বিশ্ব সিনেমার সবচেয়ে বড় বাজার ধরা হয় চীনকে। শুধু স্থানীয় ইন্ডাস্ট্রি নয়, হলিউডেও কোনো সিনেমা মুক্তির আগে পরিবেশকেরা মাথায় রাখেন চীনের কথা। বলা হয়ে থাকে, চীনে যদি হলিউডের কোনো সিনেমা খারাপ করে, তাহলে সেটা প্রভাব ফেলে সারা বিশ্বে। আর সেখানে ভালো করা মানেই বক্স অফিসে বাজিমাত! সেই চীনে এবার প্রথমবারের মতো প্রবেশ করতে যাচ্ছে সৌদি সিনেমা।
সৌদি আরবের সিনেমা চীনে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি ফিল্ম কমিশন। দেশটিতে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি দিতে চায় সৌদি আরব। তার আগে সৌদি সিনেমার সঙ্গে চীনের দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ২১ থেকে ২৬ অক্টোবর বেইজিং, সাংহাই ও সুজৌ শহরে অনুষ্ঠিত হবে ‘সৌদি ফিল্ম নাইট’ নামের বিশেষ আয়োজন।
সৌদি আরবে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা দেখানো হবে সৌদি ফিল্ম নাইটে। চীনে প্রদর্শনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে চারটি সিনেমা—‘ভ্যালি রোড’, ‘ইল সিগনোর’, ‘সালেগ’ ও ‘স্টার চেজার’। প্রতিটি সিনেমায় ফুটে উঠেছে সৌদি আরবের সংস্কৃতি। সিনেমা দেখানোর পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সঙ্গে দর্শকদের মতবিনিময়ের সুযোগও রাখা হয়েছে। সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে খবরটি জানিয়েছে আরব নিউজ। এর আগে এ বছরের এপ্রিলে মরক্কোতে, মে মাসে ফ্রান্সে ও জুনে অস্ট্রেলিয়ায় সৌদি ফিল্ম নাইট আয়োজন করেছিল সৌদি ফিল্ম কমিশন। য়োজনটি তিন দেশেই ভালো সাড়া ফেলেছিল।
কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সরকার চেষ্টা করছে চলচ্চিত্রে নিজেদের অবস্থান সমৃদ্ধ করতে। ২০১৮ সালে দীর্ঘ ৪০ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সৌদি আরবের সিনেমা হল। এর পর থেকে দেশটিতে ক্রমেই বাড়ছে হলের সংখ্যা। তরুণদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে সিনেমা নির্মাণের জন্য। এ লক্ষ্যে আধুনিক স্টুডিও ও ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি সরকার।
৯ অক্টোবর থেকে রাজধানী রিয়াদে শুরু হয়েছে ‘সৌদি ফিল্ম কনফেক্স’। তিন দিনের এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন সারা বিশ্বের অভিনেতা, নির্মাতা, প্রযোজক, পরিবেশকসহ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। উদ্বোধনী দিনে হাজির ছিলেন হলিউড অভিনেতা উইল স্মিথ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সৌদির সংস্কৃতিমন্ত্রী ও দেশটির ফিল্ম কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিন্স বদর বিন আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা কিংডমকে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
গত বছর এই আয়োজনের প্রথম আসরে ১৯টি দেশ থেকে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছিলেন। এবার ২৫টি দেশের ৬৫ হাজারের বেশি মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সৌদি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, দেশটির অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে কীভাবে সিনেমার অবদান আরও বাড়ানো যায়; অতিথিরা সেটাই আলোচনা করেছেন সৌদি ফিল্ম কনফেক্স উৎসবে। রয়েছে সিনেমা প্রদর্শনী ও চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর ১৫টি ওয়ার্কশপ।