টানা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের

আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টানা তৃতীয় সিরিজ জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি স্পোর্টস। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে শুধুমাত্র একবার টানা তিনটি সিরিজ জিতেছিলো বাংলাদেশ। ২০২১ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়েছিলো তারা।

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ড়শলভঠ  শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাট্টিকের পরও ২ উইকেটে ম্যাচ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  বিষয় হচ্ছে-এই ফরম্যাটে শক্তিশালী দল হয়ে উঠার দক্ষতা দেখিয়েছে টাইগাররা।

দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। এক প্রান্ত আগলে রেখে ৪৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে  দল যখন হারের মুখে পড়ে তখনই ব্যাট হাতে নিজের সামর্থ্যের প্রমান দেন হৃদয়।

হৃদয়কে সমর্থন দিয়েছেন আরেক তরুণ ব্যাটার শামিম হোসেন পাটোয়ারী। আফগানদের স্পিন আক্রমণকে দারুনভাবে সামলে নিয়ে ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন হৃদয় ও শামিম। তাদের দুর্দান্ত জুটিতেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। শামিমকে ৩৩ রানে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন রশিদ খান। অনপ্রান্তে চাপের মধ্যেও হাল ছাড়েননি হৃদয়।

শেষ ওভারে বাংলাদেশের ৬ রানের দরকারে হ্যাট্টিক করে আফগানিস্তানের আশা বাঁচিয়ে রাখেন করিম জানাত। তার চমকের পর বাউন্ডারি দিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন আরেক তরুণ শরিফুল ইসলাম।চাপের মধ্যে থেকেও এমন জয় ভবিষ্যতের ম্যাচগুলোতে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিবে বলে জানান হৃদয়। এখন দেখার বিষয়, এই আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারে কি-না বাংলাদেশ।

গেল বছরও একই দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ তৈরি করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ হেরে যায় টাইগাররা। হৃদয় বলেন, ‘যে দলই জিতুক না কেন এমন ম্যাচ সব খেলোয়াড়কেই আত্মবিশ্বাস দিবে। কারণ, এ ধরনের ম্যাচ খুব কমই হয়। আমি যে অবস্থায় ছিলাম, সেখান থেকে ম্যাচ শেষ করতে পেরে ভালো লাগছে। যখন এমন সুযোগ আসে, সব ব্যাটারেরই লক্ষ্য থাকে ম্যাচ শেষ করার। এটা করতে পেরে ভালো লাগছে।’

প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়-হারের ব্যবধান কমিয়েছে বাংলাদেশ। পরিচিত প্রতিন্দ্বন্দিদের বিপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলে চতুর্থ জয়ের স্বাদ নিয়েছে টাইগাররা। তবে এখনও ছয় জয় নিয়ে এগিয়ে আছে আফগানরা।

ভেজা মাঠের কারনে বল গ্রিপ করতে এবং স্পিন করতে সমস্যা হয়েছিলো আফগানিস্তানের স্পিনারদের। ম্যাচ হারের জন্য এটিকেই প্রধান কারন হিসেবে উল্লেখ করেন রশিদ। কিন্তু যেভাবে লক্ষ্য তাড়া করেছেন হৃদয় এবং শামিম সেটি বাংলাদেশকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে।

রশিদ বলেন, ‘সত্যি বলতে মাঠ খুব ভেজা ছিল এবং ভেজা বলের কারনে আমরা নিজেদের শক্তির ৫০ শতাংশ হারিয়েছি। তারপরও আমরা ভাল বোলিং করেছি। সবমিলিয়ে নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছে দল। আমাদের বোলিং ইউনিটের সাথে এমন চেষ্টা যথেষ্ট ছিল। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে একটি ইনিংস আপনার হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ বের করে নিতে পারে।’

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি আগে কোন অনুশীলন  না থাকায়  বাংলাদেশ উইনিং  কম্বিনেশন ধরে রাখবে বলেই ধারনা করা হচ্ছে।  ঐচ্ছিক অনুশীলনে থাকা আফগানিস্তান দলে  এক বা দু’টি পরিবর্তন আনতে পারে।

বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামিম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন চৌধুরী, শরিফুল ইসলাম, রিসাদ হোসেন ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।’

আফগানিস্তান দল: রশিদ খান (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, মোহাম্মদ শাহজাদ, হজরতুল্লাহ জাজাই, ইব্রাহিম জাদরান, সেদিকুল্লাহ আটাল, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, করিম জানাত, আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, মুজিব উর রহমান, ফজল হক ফারুকি, ফরিদ আহমেদ, নবীন-উল হক, নূর আহমদ ও ওয়াফাদার মোমান্দ।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × 1 =