ডিসির নতুন ইউনিভার্সের আগে পুরনো ধারায়ও ছিল কিছু আশাবাদ। ডিসির অন্যতম আশার জায়গা ছিল শাজাম। ডেভিড স্যান্ডবার্গ পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে ১৭ মার্চ। অন্য কোনো বড় সিনেমা না থাকায় শাজামই ছিল এ সপ্তাহের সবেধন নীলমণি। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই হতাশ করেছে শাজাম। প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি সে। উত্তর আমেরিকার ৪ হাজার ৭১টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়ে সিনেমাটি আয় করেছে মাত্র তিন কোটি ডলার। ধারণা করা হচ্ছে, সিনেমাটি সপ্তাহ শেষ করবে সাত কোটি ডলার নিয়ে।
কমিক থেকে শাজামের প্রথম সিনেমাটি নির্মিত হয় ২০১৯ সালে। ওপেনিংয়ে এটি আয় করেছিল ৫ দশমিক ৩৫ কোটি ডলার এবং আমেরিকায় মোট আয় করেছিল ১৪ কোটি ডলার। আমেরিকার বাইরে সিনেমাটি আয় করেছিল ৩৬ দশমিক ৬ কোটি ডলার। জ্যাকারি লেভি অভিনীত শাজাম নিয়ে দর্শকের ভালোই আগ্রহ আছে। সেখান থেকে ধারণা হয়েছিল, সিনেমাটি যথেষ্ট ব্যবসা করতে পারবে। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। অতিমারীর সময়কার অন্যান্য সিনেমা বাদেও শাজামের শুরুটা খুবই খারাপ। এর আগে ওয়ান্ডার ওম্যান ১৯৮৪ ওপেনিংয়ে আয় করেছিল ১ দশমিক ৬৭ কোটি ডলার এবং সুইসাইড স্কোয়াডের ওপেনিং আয় ছিল ২ দশমিক ৬ কোটি ডলার। সিনেমা দুটি যথাক্রমে ২০২০ সালের ডিসেম্বর ও ২০২১ সালের জুলাইয়ে মুক্তি পেয়েছিল।
শাজাম: ফিউরি অব দ্য গডসের এ ভরাডুবির কারণ কী? বক্স অফিস বিশ্লেষকরা নানা কারণ দেখতে পাচ্ছেন। বক্স অফিস প্রোর চিফ অ্যানালিস্ট শন রবিন্স বলেন, ‘শুরুটা খুবই ধীর। এছাড়া আর কোনো ভালো সম্ভাবনা ছিল না। কমিক থেকে নির্মিত সিনেমার ক্ষেত্রে ব্যবসার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। আগের মতো আয় করা এখন আর সম্ভব নয়।’
সিনেমা মুক্তির পর সাধারণত রিভিউ থেকে এর ভালো-মন্দ নির্ধারিত হয়। কিন্তু শাজামের ক্ষেত্রে সেটাও হয়নি। রিভিউ খুব একটা ভালোও আসেনি। সিনেমাস্কোর শাজামকে ‘বি প্লাস’ রেটিং দিয়েছে। রটেন টমেটোজে এর রেটিং ৫৩ শতাংশ। আগের সিনেমার তুলনায় পিছিয়ে আছে ফিউরি অব দ্য গডস। শুরুতে এর প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। কিন্তু সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিনেমার রেটিং রিভিউ ও ব্যবসা কমতে শুরু করে।
শাজামের ভরাডু্বির আরেকটা কারণও চিহ্নিত করেছে ভ্যারাইটি। ওয়ার্নার ব্রোসের নতুন পরিকল্পনার কারণে পিছিয়ে গেছে শাজাম। ডিসি তাদের পুরো পরিকল্পনাই বদলে ফেলেছে। এ কারণে তারা নতুন পরিকল্পনায় সময় দিচ্ছে। তাই শাজামের মতো সিনেমার প্রতি কাজ করেছে এক ধরনের অবহেলা। খেয়াল করলে দেখা যাবে, সিনেমাটি মুক্তির আগে যথেষ্ট প্রচারণারও অভাব ছিল। এটি তারাই দেখতে গেছেন, যারা ডিসি স্টুডিও, ডিসি কমিক ও শাজামের ভক্ত। নতুন দর্শক সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি এ সিনেমার ক্ষেত্রে, যার অনেকখানি দায় ওয়ার্নার ব্রোস ও ডিসি স্টুডিওর ওপরও বর্তায়।
অনেক ক্ষেত্রে বলা হচ্ছিল, সুপারহিরো সিনেমার প্রতি দর্শকদের এক ধরনের ক্লান্তি এসে পড়েছে। কিন্তু অ্যান্ট ম্যানের বরাত দিয়ে রবিন্স বলতে চান, সে রকম কিছু এখনো হয়নি। অ্যান্ট ম্যানের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। এমনকি ডিসির নতুন ইউনিভার্স নিয়েও দর্শকের তুমুল আগ্রহ দেখা গেছে। তার মানে সুপার হিরো নিয়ে দর্শকের আগ্রহ ঠিকই আছে। শাজাম মূলত দুর্ভাগ্যের শিকার। ডিসি ও ওয়ার্নার ব্রোসের আন্তরিকতার অভাবেই প্রত্যাশা পূরণে পিছিয়ে গেছে সিনেমাটি।