প্লেয়িং কন্ডিশনে নতুন নিয়ম আইসিসির

ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বাধীন পুরুষ ক্রিকেট কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করেছে আইসিসি প্রধান নির্বাহীদের কমিটি (সিইসি)। তাদের অনুমোদনের পর প্লেয়িং কন্ডিশনে বেশ কিছু পরিবর্তনের ঘোষণা করেছে ক্রিকেটের প্রধান সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতি দিয়ে পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে আইসিসি। এ বছরের পহেলা অক্টোবর থেকে পরিবর্তন হওয়া নতুন নিয়মগুলো কার্যকর হবে।

ক্যাচ আউটে নতুন ব্যাটারের অবস্থান: নতুন নিয়মে কোন ব্যাটার ক্যাচ আউট হলে, ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটার স্ট্রাইকেই খেলবেন। এতদিন এক্ষেত্রে নিয়ম ছিলো, ব্যাটার ক্যাচ আউট হলে ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটার যদি নিজেদের ক্রস করে ফেলেন, তা হলে নতুন ব্যাটার নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকেন। নতুন নিয়মে এটি আর থাকছে না।

বলে লালার ব্যবহারে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত: করোনাভাইরাস শুরুর পর থেকে বলে লালা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিলো আইসিসি। গত দু’বছর ধরে চলা সেই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে তারা।  আগের নিয়মে বলে লালা লাগালে প্রথমবার দলকে সতর্ক করা হতো। দ্বিতীয়বার করলে দেওয়া হতো শাস্তি।

নতুন ব্যাটারের ব্যাটিং শুরুর নতুন সময়: টেস্ট ও ওয়ানডে ফরম্যাটে দুই মিনিটের মধ্যে নতুন ব্যাটারকে প্রথম বল খেলতে হবে। চলমান নিয়মে ওয়ানডে ও টেস্টে ব্যাটাররা তিন মিনিট সময় পেতেন। আর টি-টোয়েন্টিতে ৯০ সেকেন্ডই  অব্যাহত থাকছে।

পিচেই খেলতে হবে ব্যাটার ও বোলারকে: যেকোনো ডেলিভারি খেলার জন্য ব্যাটারের ব্যাট বা শরীরের যেকোনো অংশ পিচের ভেতরেই থাকতে হবে। না থাকলে ডেড বল হিসেবে গণ্য হবে। আবার বোলারের কোনো ডেলিভারি যদি ব্যাটারকে পিচের বাইরে নিয়ে যায়, তবে সেটি নো বল ডাকা হবে।

বোলিং শুরুর পর ফিল্ডিং পরিবর্তন করা যাবে না: বোলার বোলিংয়ের জন্য দৌড় শুরু করার পর ফিল্ডিং দল নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারবে না। নতুন নিয়মে এটি করলে ব্যাটিং দলকে পেনাল্টি হিসেবে পাঁচ রান দেয়া হবে। পাশাপাশি ঐ ডেলিভারিটি ডেড বল ঘোষণা করা হবে।

নন স্ট্রাইকার ব্যাটারকে মানকাডিং আউটের বৈধতা: এতোদিন ধরে মানকাডিং আউটকে স্পিরিট পরিপন্থী বিবেচনা করা হতো। তবে নতুন নিয়মে মানকাডিং রান আউট হিসেবেই গণ্য হবে।

বল  ডেলিভারির আগেই স্ট্রাইকারকে রান আউটের চেষ্টা বাতিল: চলমান নিয়মে, কোন বোলার বোলিং করার আগেই যদি দেখে, ব্যাটার পপিং ক্রিজ ছেড়ে ডাউন দ্য উইকেটে এসেছে, তখন থ্রো করে স্ট্রাকের ব্যাটারকে রান আউটের সুযোগ আছে। তবে নতুন নিয়মে এটি করতে পারবে না। তবে এই ডেলিভারিটি ডেড বল হিসেবে ঘোষণা করা হবে।

অন্যান্য বড় সিদ্ধান্ত: চলমান বছরের জানুয়ারি থেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্লো ওভার রেটের কারণে ম্যাচের মধ্যেই পেনাল্টি দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইনিংস শেষ করতে না পারলে বৃত্তের বাইরে একজন কম ফিল্ডার নিয়ে খেলতে হয় ফিল্ডিং দলকে। চলতি বিশ্বকাপ সুপার লিগ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটেও এটি কার্যকর করা হবে।

এছাড়াও নতুন নিয়মে ম্যাচের দু’দল যদি সম্মতি জ্ঞাপন করে, তবে যে কোনও পুরুষ-নারীদের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হাইব্রিড পিচ ব্যবহার করা যাবে। বর্তমানে শুধুমাত্র নারীদের টি-টোয়েন্টিতে হাইব্রিড পিচ ব্যবহার করা হয়।

নতুন নিয়মের জন্য আইসিসি ক্রিকেট কমিটির সদস্যরা হলেন- চেয়ারম্যান সৌরভ গাঙ্গুলী, পর্যবেক্ষক রমিজ রাজা, সাবেক খেলোয়াড় মাহেলা জয়বর্ধনে এবং রজার হার্পার, বর্তমান খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি ড্যানিয়েল ভেট্টোরি এবং ভিভিএস লক্ষ্মণ, কোচদের প্রতিনিধি গ্যারি স্টিড, আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধি জয় শাহ, আম্পায়াদের প্রতিনিধি জো উইলসন, সহযোগী দেশগুলোর প্রতিনিধি কাইল কোয়েৎজার, মিডিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে শন পোলক, সাবেক কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহি হিসেবে গ্রেগ বার্কলি ও জিওফ অ্যালার্ডিস, কমিটির সেক্রেটারি ক্লাইভ হিক এবং পরিসংখ্যানবিদ ডেভিড কেনডিক্স।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 × five =