সালেক সুফী: ক্রমাগত পরাজয়ের বৃত্তে বন্দি বাংলাদেশ পারবে কি বিশ্বকাপ শুরুর আগে নিজেদের গুছিয়ে নিতে? নিউ জিল্যান্ডে তিন জাতি টুর্নামেন্টে দলের বোলিং ব্যাটিং দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে। ইনিংস সূচনায় অর্বাচীন , মিডল অর্ডার ব্যাটিং নড়বড়ে , স্লগ ওভারে আনাড়ি। বোলিং দৈনতার কথা নাই বা বললাম। এহেন দল নিয়ে খাবি খাবে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে বলাই বাহুল্য।
আমাদের শহর ব্রিসবেনে অ্যালেন বর্ডার ওভালে ১৭ আর ১৯ অক্টোবর দুটো অনুশীলন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। অবশ্যই মাঠে থাকবো। আফগানিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুটি অনুশীলন ম্যাচ বাংলাদেশের শেষ সুযোগ নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার। সব দলগুলো যখন নিজেদের মূল অভিজ্ঞ নিউক্লিয়াস ধরে রেখে কিছু স্থানে তরুণদের অন্তর্ভুক্তও করেছে, সেখানে বাংলাদেশ তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ ছাড়া আনকোরা নবীনদের নিয়ে দল গড়ে বাড়তি ঝুঁকি নিয়েছে।
নানা জটিলতার কারণে টি২০ ফরমেট থেকে অবসর নিয়েছে তামিম, মুশফিক আর অস্ট্রেলিয়া নিউ জিলান্ডে ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দলে নেওয়া হয়নি। বর্তমান দলটি সাকিবের নেতৃত্বে হালে পানি পাচ্ছে না। বিশ্বকাপে তুখোড় প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা দূরের কথা, কোয়ালিফাইং রাউন্ড থেকে উঠে আসা দল দুটির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে বলে সন্দেহ আছে। সব দল যখন দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে তখন কেন বাংলাদেশ এমন ঝুঁকি নিলো? বিশ্বকাপ তামাশার জায়গা নয়। দেয়ালে পিঠ রাখা বাংলাদেশ শুধু সাকিব, লিটনকে পুঁজি করে কতদূর কি করতে পারবে ভরসা করা যাচ্ছে না।
কোন বিবেচনায় দীর্ঘদিন বহন করেও ডোমিঙ্গকে হঠাৎ অসময়ে ছেঁটে ফেলা হলো? বর্তমান এলো মেলো অবস্থার জন্য কি ব্যাটিং কোচের আদলে ভারতীয় হেড কোচ দায়ি নয়? তথাকথিত বিতর্কিত টিম ডিরেক্টর কি করছে? ওপেনিং পার্টনারশিপের কথা বলি, কেন প্রথা ভেঙে মেহেদী মেরাজ এবং সাব্বির রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল? সৌম্যকে শুরু থেকে সুযোগ দিয়ে কেন লিটনের সহযোগী করা হলো না?
যে কোনো ফরম্যাটে ওপেন করা বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের কাজ। তামিম নিঃসন্দেহে কোনো কারণে আপনা থেকে সরে গাছে। কেন দীর্ঘ সময়েও দুই তিন জন ওপেনার খুঁজে পাওয়া গেলো না? তিন জাতির টুর্নামেন্টে কোন বিবেচনায় দলে নাজমুল হোসেন শান্তকে দলে নেওয়া হয়েছে? কেনই বা ওকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রাখা। দলে লিটন আর সাকিব ছাড়া কোনো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান নাই। মিডল অর্ডার অপরিণত আফিফ, সোহান, ইয়াসির স্বল্পভিজ্ঞ। ওদের দিয়ে তুখোড় দলগুলোর বিরুদ্ধে ভরসা করা যায় না। এই দলে স্লগ ওভারে ধুম ধাড়াক্কা ব্যাটিং করার মতো কেউ নেই। বাংলাদেশের সামর্থ নেই প্রতি ম্যাচে ১৭০-১৮০ করার।
না পেস না স্পিন কোনো বোলিং দিয়েই বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না। সবচেয়ে করুন দশা মুস্তাফিজের। এবাদত, তাসকিন, শরিফুল অস্ট্রেলিয়ান উইকেট গুলোতে সঠিক লেংথে ক্রমাগত বোলিং করতে না পারলে বিপদ হবে। সাকিব, মেরাজ কতদূর পারবে নিয়ন্ত্রণ করতে?
মোট কথা দুর্বল, অগোছালো দল নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বাংলাদেশ। তবু থাকবো বাংলাদেশের পাশে। স্বপ্ন দেখবো অন্তত দুটি ম্যাচ জয়ের।