টি২০ বিশ্বকাপ: তীরে এসে তরী ডোবায় স্বপ্নভগ্ন বাংলাদেশের 

সালেক সুফী

নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট মাঠের ব্যাটম্যানদের সমাধিসম উইকেটে কাল আরো একটি স্বল্প স্কোরের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখলো। আগের দিন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ৬ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ঝরে পরে পাকিস্তান। কাল ছিল টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের খেলা। পরিকল্পিত বোলিং এবং তুখোড় ফিল্ডিং করে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১৩/৬ স্কোরে সীমিত রেখেছিল।

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট অনুরাগীরা ম্যাচ জয়ী হয়ে টুর্নামেন্টের পরবর্তী রাউন্ডে উন্নীত হবার স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল। কিন্তু কঠিন উইকেটে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা সংগ্রাম করেও নির্ধারিত ওভার শেষে করতে পারে ১০৯/৭।  পরাজয় মাত্র ৪ রানের। তীরে এসে তরী ডুবলো স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশের। দুই ম্যাচ খেলে এক জয়, এক পরাজয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বাংলাদেশ এখনো ছিটকে যায়নি।

জয়ের সম্ভাবনা বিজলি চমকের মতো উঁকি দিয়েও মিইয়ে যায়। বাংলাদেশ ইনিংসের শেষ ওভারে নীরব ঘাতক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের একটি স্ট্রোক হাত ছোয়া দুরুত্বের জন্য সীমানা পেরুতে পারেনি। বাউন্ডারি লাইনে দাড়ানো প্রোটিয়ান অধিনায়ক আদ্রিয়ান মার্করাম, কেশব মহারাজের বলে ক্যাচ লুফে নিলে নিরাশার সাগরে সলিল সমাধি হয় বাংলাদেশের বিজয় সম্ভাবনার।  মাত্র ৪ রানে পরাজয় বরণ করে বাংলাদেশ।

কঠিন উইকেটে টস জয়ের সৌভাগ্য হয়েছিল বাংলাদেশের। চমৎকার বোলিং করে তানজীম হাসান সাকিব (৩/১৮), তাসকিন (২/১৯), মুস্তাফিজ (০/১৮) , মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (০/১৭) দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ব্যাটিং নিয়ন্ত্রণের রেখে  নির্ধারিত ২০ ওভারে ১১৩/৬ স্কোরে সীমিত রেখেছিল। অনেকেই স্বপ্ন দেখছিল আরো একটি গৌরবোজ্জ্বল জয় পাবে বাংলাদেশ।

১৭.১ ওভারে ৫/৯৪ করে জয়ের পথে ছিল বাংলাদেশ। মেধাবী তরুণ তাওহীদ হৃদয় ( ৩৭) এবং চিরবিশ্বস্ত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ( ২০) যোগাযোগে ৫ম উইকেট জুটিতে মূল্যবান ৪৪ রান যোগ হলে জয়ের পথে ছিল বাংলাদেশ।  কেশব মহারাজের করা শেষ ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদুল্লার স্ট্রোকস সীমানাপেরিয়ে যাবার মুহূর্তে প্রোটিন অধিনায়ক আদ্রিয়ান মার্করাম  ক্যাচ লুফে নিলে ৪ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। এমন পরাজয়ে আশাভঙ্গের নীলিমায় নীল হয় বাংলাদেশ।

উইকেট নিয়ে কিছু কথা বলতে হয়। টি২০ ক্রিকেটের মতো রান উৎসবের ক্রিকেটে এই ধরনের নিচু, অসম বাউন্সের উইকেট কখনো কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না। দুই দলের ৩+৩=৬ জন ব্যাটসম্যান মাত্র দুই অংকের স্কোর ছুঁতে পারে।

টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্যায়ে নেদারল্যান্ডস চোখ রাঙালেও হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশ সঙ্গী হবে বলা যেতে পারে।  কালকের ম্যাচে বোলিং, ফিল্ডিং তুখোড় হলেও তানজিদ তামিম, লিটন দাস, সাকিব হাসানের ব্যাটিং ব্যার্থতা দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে। ব্যাটিং, বোলিং সবকিছুতেই নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে সাকিব।  জানিনা কি ব্যাখ্যা আছে ওর নিজের কাছে। অধিনায়ক শান্ত নিজের আসল কাজ ব্যাটিংটাই করতে পারছে না। তাওহীদ হৃদয় এবং মাহমুদুল্লাহ ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেও অন্যান্যরা ব্যাট হাতে ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eighteen − 10 =