তেলেগু সুপারস্টার নাগা চৈতন্যের জন্মদিন আজ

নাগা চৈতন্য আক্কিনেনি ২৩ নভেম্বর ১৯৮৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা যিনি তেলুগু সিনেমায় কাজ করেন৷ ২০০৯ সালের চলচ্চিত্র জোশ -এর মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে তার অভিষেক হয়, সিনেমাটি পরিচালনা করেন ভাসু বর্মা এবং প্রযোজনা করেন দিল রাজু ৷ তার প্রথম চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার পূর্বেই তিনি ইন্দিরা প্রোডাকশনস্ এর সাথে তার ২য় চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন, যেটা পরিচালনা করেন গৌতম মেনন৷ ২০১০ সালে মুক্তি পায় তার (চৈতন্য) এবং সামান্থা অভিনীত চলচ্চিত্র ইয়ে মায়া চেসাভে, যার সঙ্গে চৈতন্যর বাবা আক্কিনেনি নাগার্জুনার রোমান্টিক চলচ্চিত্র গীতাঞ্জলির তুলনা চলে৷ চৈতন্যর পরবর্তী মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল সুকুমার পরিচালিত ১০০% লাভ, যেখানে তার সহ-অভিনেত্রী ছিলেন তামান্না৷ সিনেমাটি বক্স অফিসে ভালো সফলতা লাভ করে৷ এই সিনেমার পর শীঘ্রই তার আরও দুটি ছবি যথাক্রমে ধাদা, এবং বেজাওয়াদা মুক্তি পায়, তবে সিনেমা দুটি তেমন সফলতা লাভ করতে পারেনি৷ চৈতন্য “অটোনগর সুরিয়া” সিনেমাটিও আবির্ভূত হন৷ ২০১৬ সালে তিনি দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, প্রথমটি হলো প্রেমাম, যেখানে তার সহ-অভিনেত্রী ছিলেন শ্রুতি হসন এবং দ্বিতীয়টি হলো সাহাসাম স্বাসাগা সাগিপো ৷ দুটি চলচ্চিত্রই সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে নেয়৷ পরবর্তীকালে, ২০১৭ সালে, তিনি রারান্দই ভেদুকা চৌধাম নামের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যেটি এখন পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ উপার্জিত চলচ্চিত্র৷ ২০১৮ সালে, তিনি শৈলজা রেড্ডী আল্লুডু এবং সব্যসাচী নামক দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

চৈতন্য ১৯৮৬ সালের ২৩ নভেম্বর তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার বাবা হলেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও উদ্যোক্তা আক্কিনেনি নাগার্জুনা, যিনি অভিনেতা আক্কিনেনি নাগেশ্বর রাওয়ের পুত্র এবং তার মায়ের নাম লক্ষ্মী ডাগ্গুবাতি, যিনি প্রযোজক ডি. রামানাইডুয়ের কন্যা৷ তার মামা ডাগ্গুবাতি ভেঙ্কটেশ এবং মামাতো ভাই রানা ডাগ্গুবাতি, চাচাতো ভাই সুমন্ত ও সুশান্তও অভিনেতা৷ চৈতন্য যখন ছোট্ট শিশু, তখন তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তারা উভয়ই অন্য ব্যক্তিকে বিয়ে করেন৷ একদিকে নাগার্জুনা বিয়ে করেন প্রাক্তন অভিনেত্রী অমলা আক্কিনেনিকে, অন্যদিকে লক্ষ্মী বিয়ে করেন শরৎ বিজয়রাঘবনকে, যিনি পেশায় একজন কর্পোরেট কার্যনির্বাহী৷ চৈতন্যর বাবা এবং সৎ মায়ের সংসারে তার একটি অর্ধ-ভ্রাতা রয়েছে, তার নাম অখিল আক্কিনেনি।

চৈতন্যর বেড়ে ওঠা চেন্নাইতে, যেখানে তিনি ১৮ বছর বসবাস করেছিলেন৷ তিনি তার স্কুল ব্যান্ডে কীবোর্ড ও বেইস গিটার বাজাতেন এবং কীবোর্ড বিষয়ে পড়াশোনা করতে ট্রিনিটি কলেজ লন্ডন এ গিয়েছিলেন৷ চেন্নাইয়ের বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে চৈতন্য বি. কম ডিগ্রী গ্রহণের জন্য হায়দ্রাবাদে ফিরে আসেন৷ অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার ইচ্ছা তিনি অনেকদিন ধরেই তার অন্তরে লালন করে রেখেছিলেন৷ ২য় বর্ষে পড়াকালীন সময়ে তিনি তার মনের আকাঙ্ক্ষা তার বাবা নাগার্জুনার কাছে প্রকাশ করেন৷ মুম্বাইতে তিনি অভিনয়ের উপর তিন মাসের কোর্স করেন এবং অভিনয় ও মার্শাল আর্টসে অধিকতর প্রশিক্ষণ লাভের জন্য লস্ অ্যাঞ্জেলস্ এ যান৷ এছাড়াও চলচ্চিত্রে অভিষেক হওয়ার পূর্বে প্রায় তিন বছর ধরে তিনি তেলুগু ভাষার শব্দ ও রচনাশৈলীর উপর দক্ষতা ও উৎকর্ষ লাভের জন্য চেষ্টা করেন৷

নভেম্বর ২০১৫ থেকে শুরু হওয়া প্রণয়ের সম্পর্কের পর ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে চৈতন্য এবং অভিনেত্রী সামান্থার বাগদান সম্পন্ন হয়৷ ঐবছরই গোয়ায় চৈতন্য এবং সামান্থা বিবাহের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হন৷ ৬ অক্টোবর তারিখে তারা হিন্দুধর্ম মতে এবং পরবর্তী দিন অর্থাৎ ৭ অক্টোবর তারিখে খ্রিস্টান ধর্মমতে বিয়ে করেন৷ উভয় অনুষ্ঠানই পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয়, সেখানে শুধুমাত্র তাদের কাছের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন৷ ২রা অক্টোবর, ২০২১-এ এই দম্পতির বিচ্ছেদ ঘটে। চৈতন্য এবং সামান্থাকে একত্রে তিনটি চলচ্চিত্রে দেখা গিয়েছে এবং সেগুলো বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার ঘোষিত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five × 5 =