থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা বরখাস্ত

ক্যাম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের ফাঁস হওয়া একটি অডিওকে কেন্দ্র করে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত দেশটির প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে বরখাস্ত করেছেন।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে আনা নৈতিক লঙ্ঘনের অভিযোগ গ্রহণ করে তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।

নয় সদস্যের বেঞ্চের মধ্যে সাতজন বিচারক বরখাস্তের পক্ষে মত দেন। প্রধানমন্ত্রীকে নিজের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

এ রায়ের পর সাংবাদিকদের পেতংতার্ন বলেন, ‘আদালতের রায় আমি মেনে নিয়েছি। আমি সব সময় আমার দেশের জন্য সর্বোত্তম কাজ করার চেষ্টা করেছি।’

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ ঘিরে পেতংতার্নের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। মে মাসে সীমান্তে সংঘর্ষে এক কম্বোডীয় সেনার মৃত্যুর ফোনালাপে তাকে প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সিনেট প্রেসিডেন্ট হুন সেনের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা করতে শোনা যায়। ওই ফোনালাপ ঘিরে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং রাজধানী ব্যাংককে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নামে।

ফাঁস হওয়া কথোপকথনে পেতংতার্নকে থাইল্যান্ডের একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে সমালোচনা করতে শোনা যায়, যার কারণে তার দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার বিরুদ্ধে আরেকটি নৈতিক লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করছে জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশন, যা থেকেও তাকে অপসারণের ঝুঁকি রয়েছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই গতকালই রাজা মহা বজিরালংকর্ণ পেতংতার্নের মন্ত্রিসভায় নতুন রদবদল অনুমোদন করেছেন। ফাঁস হওয়া ফোনালাপের পর ক্ষমতাসীন জোট থেকে একটি বড় দল সরে গেলে এই পরিবর্তন আনা হয়।

নতুন মন্ত্রিসভায় পেতংতার্ন নিজেই সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ায় তার সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এর আগে গত বছর একই ধরনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনকে বরখাস্ত করেছিল এই আদালত। থাইল্যান্ডের রাজতান্ত্রিক অভিজাত মহলের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত সাংবিধানিক আদালত ও নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিরোধীদের দমন করার অভিযোগ রয়েছে।

সাম্প্রতিক দশকগুলিতে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে সহযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা উভয়েরই জটিল সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ৫০৮ মাইল (৮১৭ কিলোমিটার) স্থল সীমান্ত রয়েছে – যা মূলত ফরাসিরা কম্বোডিয়া দখল করার সময় মানচিত্র তৈরি করেছিল। যেখানে মাঝে মাঝে দু দেশ সামরিক সংঘর্ষের সম্মুখীন হয়েছে এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

one × 2 =