গোলাম রব্বানীর পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানো, ৩ দশকের সাধনা সফল

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ মডেল স্কুলের সঙ্গীত, অংকন ও হাতের লেখার শিক্ষক গোলাম রব্বানী। শৈশবকাল থেকেই গান আর ছবি আঁকার নেশা তার। হাতের  লেখা সুন্দর করতে একটু স্কুলও আছে তার। এসব কিছু ছাপিয়ে তিনি এখন দেশের মানুষের কাছে পরিচিত ভিন্ন রূপে। সম্প্রতি ‘কথা কইও না’ শিরোনামের গান কোক স্টুডিও বাংলায় প্রচারিত হয়। যেখানে গানের কয়েকটি অংশে আতা গাছের পাতা দিয়ে বাঁশি বাজিয়েছেন তিনি।

পাতার বাঁশি বাজানো স্কুল শিক্ষক গোলাম রব্বানী দিনাজপুর বোচাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। গান, ছবি আঁকার পাশাপাশি মনের ইচ্ছে থেকেই বিভিন্ন পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানোর চেষ্টা করতেন তিনি। এর আগেও তিনি ইত্যাদি, বিটিভিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাতার বাঁশি বাজিয়েছেন।

তবে কোক স্টুডিও বাংলাতে গানটি প্রচারের পর ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান স্কুল শিক্ষক গোলাম রব্বানী। পূর্ণ হয় তার ৩০ বছরের পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানোর সাধনা। এদিকে, গোলাম রব্বানীর এমন কার্যক্রমে আনন্দিত ও গর্বিত এলাকাবাসীসহ তার কর্মস্থল স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানোর কায়দা রপ্ত করার।

বোচাগঞ্জ মডেল স্কুলের শিক্ষার্থী তাহমিদা আক্তার বলেন, আমি স্যারের স্কুলে হাতের লেখা অনুশীলন করি। এখন তো পাতা দিয়ে বাঁশি বাজিয়ে তিনি অনেক পরিচিত হয়েছেন। এটা আমাদের স্কুলের জন্য গর্বের বিষয়। আমিও স্যারের মতো পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানো শিখতে চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছোট থেকেই রব্বানী ভাইকে দেখে আসছি। গানবাজনা আর ছবি আঁকা তার অনেক শখ। তিনি যে পাতা দিয়ে এত সুন্দর সুর তুলতে পারেন এটা সত্যি অসাধারণ। আমাদের বোচাগঞ্জবাসীর গর্ব তিনি।

গোলাম রব্বানীর সহকর্মী শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, রব্বানী ভাই ভালো ছবি আঁকেন ভালো গানও করেন। আর পাতার বাঁশি বাজানোটা তার দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফল। আজকে পুরো দেশবাসী তার এই প্রতিভার জন্য তাকে চিনেন। এতদিন পর হলেও তিনি তার সাধনার ফল পেয়েছেন এটা অত্যন্ত আনন্দের। আমরা তার জন্য গর্ববোধ করি। আর আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা রব্বানী ভাইয়ের মত গান শিখতে চায়, পাতার বাঁশি বাজানো আয়ত্ত করতে চায়। তাদের জন্য এগুলো শেখাটা সহজ হলো।

পাতার বাঁশি বাজানো শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, হাতের লেখা, ছবি আঁকা যেমন আমার সখ, তেমনি গান করা বাঁশি বাজানোটাও আমার সখ। ১৯৮৮ সাল থেকে আমি সঙ্গীত ও চিত্রাংকন চর্চার সঙ্গে জড়িত। প্রথম দিকে পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানোটা কষ্টকর ছিল। আতা গাছের পাতা দিয়ে মূলত বাঁশি বাজাই। অনেক চেষ্টার পর আমি এটা করতে পেরেছি। এটা নিজের কাছেও ভাল লাগে। সামনে আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।

বাংলা নিউজ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

17 + eight =