অ্যান্ডার্সন টেন্ডুলকার টেস্ট সিরিজের হেডিংলি টেস্ট নাটকীয় পরিণতির পথে

বিশ্ব ক্রিকেটের দুই মোড়ল ভারত ইংল্যান্ডের ৫ ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট চতুর্থ দিন শেষে শেয়ানে শেয়ানে লড়াই এখন নাটকীয় পরিণতির পথে। তিন শতরানে (সুবমান গিল ১৪৭, ঋষভ প্যান্ট ১৩৪, যশবি জয়সোয়াল ১০১ ) কল্যানে ভারতের সংগ্রহীত ৪৭১ রানের জবাবে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করে ৪৬৫। ইংল্যান্ড ইনিংসের বৈশিষ্ট ছিল অলি পপ (১০৬) আর হ্যারি ব্রুক (৯৯)। ইংল্যান্ডকে অবশ্য জাসপ্রিত বুমরাহ ঝড় (৫/৮৩) সামাল দিয়ে ভারতের ছোড়া ইটের জবাব পাথর ছুড়ে দিতে হয়। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে কে এল রাহুল (১৩৭) এবং ঋষভ প্যান্ট টেস্টে দ্বিতীয় উইকেট কীপার ব্যাটসম্যান হিসাবে দ্বিতীয় শতরান ১১৮ করলে চতুর্থ দিনশেষে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ৩৬৪ রানে। ইংল্যান্ডের সামনে টেস্ট জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭১। দিনশেষে ইংল্যান্ড বিনা উইকেটে ২১ রান করে শেষ দিনে ৯০ ওভারে টেস্ট জয়ের জন্য করতে হবে ৩৫০। ভারতের প্রয়োজন ১০ উইকেট। টেস্টে সম্ভাব্য তিন পরিণতি ভারতের জয়, ইংল্যান্ডের জয় বা অমীমাংসিত যে কোনটি হতে পারে। পুরানো দিন হলে বলা যেত নিশ্চিত ড্র হতে চলেছে। কিন্তু ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে এখন যোগ হয়েছে বাজবল ক্রিকেট। তাই লিডসে আজ ব্যাটে বলে তুমুল লড়াই হবে বলাই যায়।

এই টেস্টে ভারত দুই ইনিংস মিলে ৩+২ =৫ টি শত রান করেছে। ভারত ক্রিকেটের দুই জীবন্ত কিংবদন্তি বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মার অবসরে যারা অন্তত এই ইংল্যান্ড সফরে যারা ভারতের ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাদের ভুল প্রমান করে ভারত দুই ইনিংসে উঁচু মানের ব্যাটিং করেছে। প্রথম ইনিংসে ভারতের বর্তমান প্রজন্মের দুই উদীয়মান তারকা যশবি জয়সোয়াল আর অধিনায়ক শুভমান গিলের ব্যাটিং ছিল শিল্পের ছোয়া। উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান ঋষভ প্যান্টের ব্যাটিং ছিল ভৈরব ছন্দের। সবার স্মরণে আছে কিছু আগে অস্ট্রেলিয়া সফরে পান্টের দায়িত্বহীন ব্যাটিং দেখে ভারত কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার বলেছিলেন “স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড”। সেই গাভাস্কার প্যান্টের প্রথম ইনিংস শতরানের পর বলে ওঠেন “সুপার্ব, সুপার্ব, সুপার্ব “। বদলে যাওয়া ভারত ব্যাটিং নিঃসন্দেহে ছিল প্রশংসনীয়।

ইংল্যান্ডের জবাবটি সহজ ছিলনা। বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ের সেরা পেস বোলার জাসপ্রিত বুমরাকে মোকাবিলা করতে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের হ্যাশ ফাঁস করতে হয়েছে। তবুও অলি পপ, হ্যারি ব্রুক, জামি স্মিথ, ক্রিস ওকস সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ৪৬৫ রানে শেষ হয়। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ইংরেজ বোলাররা কিছুটা প্রাধান্য বিস্তার করলেও কে এল রাহুল দলের ইনিংসের কান্ডারি হয়ে করে মূল্যবান ১৩৭ রান। ঋষভ প্যান্ট আবারো অনবদ্ধ ১১৮ রান করলে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৬৪। ইংরেজ বোলারদের মধ্যে ব্রেইডন চেজ (৩/৮০) আর জস টঙ্গা (৩/৭২) ভারত ইনিংস সীমিত রাখায় প্রধান ভূমিকা পালন করে।

বলা বাহুল্য শেষ দিনের খেলা থাকবে আকর্ষণ, উত্তেজনা। প্রথম সেশন খেলার ভাগ্য অনেকটা গড়ে দিবে। ২১/০ থাকা ইংল্যান্ডকে নতুন বলে বুমরা ঝড় সামাল দিতে হবে। ইংল্যান্ড কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট ব্যাটিংয়ে বয়কটিও দর্শন পাল্টে ফেলেছে। ৯০ ওভার ব্যাটিং সুযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ৩৫০ রান তুলে নিবে। কিন্তু সুযোগ আছে ভালো বোলিং এবং অবশ্যই ভালো ফিল্ডিং করে ভারতের টেস্ট জয় করার। একটি তুখোড় লড়াই দেখার অপেক্ষায় থাকবে ক্রিকেট বিশ্ব।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

11 + 15 =