চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে পড়লো বাংলাদেশ, পাকিস্তান

সালেক সুফী: পর পর দুটি ম্যাচ হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাংলাদেশকে সাথী করে ছিটকে পড়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। ভারত পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতা একসময় টুর্নামেন্টের আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে দিয়েছিলো। অবশেষে পাকিস্তান আর সংযুক্ত আরব এমিরেটসের দুবাইতে পিসিবি আয়োজনে হাইব্রিড পদ্ধতিতে শুরু হলো টুর্নামেন্ট। সেই টুর্নামেন্টে কিন্তু স্বাগতিক পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ কোনো ভাবেই টুর্নামেন্ট জয়ের জন্য ফেভারিট ছিল না। আর তাই গ্রূপ পরাজয়ে একই গ্রূপে থাকা পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ছিটকে পড়া কাউকে বিস্মিত করেছে বলে মনে হয় না। টুর্নামেন্টে হট ফেভারিট ভারত পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে হেসে খেলে হারাবে সেটি অনুমিত ছিল. টুর্নামেন্টে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নিউ জিল্যান্ড পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়েছে তুখোড় ক্রিকেট খেলে। স্বাগতিক পাকিস্তান ছিটকে পড়ায় হয়ত টুর্নামেন্ট গ্ল্যামার হারিয়েছে। কিন্তু খেলাগুলোতে কোন অঘটন ঘটে নি। আর বাংলাদেশকে কেউ টুর্নামেন্টে সঙ্গত কারণেই গোনায় ধরে নি।

পাকিস্তান দল নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক করেছে প্রাক্তন কিংবদন্তি ক্রিকেটার সহ পাকিস্তানের গণ মাদ্ধম। বর্তমান উইকেট গুলো স্পিন বান্ধব হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তান দলে স্পিনার আছে স্বীকৃত একমাত্র লেগ স্পিনার  আবরার আহমেদ। কিছু দিন আগে পাকিস্তান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তুখোড় ফর্মে থাকা পাকিস্তান স্পিনারদের কেন দলে নেয়া হলো না সেটি নিয়ে অনুসন্ধান হতেই পারে।  সাঁইযুম আয়ুব আহত হয়ে পড়ার পর দলে নিয়মিত ওপেনার ছিল না. ফখর জামান  দীর্ঘ দিন পর দলে ফিরে আবারো আহত হয়ে পরে। বাবর আযমকে দিয়ে ওপেনিং করানো সঠিক হয় নি। মিডল অর্ডারে রিজওয়ান এবং সাউদ সাকিল কিছুটা সাফল্য পেলেও দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। দলের বোলিং মূলত পেস নির্ভর হলেও শাহীন শাহ আফ্রিদি। হারিস রউফ বা নাসিম শাহ বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে নি। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে স্বল্প সময়ে তিন বার হেরেছে পাকিস্তান, ভারতের সঙ্গে দাঁড়াতেই পারে নি। দেখতে হবে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে স্বাগতিক দর্শকদের কিছু উপহার দিতে পারে কিনা পাকিস্তান?

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে নি. কেন তামিম, সাকিব দলে নেই তা নিয়ে কিন্তু যথেষ্ট জল ঘোলা হয়েছে। এখানে বিসিবির আনাড়িপনাকেই আমি দায়ী করবো। এমন একটি বিশ্বমানের টুর্নামেন্ট খেলতে গেছে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায়।  গ্রূপ পর্যায়ে ভারত ,নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দাঁড়াতে পারবে না সেটি অনুমিত ছিল। দলে তামিম ,সৌম্য নানা কারণে না থাকার পর সৌম্যর উপর ভরসা থাকলেও সৌম ১০০% ম্যাচ ফিট ছিল না। তানজিদ তামিম টি ২০ আর ওডিআইর ব্যাবধান শিখেছে বলে প্রমান পেলাম না। শান্ত পরিবর্তিত অবস্থানে একটি ম্যাচ ভালো খেললেও বার্থ হয়েছে ওপর ম্যাচে। তাওহীদ হৃদয়ের ক্ষেত্রেও ঘটেছে একই কাহিনী। দুই ম্যাচে বার্থ হয়েছে মুশফিক। হয়তো এই ফরম্যাটে পরবর্তী ম্যাচটি হতে পারে আন্তর্জাতিক ওডিআইতে মুশফিকের বিদায়ী ম্যাচ। প্রথম সুযোগে বার্থ হয়েছে রিয়াদ। ক্যারিয়ার গোধূলি বেলায় রিয়াদ হয়তো শেষ খেলা খেলবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। প্রত্যাশা অনুযায়ী জ্বলে উঠতে পারে নি মেহেদী মিরাজ। ভালো খেলেছে জাকের আলী অনিক আর রিশাদ হোসেন। দল পর্যাপ্ত রান করতে পারে নি বিধায় পেস স্পিন বোলাররা মোটামুটি ভালো বোলিং করেও জয়ের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে নি। অবস্থা দৃষ্টি মনে হচ্ছে খালি হাতেই হয়তো দেশে ফিরতে হবে বাংলাদেশকে। ভবিষ্যতে দেশের সেরা দল দল নিয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে দল না পাঠালে এমনি বিড়ম্বনায় পড়বে বাংলাদেশ। আমি বাংলাদেশের বিপর্যস্ত অবস্থার জন্য বিসিবিকে দায়ী করবো। একই সঙ্গে পাকিস্তানের ভরা ডুবির জন্য দায়ী পিসিবি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seventeen + 16 =