সবার কাছে তিনি শাকিব খান হলেও, ওই নারীর কাছে তিনি কেবলই ছিলেন মাসুদ রানা। সাধারণ মাসুদ রানা যখন শাকিব খান হয়ে উঠেনি তখনই রাত্রি নামের সেই তরুণীর প্রথম ভালোবাসা ছিলেন তিনি। তারকা খ্যাতির শীর্ষে ওঠার যাত্রায় একের পর এক শাকিব পিছুটান কেটেছেন চোখবুজে। অদৃশ্য রক্তপাতহীন এই কর্তনের বলি হয়েছেন রাত্রি। সম্পর্কে শাকিব খানের প্রথম স্ত্রী বা বলা যায় তার প্রথম সন্তানের মা।
সম্প্রতি একটি অনলাইনের অনুসন্ধানে উঠে আসে এফডিসির এই ওপেন সিক্রেট বিষয়টি। প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে অনেক সাংবাদিকের কাছেও এটা জানা ঘটনা। নিকট অতীত না হওয়ার কারণেই হয়তো কেউ আর এটার চর্চা করেন না। কারো সঙ্গে আলাপ করতে গেলেই কেউ রহস্যজনক হাসি হাসেন অথবা হেসেই উড়িয়ে দেন।
শাকিব-রাত্রি দম্পতির প্রথম সন্তানের নাম রাহুল। ২য় ও ৩য় স্ত্রীর দুই সন্তান জয় ও বীরের কথা স্বীকৃতি দিলেও তার প্রথম সন্তান রাহুলকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। এ নিয়ে রাত্রি কিছু না বললে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন।
স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে তিনি কেন তার অধিকার আদায়ের জন্য সামনে আসেননি। শান্ত কণ্ঠে তিনি বেশ অনেক দিন আগে জানিয়েছিলেন, যে ভালোবাসার কারণে এতোগুলো বছর চুপ থেকেছি, এখন আর মুখ খুলে কী লাভ?
শাকিব যদি কোনোদিন বুঝতে পারে, ফিরে আসে তাহলে আমার আর কিছু চাই না। এর বাইরে মুখ খুলিনি কারণ আমি চাইনি আমার হিরোর (শাকিব খানের) কোনো ক্ষতি হোক। তিনি আরও বলেছিলেন, আমি আর আমার আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। আমি জোর গলায় বলতে চাই শাকিব খানের প্রথম সন্তানের মা আমি। আমার রাহুলের বাবা শাকিবই। এটা শাকিবও অস্বীকার করতে পারবে না। সবকিছু ছাপিয়ে শাকিব খান কি তার প্রথম সন্তানকে স্বীকৃতি দিবনে? নাকি অনাদর-অবহেলায় তার দিন কাটবে? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
এদিকে শাকিব খানের প্রথম সন্তান রাহুল খান নিয়ে ফেসবুকে সাংবাদিক ওমর ফারুক এক স্ট্যাটাসে বলেন- ২০০৮/২০০৯ এর দিকে দৈনিক ভোরের কাগজের বিনোদন পাতায় একটি ছবি প্রকাশ পায়। চিত্রনায়িকা রাত্রি আর শাকিব খানের বিয়ের ছবি। ভোরের কাগজের বিনোদন সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিপ্লব ভাই এই ছবিটি অনেক কষ্টে জোগাড় করেন। আমিও কাজ করি ভোরের কাগজে তখন। তখন চাইলেই ছবি ইনবক্সে চলে আসতো না, ক্যামেরায় তোলা ছবি স্ক্যানিং করে পত্রিকার পাতায় ছাপাতে হতো। আর একটা ছবি জোগাড় করতে খবর হয়ে যেত, পকেটের টাকা খরচ হতো। ছবিটি প্রকাশের পর তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন শাকিব খান। এফডিসিতে ভোরের কাগজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। জাহাঙ্গীর বিপ্লব এবং ওমর ফারুক কে এফডিসিতে পাইলেই নাকি মারবেন শাকিব খান। খবর শুনে বিপ্লব ভাইয়ের মাথা গরম, আমি জুনিয়র তবুও উত্তেজনা কম না! বিপ্লব ভাইকে বললাম চলেন এখনই এফডিসিতে যাবো। দেখি শাকিব কোন বা*ল ছিড়ে! প্রয়াত সাংবাদিক আওলাদ ভাই তখন এফডিসিতে যা বলেন তাই হয়। আওলাদ ভাই শাকিবকে ধমকালেন, কেন এমন কথা বললো আর আমাদের বোঝালেন ছেলেটার ক্যারিয়ার আছে চেপে যা। আমরা চেপে গেলাম, শাকিব খানও চেপে গেলো।
প্রশ্ন হলো, শাকিব খান তাহলে প্রথম সন্তান রাহুল খান এবং রাত্রির সাথে কেনো অবিচার করছেন? জয় এবং বীর স্বীকৃতি পেলে রাহুল কি দোষ করলো?বিনোদন সাংবাদিকগণ এই বিষয়টা নিয়ে এখন আওয়াজ তুলেন। একজন অসহায় স্ত্রীকে তার স্বামীর অধিকার আর বাবার আদর থেকে বঞ্চিত এক সন্তাককে বাবার অধিকার পেতে সহায়তা করতে পারেন।