অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ দেশে কার্যরত মূ লধারার গণমাধ্যমকে গুজবের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার আহবান জানিয়েছেন তথঢ ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ বাসভবনে অনরাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন (ওনাব’) নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এ আহবান জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করে। এ কারণেই আমাদের সরকারের সময় গণমাধ্যমের অভূতপূর্ব বিকাশ বা “এক্সপোনেন্সিয়াল গ্রোথ” হয়েছে।
দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে কিন্তু গণমাধ্যমের কোনো কোনো ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার ঘাটতি আছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, দেশে এবং বিদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভুঁইফোড় অনলাইনই এখন গুজব ছড়ানোর মাধ্যম। পদ্মাসেতু তৈরির সময়, রামু এবং নাসিরনগরের ঘটনাতেও তাই দেখা গেছে। মূলধারার গণমাধ্যমের অংশ হিসেবে নিবন্ধিত অনলাইন নিউজপোর্টালগুলোর দায়িত্ব গুজব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা।
‘ওনাব’ সভাপতি মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহিন চৌধুরী, সহসভাপতি সৌমিত্র দেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান ও আশরাফুল কবির আসিফ, নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে অধ্যাপক অপু উকিল, নজরুল ইসলাম মিঠু, অয়ন আহমেদ এ দিন মতবিনিময়ে অংশ নেন। তারা ‘অনলাইন বিজ্ঞাপন নীতিমালা’ প্রণয়নের দাবি উত্থাপন করলে মন্ত্রী হাছান সেটি সুবিবেচনার আশ্বাস দেন।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারা নিজেরা আত্মগোপনে থেকে কর্মী ও সন্ত্রাসীদের টাকা দিয়ে গাড়ি পোড়ানো, মানুষের ওপর হামলা পরিচালনা করাই তাদের অবরোধ কর্মসূচি। এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ না, সন্ত্রাসী সংগঠনের কাজ।’
তিনি বলেন, ‘সরকার সমস্ত সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতিকারীকে ধরার জন্য বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি জনগণকেও আহবান জানাবো- এরা দেশ, জাতি, সমাজের শত্রু, মানুষের শত্রু, এরা হিংস্র হায়েনার চেয়েও খারাপ। তাই এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন।’
আগামী রোববার থেকে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘন্টার অবরোধ নিয়ে প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দুনিয়ার অন্য কোথাও কেউ হরতাল-অবরোধের নামে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ায় না। আমরা যখন বিরোধীদলে ছিলাম কখনো গাড়ি-ঘোড়া পোড়াইনি, বড়জোর রিকশার চাকার বাতাস বের করে দিতাম। তবে বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি ইতিমধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে। গতকালও (বৃহস্পতিবার) রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হয়েছে। মানুষ অবরোধ পালন করছে না, বরং ভয়ের ভাবটাও কেটে যাচ্ছে।’
‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ৫৬% বৃদ্ধির পরও বহিরাগতদের চক্রান্ত’
এ সময় পোষাকশ্রমিকদের বেতন ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে মাসিক ১২ হাজার ৫০০ টাকা করার পরও বহিরাগতদের দিয়ে এই খাতে অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৮ অক্টোবর দেশে চূড়ান্ত অস্থিরতা তৈরি করতে না পেরে সেই একই মহল এখন গার্মেন্টসে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যারা শ্রমিক নয়, কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে না, যাদের গাড়ি-ঘোড়া আছে, বড় ব্যাংক ব্যালান্স আছে, ঢাকায় সুন্দর ফ্ল্যাট আছে, তারাই “শ্রমিক নেতা” এবং অস্থিরতার পাঁয়তারার হোতা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এদের কেউ কেউ শ্রমিকদের বেতন ২৫ হাজার টাকা দাবি করেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে সরকারি বা ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা চাকুরিতে ঢোকে তারাও ২০ হাজার টাকার মতো বেতন পায়। অর্থাৎ বাস্তবতার নিরিখে এই দাবি আসলে গ্রহণযোগ্য নয়।’
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিকেও তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে, নাহলে বেতন কোথা থেকে দেবে উল্লেখ করে হাছান বলেন, ‘সে কারণে মালিক, শ্রমিক সবপক্ষের বসার পর প্রধানমন্ত্রী ১২,৫০০ টাকা এবং প্রতি বছর ৫% বেতন বৃদ্ধি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এরপর বেশিরভাগ শ্রমিকই সন্তুষ্ট হয়ে কাজে ফিরে গেছেন। কিন্তু কিছুকিছু জায়গায় বাইরের লোক গিয়ে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেককে শনাক্ত করছে। সাংবাদিকদের অনুরোধ জানাই, শ্রমিকের বাইরে যারা আছে তাদের নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করার জন্য, কারণ এই বহিরাগতদের নাশকতারও পরিকল্পনা রয়েছে।’