এশিয়া কাপ ২০২৩: ইফতিখার-বাবর টর্নেডোতে চূর্ণ নেপাল

সালেক সুফী: প্রথবারের মত এশিয়া কাপ খেলতে আসা হিমালয় কন্যা দেশ নেপালের অভিষেক চূর্ণ হয়েছে একদিনের বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজম – দুরন্ত ব্যাটসম্যান ইফতিখারের টর্নেডো ব্যাটিং ঝড়ে।  ১৫ম এশিয়া কাপের স্বাগতিক দেশ পাকিস্তানের মুলতান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম খেলায় প্রথমে ব্যাটিং করা পাকিস্তানের বিশাল ৩৪২/৬ স্কোর তাড়া করে শাদাব খান (৪/২৭), হারিস রউফ (২/১৬)  এবং শাহীন শাহ আফ্রিদির (২/২৭) তুখোড় বোলিং মোকাবিলায় ১০৪ রানেই গুটিয়ে যায় নেপাল। ২৩৮ রানের বিশাল ব্যাবধানে জয়ী হয়ে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করে এবারের টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট পাকিস্তান। এখন অপেক্ষা ভারতের সঙ্গে ব্লকবাস্টার ম্যাচ দেখার।

অনেক বিতর্ক, অনেক আলোচনা সমালোচনার পর হাইব্রিড মডেলে শুরু হওয়া এবারের পাকিস্তান আয়োজনের এশিয়া কাপের ৪ টি ম্যাচ হওয়ার কথা পাকিস্তানে, ফাইনাল সহ বাকি ৯ টি ম্যাচ হবে শ্রীলংকায়।  নিরাপত্তার অজুহাতে পাকিস্তানে খেলতে যাবে না ক্রিকেট মোড়ল ভারত। আইসিসি পূর্ণ সদস্য ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের সঙ্গে এবারে সহযোগী সদস্য নেপাল প্রথম বারের মত খেলছে। কাল ছিল নেপালের অভিষেক। বলাই বাহুল্য অভিষেক রঙিন হয়নি নেপালের।

টস জয় করে সঙ্গত কারণেই ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাবার আজম. শুরুতে কিন্তু ভালো বোলিং এবং ফিল্ডিং করে পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলো। ৬.১ ওভারের মাঝে দুই ওপেনার ফখর জামান (১৪) এবং এমাম উল হক (৫) ফিরেছিল তাঁবুতে। উইকেট ধীর গতির ডাবল পেসড ছিল। স্ট্রোকস খেলা সহজ ছিল। চ্যাম্পিয়ন ব্যাটসম্যান বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গী করে ধীর স্থির ভাবে উইকেটে স্থিতু হয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮৬ রান জুড়ে দিয়ে গতিময়তা আনার পর নিজের ভুলে ৪৪ রান করে রান আউট হলো রিজওয়ান। আগা সালমানকেও লামিচান সহসা ফিরিয়ে দিলে ২৭.৫ ওভারে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়িয়েছিল ৪/১২৭। সেখান থেকে বাবর -ইফতিখার শুরু করলো ব্যাটিং তান্ডব। এই জুটির ব্যাটিং তান্ডব চূর্ণ করলো নেপালিজদের প্রতিরোধ। চার ছক্কার ফুলঝুরি চুটিয়ে ৫ম উইকেট জুটি ২১৪ রান যোগ করে ম্যাচটি মাউন্ট এভারেস্ট পার করে নেপালের ধরা ছোয়ার বাইরে নিয়ে গেলো। বাবর ১৩১ বলে ১৪ চার এবং ৪ ছক্কায় ১৫১ এবং ইফতিখার মাত্র ৭১ বলে ১১ চার এবং চার ছক্কায় অপরাজিত ১০৯ রান করে টুর্নামেন্টে বাকি দলগুলোকে সতর্ক সংকেত দিলো। বাবরের এটি ছিল ১৯ম ওডিআই সতরান। ইফতিখার প্রথম সতরাং করলো। ৩৪২/৬ তাড়া করে ম্যাচ জয় বিশেষত পাকিস্তানের মত বিশ্ব সেরা বোলিং মোকাবিলা করে বিশ্বের সেরা দলের পক্ষেও করা অচিন্তনীয় এই মুহূর্তে।

তবুও শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুভ সূচনা করেছিল নেপাল ওপেনার কুশাল ভুর্টেল। কিন্তু ওই ওভারেই দুইবার আঘাত হানলো শাহীন। পরের ওভারে উইকেট তুলে নিলো নাসিম শাহ। ১.৪ ওভারেই ৩/১৪, নেপালের অবস্থা সঙ্গিন। সেখান থেকে আরিফ শেখ (২৬) এবং সোমপাল কামি (২৮) ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পর পর আঘাত হেনে ওদের হারিস রউফ ফিরিয়ে দেয়ার পর ধস নামালো শাদাব খান (৪/২৭)। মাত্র ২৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩.৪ ওভারে ১০৪ রানে সাঙ্গ হলো নেপালের ইনিংস। পরাজয় ২৩৮ রানের বিশাল ব্যাবধানে। প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচ রাঙ্গাতে পারলোনা নেপাল। ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে ওরা হয়তো চেষ্টা করবে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। পাকিস্তান বিশাল ব্যাবধানে জয়ী হলেও ফখর জামান, ইমাম উল হক কিন্তু ভালো সূচনা দেয় নি। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে কিন্তু টপ অর্ডারকে ভালো ব্যাট করতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × five =