দেশের শোবিজে নতুন জুটি স্বাগতা-হাসান ও মৌসুমী-রানা। গত জানুয়ারিতে নতুন জীবনে পা রেখেছেন তাঁরা। বিয়ের পর এই প্রথম একসঙ্গে ভালোবাসা দিবস উদ্যাপন করছেন এ দুই দম্পতি। বিশেষ এই দিনে স্বাগতা ও মৌসুমী জানালেন তাঁদের ভালোবাসার গল্প, কাছে আসার গল্প।
প্রকৃতিপ্রেম থেকে প্রেমে পড়া
রকমারি গাছ সংগ্রহের শখ মৌসুমীর। গ্রামে বড় হয়েছেন। ফলে প্রকৃতির সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। এখনো কোথাও কোনো গাছ পছন্দ হলে তার চারা নিয়ে আসেন। বাগান করতে ভালোবাসেন। রানা ও মৌসুমী—দুজনেরই পছন্দ ঘুরে বেড়ানো। একসঙ্গে দেশের পাহাড়-জঙ্গল দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। এই প্রকৃতিপ্রেম ও ভ্রমণের নেশা কাছে এনেছে তাঁদের।
চলচ্চিত্রকার আবু সাইয়িদ রানার সঙ্গে মৌসুমীর পরিচয় হয় একটি ওয়েব সিরিজে কাজের সুবাদে। সেখানে রানা ছিলেন সৃজনশীল প্রযোজক। মৌসুমী বলেন, ‘রানার হাসি ও কৌতূহলী চাহনি আমাকে মুগ্ধ করেছিল। তার চিন্তায় গভীরতা আছে। মজার ব্যাপার হলো, সে বয়সে আমার চেয়ে ছোট, এটা শুরুতে বুঝতেই পারিনি!’ আর মৌসুমীকে নিয়ে রানার ভাষ্য, ‘মৌসুমীকে স্ক্রিনে যেভাবে দেখতাম, ব্যক্তি হিসেবে সে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওর সততা ও সরলতা অসাধারণ। কোনো রাখঢাক বা কৃত্রিমতা নেই।’ গান শোনা, সিনেমা দেখা, বই পড়া—সবকিছুতে তাঁদের পছন্দ কাছাকাছি। আজ বিশেষ দিনটি নিজেদের মতো করেই কাটাবেন তাঁরা।
কাছে এনেছে পছন্দের মিল
স্বাগতা অভিনয় করেন। সংগীতশিল্পী হিসেবেও পরিচিত। হাসান আজাদ গান করেন। ভালো গিটার বাজান। দুজনই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, আর এটাই তাঁদের কাছে আসার কমন ফ্যাক্টর। স্বাগতা বলছেন, ‘প্রেম করার বয়স কিংবা মানসিকতা—কোনোটাই আমাদের ছিল না। পরিচয়ের পর বন্ধুত্ব হয়, ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একসময় দেখলাম, এই লোক তো আমার মতোই। আমাদের কথা, ভাবনার বিষয়গুলো এক। মনের কথাগুলোও মিলে যাচ্ছে।’
হাসানের সঙ্গে স্বাগতার প্রথম দেখা এক বান্ধবীর মারফত। প্রথম বিবাহবিচ্ছেদের পর প্রায় ৩ বছর একা ছিলেন স্বাগতা। সেই সময় কাছের মানুষেরা তাঁর জন্য পাত্র দেখছিলেন। একদিন দেখা হয় হাসানের সঙ্গে। লন্ডনপ্রবাসী হাসানও বিয়ের জন্য পাত্রী দেখছিলেন। মাস তিনেক পর বান্ধবীর সুবাদে আরেকবার দেখা হয় তাঁদের। সেদিন স্বাগতা তাঁর ঘড়ি ফেলে এসেছিলেন। পরদিন তা আনতে গিয়ে অনেকক্ষণ কথা হয় তাঁদের। এভাবে ধীরে ধীরে কাছে আসা। দুজন যখন বুঝতে পারেন, পরস্পরকে পছন্দ করতে শুরু করেছেন তাঁরা, তখন পরিবারকে জানানো হয়। পারিবারিকভাবে চার হাত এক হয় তাঁদের।
হাসানের কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে স্বাগতার? অভিনেত্রী বলেন, ‘সে একটা বই লিখেছিল বাংলাদেশকে নিয়ে। বইটির কিছু অংশ আমাকে পড়ে শুনিয়েছিল। আমি অবাক হয়েছি, এত সুন্দর লেখে সে। আরেকটা বিষয় হলো, সে তাৎক্ষণিক গান লিখে সুর করতে পারে।’ ভালোবাসা দিবসে আজ তাঁরা অমর একুশে বইমেলায় যাবেন। সেখানে স্বাগতা অভিনীত ‘মানুষের বাগান’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন তাঁরা।