নীরবেই চলে গেলো আইসিসি ট্রফি জয়ের দিনটি

সালেক সুফী

গতকাল ১৩ এপ্রিল ছিল আন্তজাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের মাইলফলক অর্জনের দিন। ১৯৯৭ সালের এই দিনটিতে আকরাম খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কুয়ালালামপুর কিলাত মাঠে শ্বাসরোধ করা খেলায় কেনিয়াকে পরাজিত করে আইসিসি ক্রিকেট শিরোপা জয় করে। খুলে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের সিংহ দুয়ার। গোটা জাতি আনন্দ জোয়ারে ভেসে যায় সেই মুহূর্তে যখন শান্ত রফিকের শেষ উইকেট জুটি শেষ রানটি নিয়ে পরম কাঙ্খিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়। ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ অর্জন করে ওডিআই স্টেটাস। এরপর আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ওই সময় তুখোড় পাকিস্তান দলকে পরাজিত করে অর্জিত হয় টেস্ট স্টেটাস। সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে এগিয়ে যাওয়া। স্বাভাবিক কারণে যে কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডের উচিত মাইল ফলক দিন গুলো যথাযথ ভাবে স্মরণ করা। বিজয়ী বীরদের প্রজন্মের কাছে পরিচিত করিয়ে দেয়া। অথচ কূপমণ্ডূকতার কারণে দিনগুলিতে বিসিবি নীরব থাকে। সময় এসেছে বিসিবিকে প্রশ্ন করার কিসের এতো সংখ্যা, কিসের এতো ভয়।

সবাই বলবেন বাংলাদেশ স্বাধীন ক্রীড়াঙ্গনে যা কিছু অর্জন করেছে তার সিংহভাগ জুড়ে আছে ক্রিকেট। বহুধা বিভক্ত বাংলাদেশ নানা মুনির নানা মত। ক্রিকেট ছাড়া এমন কিছুই পাবেন না যা গোটা জাতির আবাল বৃদ্ধ বনিতা সমান ভাবে পছন্দ করে। কিন্তু আমাদের বর্তমান বিসিবির ব্যার্থতার কারণে বর্তমান প্রজন্ম ক্রিকেটের সূচনার কথা জানে না। সূচনার সংগ্রামী ক্রিকেটের, ক্রিকেট সংগঠক, ক্রিকেট পরিবার সম্পর্কে না জেনে তর্কে মেতে উঠে। অথচ সেই দিনের ক্রিকেট বীরদের অনেকেই ক্রিকেট বিশ্বে নানা ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। খোদ বিসিবিতেই আছেন বেশ কয়েকজন।

আমার মনে আছেই দিনটিতে আমায় অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি ম্যাকোনেল ডাওয়েল নির্মাণাধীন আশুগঞ্জ বাখরাবাদ গ্যাস তিতাস নদী আধুনিক পদ্ধতিতে পাড় করার কাজে ব্যাস্ত ছিলাম। সবার কানে ছিল রেডিও। ধারাবিবরণী শুনছিলাম। মাঠের বৃষ্টির কথা ভেবে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলাম। শুনছিলাম সবাই মিলে জল নিষ্কাশন করার প্রানপন চেষ্টা হচ্ছে। শুরু হলো খেলা টানটান উত্তেজনা। শেষ ওভারে বাংলাদেশ জিতে নেয়ায় কি উল্লাস।  আমাদের স্তাহে পেট্রোবাংলা পরিচালক টিআইএসেন খান লোধি ছিলেন। বর্তমান জিটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক আইনুল কবির, অবসরে থাকা মুহিত, কানাডায় প্রবাসী আসাদ, মাহতাব। খুশির জোয়ারে ভেসে হাতের রেডিও (অতি প্রিয়) তিতাস নদীতে ছুঁড়ে ফেলেছিলাম। আমাকে অস্ট্রেলিয়ান বন্ধু মার্ক বারোস জড়িয়ে ধরেছিলো। জানতাম কঠিন কাজটি আজ হয়ে যাবে। ঘন্টা খানিকের প্রচেষ্টায় তিতাস যদি খনন হয়ে গেলো। ব্রহ্মণবাড়িয়ার রসমালাই, ছানামুখী দিয়ে বিজয় উৎসব করলাম। আমি আজ আমার জন্ম দিনে সেই বিজয়ের বিজয়ী বীরদের স্মরণ করছি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × two =