্থায় বর্ষাকালে প্রবাহিত পানি সংরক্ষণ প্রধান বিকল্প। এই কাজে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনকে রাজি করতে পারলে হবে বিশাল অর্জন।
বাংলাদেশ বাজেট ঘাটতি পূরণে সহজ শর্তে চীনের নগদ সহায়তা পেলে রিজার্ভ সংকট স্বস্তি পাবে। সেইসঙ্গে জ্বালানি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রেও সহায়তার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষত সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে চীন এখন বিশ্বসেরা। বাংলাদেশ চীন থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা পেতে পারে। সুযোগ আছে বৈদ্যুতিক গাড়ি , ব্যাটারি স্টোরেজ নির্মাণেও সহায়তা লাভের সুযোগ। মাতারবাড়ি থেকে তৃতীয় গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণে আর্থিক সহায়তা লাভ অত্যন্ত জরুরি।
আমি প্রধানমন্ত্রীর সফরের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি।