সালেক সুফী
সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৫ ম্যাচ টি২০ সিরিজে অনুশীলন ক্যাম্পের জন্য ১৭ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি নির্বাচকমণ্ডলী। এই মুহূর্তে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাকিব আল হাসান এবং আইপিএল খেলতে ভারতে অবস্থান করা মুস্তাফিজুর রহমানকে স্কোয়াডে রাখা হয়নি। সাকিব নানা কারণে বেশ কিছুদিন ক্রিকেট বিচ্ছিন্ন। উপরন্তু দেশে বিরাজমান প্রচণ্ড গরম থেকে দূরে আছে। এমতাবস্থায় সাকিব চলতি মাস শেষে দেশে ফিরে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের দল শেখ জামাল ক্রিকেট ক্লাবে দুই একটা ডিপিএল খেলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিনে নিয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচ গুলো খেলতে পারবে বলে প্রধান নির্বাচক আশা প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে এনওসি শেষে ১ মে দেশে ফিরবে মুস্তাফিজ। তাকে সরাসরি প্রথম ম্যাচ থেকে খেলানোর পক্ষে নয় নির্বাচকমণ্ডলী।
বাংলাদেশ স্কোয়াড :
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, পারভেজ হোসেন ইমন, তানভির ইসলাম, আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং সৌম্য সরকার।
ঘোষিত দল নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষাপটে বিতর্কের সুযোগ খুব একটা আছে বলে মনে হয় না। জানি সবাই তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রাহিম টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছে। নিজ প্রতিভায় প্রতিভাত হয়ে দাপটের সঙ্গে ফিরেছেন সাইলেন্ট কিলার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রশ্ন আসতে পারে সৌম্য সরকার ম্যাচ ফিট কি না। চৌকষ মেহেদী মিরাজ স্কোয়াডে না থাকা নিয়েও কথা হতে পারে। এছাড়া বিশ্ব ক্রিকেটে বর্তমানে অপেক্ষাকৃত কম শক্তির দল জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে খেলার জন্য ঘোষিত স্কোয়াড যথাযথ বলেই মনে হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট, ওডিআই ফরম্যাটে অধারাবাহিক থাকলেও লিটন কুমার দাসের ক্লাস নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। ওপেনার হিসাবে তার সংগে বিবেচনা করা হয়েছে সৌম্য সরকারকে। হয়তো তাকে ম্যাচ ফিট বলেই জেনেছে নির্বাচকমণ্ডলী। বাড়তি ওপেনার হিসাবে তরুণ সাহসী তানজিদ হাসান তামিমের নির্বাচন যথাযথ। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশকে ওপেনার সমস্যা করতে হবে। তরুণ তানজিদ তামিম এবং পারভেজ ইমন ম্যাচ খেলে অভিজ্ঞতা অর্জন করলে শুভ হবে।
শান্ত, হৃদয়, রিয়াদকে নিয়ে গড়া টপ এবং মিডল পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক আছে। লেট্ মিডল অর্ডারে জাকির অনিক, আফিফ হোসেন, শেখ মেহেদী এই মুহূর্তে সঠিক নির্বাচন। পরিস্থিতির কারণেই রিশাদ হোসেন এবং পারফরম্যান্সের কারণে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন স্কোয়াড ভুক্ত হয়েছে। লেট্ অর্ডারে স্লগ ওভারগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে বিকল্প সৃষ্টি হয়েছে। অন্তত নির্বাচকরা দল নির্বাচনে যথেষ্ট ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলা যায়। তবে শেষ ম্যাচগুলোতে পরিস্থিতি বিবেচনায় অভিজ্ঞ মেহেদী হাসান মিরাজকে দুই একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশের পেস আক্রমণ নিয়ে বলার কিছুই নেই। তাসকিন, শরিফুল, হাসান মাহমুদ, তানজিম শাকিব আছে, আছে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এক পর্যায়ে নিশ্চিত ভাবে খেলবে মুস্তাফিজ। তবে প্রচণ্ড গরমে পেসারদের ওয়ার্ক লোড বিবেচনায় রাখতে হবে। সাকিব, মিরাজ না থাকায় স্পিন আক্রমণ সামাল দিতে হবে রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, শেখ মেহেদীকে। এখানেই অভিজ্ঞতার ঘাটতি।
দেখা যাক সুযোগের ব্যবহার করে তরুণ স্পিনাররা কতটুকু জ্বলে ওঠে। তবে মূলত তারুণ্যনির্ভর দলকে অবশ্যই চৌকষ ফিল্ডিং করতে হবে। বাংলাদেশ অবশ্যই সিরিজে ফেভারিট। তাই বলে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিবে এটি ভাবছি না। শেষ ম্যাচ গুলোতে সাকিব, মুস্তাফিজ ফিরলে দলের ভারসাম্য অনেক সুসংহত হবে।