ঢাকা, বাংলাদেশ, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪: ব্র্যাক ব্যাংক তাদের নন-এক্সিউটিভ সহকর্মীদের জন্য কর্মক্ষেত্রে সঠিক দৃষ্টিশক্তি নিশ্চিত করতে তিন দিনব্যাপী চক্ষু-পরীক্ষা (আই-স্ক্রিনিং) কর্মসূচির আয়োজন করেছে। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে এই আই-স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
কর্পোরেট খাতে এমন উদ্যোগ কর্মক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তি বিকাশের সংস্কৃতি লালনে ব্র্যাক ব্যাংকের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
উদ্যোগটি স্বাস্থ্য খাতে ব্যাংকের ফ্ল্যাগশিপ কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) উদ্যোগ ‘অপরাজেয় আমি’-এর অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
আই-স্ক্রিনিং করা ব্যাংকটির প্রায় ৪৯% নন-এক্সিকিউটিভ সহকর্মী– গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী, অফিস সহকারী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীরই চশমার প্রয়োজন রয়েছে।
চক্ষুসেবার লক্ষ্যে আয়োজিত এই কর্মসূচি নিয়ে ব্যাংকটির নন-এক্সিউকিউটিভ সহকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। পরীক্ষা শেষে অভিজ্ঞ অপ্টোমেট্রিস্টের পরামর্শে বিনামূল্যে চশমাও দেওয়া হয়।
অক্টোবরে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এই আই-স্ক্রিনিং কার্যক্রমের আয়োজন করে। ব্যাংকটির এই উদ্যোগে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান ভিশনস্প্রিং, যারা সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় চশমার ব্যবস্থা করে থাকে।
ব্যাংকের মোট ৩৩৫ জন সহকর্মীর আই-স্ক্রিনিং করা হয়, যাদের মধ্যে অস্পষ্ট দৃষ্টিশক্তি এবং মাথাব্যথাজনিত সমস্যার কারণে ১২৭ জনের জীবনে প্রথমবারের মতো চশমা ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েছে। চোখের সমস্যা নিয়ে তাঁরা আগে কখনো চিকিৎসা নেননি। তাই দৃষ্টিশক্তির সমাধানকল্পে তাঁদের সবাইকে তাৎক্ষণিকভাবে চশমা প্রদান করা হয়।
অন্যদিকে, ১৬৫ জন সহকর্মীর কোনোপ্রকার চশমার প্রয়োজন পড়েনি। তবে তিনজন সহকর্মীকে গুরুতর চোখের সমস্যা এড়ানোর লক্ষ্যে আরও উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমাদের নন-এক্সিকিউটিভ সহকর্মীরা আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁদের চিকিৎসা সেবায় বিনিয়োগ করতে পেরে আমরা সত্যিই অনেক আনন্দিত এবং গর্বিত।”
তিনি আরও বলেন, “তাঁদের চোখের সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে আমরা শুধু তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নই করছি না, বরং তাঁদের আত্মবিশ্বাস এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতেও অবদান রাখছি। এই উদ্যোগটি আমাদের ব্যাংকের উন্নয়নে অবদান রাখা মানুষদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।”
স্বাস্থ্যসেবায় নিবেদিত এই বিশেষ সিএসআর উদ্যোগের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংকের লক্ষ্য হলো, ২০২৪ সালে ব্যাংকটির কর্পোরেট এবং ইমার্জিং কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের কারখানায় কর্মরত ১৫,০০০ শ্রমিকদের চোখ পরীক্ষা করা এবং সঠিক দৃষ্টিশক্তির সংস্কৃতিতে উৎসাহিত করা। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ব্যাংকটি ইতিমধ্যেই নিজেদের ইমার্জিং কর্পোরেট ক্লায়েন্ট মাস্টার ফিশিং নেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৪১০ জন কর্মীর চক্ষু-পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, যাদের মধ্যে ২৯৬ জনকে বিনামূল্যে চশমা প্রদান করা হয়েছে।
‘ব্র্যাক ব্যাংক অপরাজেয় আমি’ উদ্যোগটি সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিতে এবং ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ নীতির মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নত সমাজ গঠনে ব্যাংকটির উদ্যোগ।
একটি মূল্যবোধ-চালিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকের সিএসআর উদ্যোগগুলোকে এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে তা সমাজের আর্থিক এবং কুসংস্কারের বাধা ভেঙে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে। এভাবে সবাইকে নিজেদের সম্ভাবনার সঠিক বিকাশের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ব্র্যাক ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।