
বিশ্ব ক্রিকেটে বর্তমানে দুটি তলানিতে থাকা দল বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে চলমান দ্বিপাক্ষিক টি২০ সিরিজে পর পর দুই ম্যাচ হেরে কৃষ্ণ ধোলাইয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচেই বাংলাদেশ ভালো বোলিং করে অতিথি দলকে নিয়ন্ত্রণের মাঝে সীমিত রাখলেও ব্যাটসম্যানদের ছন্নছাড়া নিদারুন ব্যার্থতার কারণে হেরে গাছে।
বলবো না ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য বা স্কিলের অভাব। অভাব ছিল দৃষ্টিকটুভাবে প্রয়োগ শক্তি আর পরিকল্পনার। সঙ্গে যোগ করতে হবে টিম ব্যাবস্থাপনার অপরিণামদর্শী একাদশ নির্বাচনে। কাল কিন্তু চট্টগ্রামে উইকেট ব্যাটিং বান্ধব ছিল।
সেই উইকেটে প্রথম ব্যাটিং করে একপর্যায়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আলিক আখানেজ (৫২) এবং সাই হোপের ( ৫৫) ব্যাটিং তান্ডবে ১১.১ ওভারেই এক উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান তুলে নিয়েছিল। ম্যাচের সেই পর্যায়ে ধারণা করা ভুল ছিল না হয়তো স্কোর অন্তত ২০০ পেরিয়ে যাবে।
কিন্তু প্রথমে নাসুম এবং এর পর মুস্তাফিজ দারুন ছন্দে বোলিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং ধসিয়ে দেয়। ৪৩ রান যোগ করে ৮ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা ( ১০৬/১-১৪৯/৯)। ইনিংস বিরতিতে অনেকেই ভেবেছিলো বাংলাদেশ ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে হয়ত সহজেই জিতে সিরিজে সমতা আনবে।
তবে বাংলাদেশের একাদশ নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও ছিল। অতিথি দলের ফিল্ডিং ছিল জঘন্য ধরনের। অন্তত ৪টি সহজ ক্যাচ ফস্কে গেলো। প্রথম ম্যাচে কিন্তু দুর্দান্ত কিছু ক্যাচ নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিল্ডাররা। কাল ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও নাদানের মত ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৩৫/৮ করে ১৪ রানে হেরে গেলো। তানজিদ তামিম ৬১ আর লিটন ২৩ ছাড়া কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। সাইফ (৫), তাওহীদ হৃদয় (১২), জাকের আলী (১৭), শামীম হোসেন (১) সহজ উইকেটেও ব্যর্থ হলো।
কেন কাল বার বার ব্যর্থ জাকের আলী আর শামীমকে একাদশে রাখা হয়েছিল টিম ব্যবস্থাপনাকে জবাবদিহি করতে হবে. কেন ওডিআই সিরিজে দারুন খেলা সৌম্য সরকারকে টি ২০ স্কোয়াডে রাখা হয়নি? আমি অবশ্য কঠিন পরিস্থিতেও স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে ম্যাচ জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে কৃতিত্ত্ব দিবো। বিচক্ষণ ড্যারেন সামি দলকে সঠিক পথে পরিচালনা করছে।
চার চারটি টি২০ সিরিজ জয়ের পর নিজেদের অদূরদর্শী কৌশল আর ত্রুটিপূর্ণ দল নির্বাচনের কারণে সিরিজ হারলো এমন এক দলের কাছে যারা নিকট অতীতে আয়ারল্যান্ড ছাড়া কোন দলের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজে জয় পায়নি। হয়ত দেখবেন তৃতীয় ম্যাচটি জিতে নিবে বাংলাদেশ। সবাই ভুলে যাবে প্রথম দুই ম্যাচে নিদারুন ব্যার্থতার কাহিনী।
আমি খেলোয়াড়দের আনাড়িপনার পাশাপাশি টিমের বাবস্থাপনাকেও দায়ী করবো। কিছুতেই মানব না দেশে বিকল্প নেই। বয়স ভিত্তিক দল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো খেলছে। ইয়াসির রাব্বী, সৌম্য সরকার, আকবার আলী ফর্মে আছে। তাহলে কেন ব্যর্থদের বার বার সুযোগ দিতে হবে। অবাক হব না যদি গাজী আশরাফ লিপু সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে থাকে।
বাংলাদেশের দুটি ম্যাচে নিদারুন ভাবে পরাজয়ের কোন অজুহাত মেনে নিবো না। রাত জেগে খেলা দেখে ক্ষুব্ধ আর ব্যথিত হয়েছি নিদারুণভাবে। আর একটি সিরিজ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার পর টি২০ বিশ্বকাপ। এই দল নিয়ে কি খুব আশাবাদী হওয়া যাবে?