বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের জন্মদিন আজ। প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন চিত্রনাট্যকার ও লেখক। ১৯২৩ সালের ১৪ মে আজকের এই দিনে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন জনপ্রিয় এ ব্যক্তিত্ব। শৈশব কাটে সেখানেই। এরপর সেখান থেকে হাইস্কুলের পড়াশোনা শেষ করে সপরিবারে পাড়ি জমান কলকাতায়।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে যুক্ত হন সমাজবাদী সংস্থা ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় পড়াশোনা করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গেও। ১৯৫৫ সালে নির্মাণ করেন ‘রাতভোর’ সিনেমাটি। এ সিনেমায় সফল না হলেও ১৯৫৯ সালে ‘নীল আকাশের নিচে’ এবং ১৯৬০ সালে ‘বাইশে শ্রাবণ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে শুরু হয় শক্তিশালী মৃণাল সেনের জয়যাত্রা।
তার নির্মিত আকাশকুসুম, মৃগয়া অন্যযাত্রা, কলকাতা ৭১, মহাপৃথিবী, ওকাউরি কথা ও অন্য ভুবন-এ মৃণাল ছুঁয়ে গেছেন সময়কে। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া, তেলেগু প্রভৃতি ভাষায়ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন মৃণাল।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশ-বিদেশে অজস্র পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন তিনি। যেমন ‘আকালের সন্ধানে’-র জন্য ১৯৮১ সালের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার অর্জন করেন মৃণাল সেন। ‘খারিজ’ সিনেমার জন্য ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কারও অর্জন করেন তিনি।
এ ছাড়া ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ, ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে অর্জন করেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে ‘অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ’ সম্মানে ভূষিত করেন। এছাড়া ফরাসি সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘কমান্ডার অব দ্য আর্টস অ্যান্ড লেটারস’-এ ভূষিত হন প্রখ্যাত এই চলচিত্রকার।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ফিল্মের প্রেসিডেন্ট পদেও দায়িত্ব পালনে সুযোগ ঘটে মৃণাল সেনের। স্বাভাবিক জীবনের ছন্দপতন ঘটে স্ত্রী গীতার মৃত্যুতে। আর এ কারণেই ২০১৭ সালে স্ত্রী গীতা সেনের মৃত্যুর এক বছর পরই ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৯৫ বছর বয়সে মারা যান এই গুণী ব্যক্তিত্ব।