অস্ট্রেলিয়ায় প্রবল বেগে ধেয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড, ধ্বংসলীলার আশঙ্কা

অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের দিকে এগোচ্ছে বিরল এই ঘূর্ণিঝড়। ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে শনিবার কুইন্সল্যান্ডের সানশাইন, গোল্ড উপকূল এবং ব্রিসবেনে তাণ্ডব চালাতে পারে ঝড়টি।

চোখ রাঙাচ্ছে এক ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়। গত ৫০ বছরের মধ্যে এই ঝড় সবচেয়ে বিপজ্জনক হতে চলেছে বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। আপাতত প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের দিকে এগোচ্ছে বিরল এই ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড । খবর বিডিনিউজ২৪.কম

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে বিবিসি জানায়, ২ ক্যাটাগরি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে শনিবার সকালে কুইন্সল্যান্ডের সানশাইন ও গোল্ড উপকূল এবং অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তর শহর ব্রিসবেনে আঘাত হানতে পারে। ঘটাতে পারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ।

পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে উপকূল থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ৮৪ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা সপ্তাহজুড়ে আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

কুইন্সল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলস মিলিয়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ঝড়ের কবলে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে আছে। কুইন্সল্যান্ড ঘূর্ণিঝড়ের জন্য পরিচিত হলেও দক্ষিণে শক্তিশালী ঝড় খুবই বিরল।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কুইন্সল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলসে রাতভর ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে বাতাস বয়ে গেছে, যদিও ঝড়ের অবস্থান এখনও অনেক দূরে। ঝড়টি এর মধ্যে শক্তি ক্ষয় না করলে এর ধ্বংসলীলা হতে পারে মারাত্মক।

অষ্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ পরিস্থিতিকে ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

গোল্ড কোস্টের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ডোনা গেটস পরিস্থিতি ভীতিকর’ বলে বর্ণনা করেছেন। ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবের আশঙ্কা করা হচ্ছে গোল্ড কোস্টে।

উত্তর নিউ সাউথ ওয়েলসে বইছে তীব্র বাতাস। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। গোল্ড কোস্ট এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের হাজার হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

ওদিকে ঝড়ের আশঙ্কায় প্রায় ১,০০০ স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, গণপরিবহন স্থগিত রয়েছে এবং বিমানবন্দরও বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ রয়েছে। অন্তত রোববার পর্যন্ত ফ্লাইট চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

অন্যদিকে, কিছু মানুষ বিপদের মধ্যে থাকলেও সার্ফারদের জন্য এ এক রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে। কিরা বিচের সার্ফার জেফ ওয়েদারঅল বলেন, “এই আবহাওয়ারই অপেক্ষায় থাকি আমরা। পাঁচ দিন ধরে শুধু খাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি আর সার্ফিং করছি।”

তবে প্রধানমন্ত্রী আলবানিজে জনগণকে ঝুঁকি না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। “সবাই নিরাপদ থাকুন, সচেতন থাকুন,” বলেন তিনি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

15 − two =