ববিতাকে ঘিরে চলচ্চিত্র উৎসব

নায়িকা তাকেই বলে, যার হাসিতে দুলে উঠে রূপালি পর্দা। তেমনই এক চিরসবুজ নায়িকা ফরিদা আক্তার ববিতা। যার নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অনিন্দ্য সৌন্দর্যে ভরপুর একটি মুখচ্ছবি। ঠোঁটের কোনায় লেগে আছে ভুবন ভোলানো হাসি। আজকাল পর্দায় অনিয়মিত হলেও দর্শকের কাছে আগের মতোই জনপ্রিয় ববিতা। দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন যেকজন অভিনেত্রী আছেন তারমধ্যে একজন তিনি। সম্প্রতি তাকে ঘিরে বিদেশের মাটিতে হয়ে গেল চলচ্চিত্র উৎসব। ‘ডালাস বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’ নামের এ আসর বসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস সিটিতে। এ উৎসবে সম্মাননা প্রদান করা হয় ববিতাকে। ডালাসের অ্যাঞ্জেলিকা ফিল্ম সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই উৎসবটিতে প্রদর্শিত হয় ববিতা অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলো। আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অশিন সংকেত’ সিনেমাটি ছিল তালিকায়। ৬ আগস্ট পর্দা নামে আসরের। ‘ডালাস বাংলা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম আসর ছিল এটি। কিংবদন্তি এ নায়িকাকে ঘিরে সাজানো হয়েছিল এবারের উৎসব।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে অভিনেত্রী ববিতাকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে এই কিংবদন্তি নায়িকাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় এবং তার সম্মানে ৫ আগস্টকে ‘ববিতা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ৪ আগস্ট টেক্সাসের রিচার্ডসন সিটির মেয়র বব ডুব ‘ববিতা দিবস’ ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ববিতার হাতে সম্মাননা তুলে দেন। আগামী বছর থেকে ডালাস শহরে ৫ আগস্ট ‘ববিতা দিবস’ উদযাপিত হবে।

এদিকে এ চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়ে ববিতাও বেশ আনন্দিত। তার ভাষায়, ‘একটা সময় আমাদের দেশের গুণী নির্মাতারা খুব ভালো কিছু সিনেমা নির্মাণ করতেন। দেশ স্বাধীনের আগে সেসব গুণী নির্মাতাদের ভালো সিনেমা আন্তর্জাতিক উৎসেব স্থান পেত না। দেশ স্বাধীনের পর আন্তর্জাতিক উৎসবে আমাদের দেশের সিনেমা প্রদর্শনের সুযোগ পেল। একসময় সত্যজিৎ রায়ের অশনি সংকেত সিনেমায় আমার অভিনয়ের সুযোগ এল। সিনেমাটি সে সময়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমাদৃত হয়েছিল। এ সিনেমা নিয়ে বিশ্বের চলচ্চিত্র অঙ্গনে আমি প্রতিনিধিত্ব করলাম। সবাইকে অবহিত করেছিলাম আমি বাংলাদেশের মেয়ে। আজ শুধু আমাকে ঘিরেই এ ডালাস বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব হতে যাচ্ছে। আবার সেখানে মেয়র আমার হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন। এ সম্মান আমার একার নয়, এ সম্মান এ প্রাপ্তি আমার দেশের, আমার পরিবারের।’

পদ্মফুলের থিমে রাজ্যের জন্মদিন

গত ১০ আগস্ট ছিল পরীমণি ও শরিফুল রাজের সন্তান রাজ্যের প্রথম জন্মদিন। প্রতিমাসের ১০ তারিখ বাসায় কেক কেটে ছেলের জন্মদিন পালন করলেও এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আসর বসেছিল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে। বিশেষ দিনটি উদযাপনে কোনো কার্পণ্য করেননি অভিনেত্রী। রঙিন করে তুলেছিলেন ছেলের জন্মদিন। রাত সাড়ে নয়টায় ছেলেকে নিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হন পরীমণি। রাজ্যের আরেক নাম পদ্ম। তাই ছেলের প্রথম জন্মদিন অভিনেত্রী সাজিয়ে তুলেছিলেন পদ্ম ফুলের আবহে। রাজ্যকে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে এসেছিলেন রূপালি পর্দার বড় বড় তারকা।

তবে ফুটফুটে রাজ্যকে কেউ খালি উইশ করেননি। সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন কিছু না কিছু উপহার। ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাস নিয়ে এসেছিলেন সোনার চেইন। নিজ হাতে সেটি পরিয়ে দিয়েছেন পরীর ছেলের গলায়। তারকাদের পাশাপাশি পরীমণির আত্মীয়-স্বজনও উপস্থিত ছিলেন জমকালো এই আয়োজনে। এদিকে রাজ্যের জন্মদিনে নেটিজেনদের পাখির চোখ ছিল রাজের দিকে। অনেকেই ভেবেছিলেন সন্তানের জন্মদিনে নিশ্চয়ই ছুটে আসবেন শরিফুল রাজ। তবে সে আয়োজনে কোথাও দেখা যায়নি তাকে। অবশ্য পরীমণিও চাননি রাজ ছেলের জন্মদিনে যান। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘ছেলের জন্মদিনের আয়োজনের জন্য বাবা হিসেবে একটাবার ফোন করে পরামর্শ দিতে পারত, করল না। দেশের বাইরে যাওয়ার পর আমিই নিজ থেকেই তাকে কয়েকবার ফোন করেছি। কিন্তু সে কোনো কল দেয়নি। শুনেছি তার স্মার্টফোনটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু তার আরেকটি ফোনও আছে। সেই নম্বরেও ফোন করেছি, ধরেনি। ফিরতি ফোনও করেনি। আর এখন আমি চাই না, রাজ আমার ছেলের জন্মদিনে আসুক।’

তবে জন্মদিনে না গেলেও উপহার ঠিকই দিয়ে এসেছেন রাজ। দীর্ঘ একমাস কলকাতাবাসের পর দেশে ফিরেই গিয়েছিলেন পরীমণির বাসায়। নিজ হাতে ছেলেকে জন্মদিনের উপহার দিয়ে ফিরে আসেন তিনি। বাবার দেওয়া জুতা পরেই জন্মদিনের আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিল ছোট্ট রাজ্য। ছেলের জন্মদিনের আয়োজন কানায় কানায় রঙিন করতে মোটা টাকা খরচ করতে হয়েছে পরীকে। মোট ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। পরীমণি নিজেই একটি সংবাদমাধ্যমে দিয়েছেন এ তথ্য। সেইসঙ্গে এ অভিনেত্রী জানান, এই টাকা জোগাড় করতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। প্রতি মাসে একটু একটু করে এই টাকা জমিয়েছিলেন তিনি।

রজনীকান্তের সিনেমা মুক্তি উপলক্ষ্যে অফিস ছুটি

টানা দুই বছরের বিরতির পর ফের বড় পর্দায় ফিরেছেন দক্ষিণের মহাতারকা রজনীকান্ত। তার এ প্রত্যাবর্তন হয়েছে ‘জেলার’ সিনেমার মাধ্যমে। এদিকে দর্শকও তাকে জানিয়েছেন রাজকীয় অভ্যর্থনা। দক্ষিণিদের প্রিয় থ্যালাইভার নতুন ছবি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে মৌমাছির মতো ভিড় করেছেন দর্শক। বিশ্বব্যপী ৪০০০ হলে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। সকল বয়সী দক্ষিণিদের কাছেই রজনীকান্ত একটি আবেগের নাম। আর তার ছবি মুক্তি মানে তো উৎসব। তেমনটাই হয়েছে। জেলার মুক্তির পর বিষয়টি আবার প্রমাণিত হয়েছে। ১০ আগস্ট মুক্তি পায় জেলার। এ ছবির মুক্তি উপলক্ষ্যে চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন অফিসে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

রজনীকান্তের ছবি দেখতে শুধু যে ভারতবাসী উন্মাদনায় ভেসেছেন তা কিন্তু না। বিভিন্ন দেশে অভিনেতার ভক্ত রয়েছে। তাদের মধ্যেও উন্মাদনাটাও সমান। জেলার মুক্তির পরই এর প্রমাণ দিয়েছেন এক জাপানি দম্পতি। প্রিয় তারকার ছবিটি দেখতে জাপান থেকে ভারতের চেন্নাইয়ে ছুটে এসেছিলেন তারা। প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তবে রজনীকান্তের ছবি নিয়ে উন্মাদনা শুধু দর্শকের মাঝে না। দক্ষিণের তারকারাও হলে ছুটছেন তার ছবিটি দেখতে। অভিনেতার মেয়ের প্রাক্তন স্বামী টলিউড সুপারস্টার ধানুশ থেকে শুরু করে অনেকেই সিনেমা হলে গিয়ে তাদের থ্যালাইভার ছবি দেখছেন। ভোর থেকে লাইন পড়ে যাচ্ছে হলের সামনে। অর্থাৎ ছবিটি না দেখে কেউ বাড়ি ফিরছেন না। যে করেই হোক টিকিট যোগাড় করে জেলার ছবিটি দেখছেন।

এদিকে রজনীকান্তের এক ভক্ত ঘটিয়েছেন আরেক ইতিহাস। টানা ৫৫ দিন হেঁটে দেখা করতে এসেছেন প্রিয় তারকার সঙ্গে। ছবি মুক্তির একদিন আগে হিমালয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণের এই সুপারস্টার। সেখানে গিয়ে প্রথমে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী আশ্রমে গিয়ে গুরুদেবের আশীর্বাদ নেন তিনি। এরপর আধ্যাত্মিক বক্তৃতা শোনার পর নিজেও কথা বলেন সবার উদ্দেশে। সেখানেই থ্যালাইভা দেখা করেন তার ওই ভক্তের সঙ্গে। তরুণ ওই ভক্ত চেন্নাই থেকে প্রায় ৫৫ দিন হেঁটে উত্তরাখণ্ডে আসেন। উদ্দেশ্য একটাই, প্রিয় সুপারস্টারের সাথে দেখা করা। রজনীকান্তও সমাদর করেছেন তার। সেইসঙ্গে করেছেন আর্থিক সাহায্য। কাটিয়েছেন একান্ত সময়। রজনীকান্তের অপেক্ষায় খোলা আকাশের নিচে একটি গাছের নিচে ঘুমিয়ে ছিলেন ভক্ত। হিমালয়ের পাদদেশে হাড় কাঁপানো শীতে গাছের নিচে ভক্তের শুয়ে থাকা মেনে নিতে পারেননি প্রিয় তারকা। তাকে সেখান থেকে এক সন্নাসীর গুহায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান রজনীকান্ত।

জেলার নির্মাণে খরচ হয়ে ২০০ কোটি রুপি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন নেলসন। অ্যাকশন ঘরানার এই ছবিতে রজনীকান্তকে দেখা গেছে পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে। আরও অভিনয় করেছেন জ্যাকি শ্রফ, প্রিয়াঙ্কা মোহন, শিব রাজকুমার, তামান্না ভাটিয়া, রাম্য কৃষ্ণান, যোগী বাবু প্রমুখ।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ফ্রেমবন্দি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

one − one =