কট্টর পেশাদার ইংল্যান্ড বাংলাদেশকে শিশুপাঠ দিলো

সালেক সুফী: প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ যুদ্ধ করে ৩ উইকেটে হেরেছিল। কাল কিন্তু একই মাঠে দুটি পরিবর্তন নিয়ে ইংলিশ লায়ন্সরা বাংলাদেশকে ক্রিকেটের প্রাথমিক পাঠ শিক্ষা দিলো। নির্দয় ভাবে পিটিয়ে বাংলাদেশ বোলিং তুলোধুনা করে রানের পাহাড় (৩২৬/৭) গড়েছিল ইংল্যান্ড। সেই পাহাড়ে চাপা পড়ে ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ করলো বাংলাদেশ।  ১৩২ রানের পরাজয়ে  তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজ ২-০ জিতে নিয়েছে ইংল্যান্ড। তৃতীয় ম্যাচে অপেক্ষা বাংলাদেশের এখন ধবল ধোলাই হবার। বাংলাদেশের তথাকথিত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বিশ্বক্রিকেটের হাল চাল নিয়ে কতটা অনভিজ্ঞ কাল হাতে কলমে শিক্ষা দিয়েছে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ মানসম্পন্ন সিয়াম সুইং বোলিংয়ের মোকাবিলায় আনাড়ি , লেগ স্পিন খেলতে একেবারে কচিকাঁচা।  সীমিত বোলিংয়ের কথা নাইবা লিখলাম।

টস জয়ী হয়ে কোন আশায় তামিম ওদের ব্যাটিং করতে পাঠালো জানি না।  যদিও ফিল সল্টকে শুরুতে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের শুভ সূচনা হয়েছিল। প্রথম ম্যাচের নায়ক ডেভিড মালানকেও সহজে ফিরিয়ে ছিল বাংলাদেশ, জেমস ভিন্স তেমন কিছু করেনি। কিন্তু কাল নিজের সংহার মূর্তিতে সক্রিয় ছিল জেসন রয়।  ওর ১৩২ রানের ম্যাচ নির্ধারণ ইনিংসটি বাংলাদেশ টপ অর্ডারদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকার মতো। অধিনায়ক জাস বাটলার (৭৬) যোগাযোগে চতুর্থ উইকেটে ১০৯ রানের পার্টনারশিপ ইংল্যান্ড দলকে শক্ত ফাউন্ডেশন দিয়েছিলো। সেখানে ভর করে মঈন আলী (৩৫ বলে ৪২) আর উদীয়মান চৌকষ খেলোয়াড় স্যাম কুরান (১৯ বলে অপরাজিত ৩৩) কি মার না মারলো বাংলাদেশি বোলারদের। ৩২৬/৭ অবশ্যই বাংলাদেশ সামর্থের অনেক বাইরে ছিল।

বাংলাদেশ জবাব দিতে এসে স্যাম কুরানের বাম হাতি সিম সুইংয়ের মোকাবিলায় শুরুতেই কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল। লিটন, শান্ত রানের খাতা খোলার আগেই প্রথম ওভারে ফিরে গেল। মুশফিক ফিরল কুরানের দ্বিতীয় ওভারে। ৩২৭ টার্গেটে ৯/৩ ম্যাচ সেখানেই শেষ। তামিম -সাকিব  যোগাযোগে চতুর্থ উইকেটে ধীর গতিতে ৭৯ রান যোগ হওয়া ছাড়া বাংলাদেশ ইনিংসের উল্লেখ করার মতো কিছু ছিল না। যে উইকেটে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশ স্পিনার্সদের তুলোধুনো করেছে সেখানেই আদিল রশিদের লেগ স্পিনের সামনে মুড়ি মুড়কির মতো ঝরে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাটিং। সাকিব ওর ৬৯ বলে গড়া ৫৮ রানের ইনিংসটি আরো একটু সম্প্রসারণ করলে পরাজয়ের ব্যাবধান হয়তো কমতো। তামিম সংগ্রাম করে ৩৫ করেছে। ওর ব্যাটিংয়ের ছন্দ হারিয়ে গেছে। রিয়াদ ছিল অনেক সময় উইকেটে।  কিন্তু খুব একটা সাচ্ছন্দ ছিল বলবো না। আসলে বাংলাদেশ ৩২৬ রান কনসিড করে পিছিয়ে পড়েছিল। এর পর কুরানের মোক্ষম আঘাত ( ৪/২৯) আর আদিল রশিদের ( ৪/৪৫) লেগ স্পিনের মুখে আঁৰি ব্যাটিং বাংলাদেশের ভূমিধস পরাজয় সিরিজ জয় এনে দিল। ১৩২ রানের বিশাল ব্যাবধানে পর্যায়ে ২-০ সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ।

তৃতীয় ম্যাচে দেখার বিষয় ধবল ধোলাই এড়াতে পারে কি না। কিছু বলার নেই এটাই বাংলাদেশ। নিজেদের অবস্থান কোথায় এখন বিশ্ব ক্রিকেটে সেটি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে ম্যাচটি। আশা করি চতুর হাতুরুসিংহ বুঝতে পারছে এবারের মিশন কতটা চ্যালেঞ্জিং।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seventeen + 8 =