গাজায় সাহায্য পৌঁছাতে গিয়ে ইসরায়েলের হাতে নিহত ত্রাণকর্মী

ওয়াশিংটন, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাতজন

ত্রাণকর্মীর একজন মার্কিন-কানাডিয়ান নাগরিক জ্যাকব ফ্লিকিংগারের বাবা জন ফ্লিকিংগার বৃহস্পতিবার বলেছেন, তার ছেলে গাজা যেতে ইতস্তত করছিল কিন্তু সে অনুভব করেছিল গাজায় সাহায্য পৌঁছাতে হবে।

ফ্লিকিংগার (৩৩) ‘ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন’ কর্মীদের একটি দলের মধ্যে ছিলেন। গত সোমবার গাজায় তাদের গাড়ি বহরে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে তিনি মারা যান। ইসরায়েল এই হামলাকে ‘মারাত্মক ভুল’ বলে উল্লেখ করেছে। তবে এই ঘটনা বিশ্ব নেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

মার্কিন মিডিয়ার সাথে সাক্ষাৎকারে নিহত ত্রাণকর্মীর বাবা-মা জন ফ্লিকিংগার এবং সিলভি ল্যাব্রেক তাদের ছেলেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। জ্যাকব ফ্লিকিংগার গাজা ভ্রমণের আগে গত বছর মেক্সিকোতে খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সাথে কাজ শুরু করেছিলেন।

জন ফ্লিকিংগার সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘তিনি (জ্যাকব ফ্লিকিংগার) গাজায় যেতে বিব্রত বোধ করেছিলেন। তিনি এক শিশুর বাবা। তার একটি সুন্দর ১৮ মাস বয়সী ছেলে রয়েছে।’ ‘তবে তিনি প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন এবং অবশ্যই তার পরিবারকে সমর্থন করতে হবে।’

বিবিসি নিউজের সাথে একটি পৃথক সাক্ষাৎকারে জন ফ্লিকিংগার বলেন, তার ছেলে কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর একজন সাবেক সদস্য। তিনি  ‘নিশ্চিতভাবে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, গাজায় তিনি নিরাপদে মিশনটি সম্পন্ন করে ফিরে আসতে পারবেন’।

জন ফ্লিকিংগার বলেন, তার ছেলের ‘সেবা এবং অন্যদের সাহায্য করার ইচ্ছা ছিল।’

ফ্লিকিংগার বলেছিলেন, তিনি অনুভব করেছিলেন, ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন জানে যে তারা সেখানে কী করছে। তারা আইডিএফ নিয়ন্ত্রিত একটি বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে ছিল।’

আবেগঘন সাক্ষাৎকারে ফ্লিকিংগার বলেন, তার চিন্তা ছেলের পরিবার নিয়ে।‘এখন আমার নাতি তার বাবাকে ছাড়াই বড় হবে’। জ্যাকব ফ্লিকিংগারের স্ত্রী স্যান্ডি লেক্লর্ক বৃহস্পতিবার একটি সাক্ষাৎকারে ‘এবিসি’ নিউজকে বলেছেন, ‘কী ঘটেছে তার সত্যতা সম্পর্কে তিনি জানতে চেয়েছেন। কারণ, এই পরিস্থিতি ছিল খুবই অস্পষ্ট।’

‘আমি এই খবরে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছি। সে আমার জীবনের অংশ ছিল।’ লেক্লার্ক বলেন, তিনি তাদের ছেলেকে কীভাবে বুঝাবেন যে তার বাবা মারা গেছেন। তা তিনি জানেন না।

সোমবারের ইসরায়েলি এই হামলার ঘটনা বিশ্বশক্তিধর দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে নিন্দা করা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এই ঘটনা হৃদয়বিদারক’। তিনি বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন যে আমেরিকান সমর্থন অব্যাহত রাখা গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার উপর নির্ভর করে।

স্প্যানিশ-আমেরিকান শেফ জোসে আন্দ্রেস ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন’। এই হামলার পর থেকে গাজায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ইসরায়েলি এই হামলায় অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং পোল্যান্ডের নাগরিকদের পাশাপাশি একজন ফিলিস্তিনিও নিহত হয়েছে।

ত্রাণকর্মীরা মধ্য গাজার একটি গুদামে সরবরাহের মালামাল আনলোড করছিল যখন ইসরায়েলি হামলায় তারা নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seven − 6 =