বাংলাদেশের সামনে আজ থাকবে রানের হিমালয় শৃঙ্গ

সালেক সুফী

যে উইকেটে সব শ্রীলংকান ব্যাটসম্যান প্রথম ইনিংসে অনায়েসে ব্যাটিং করে ৫৩১ রান করলো, সেখানেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা মহাতঙ্কে বিপর্যস্ত হয়ে ১৭৮ রানে গুটিয়ে ৩৫৩ রানে পিছিয়ে পড়লো। সৌজন্য করে অথবা নিজেদের কৌশলে অতিথি দল ফলোঅন না করানোর বদান্যতা দেখালো। এরপর রূপকথার উপাখ্যান গড়ে বাংলাদেশের অভিষিক্ত তরুণ হাসান মাহমুদ (৪/৫১) খালেদ আহমেদকে (২/২৯) তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে শ্রীলংকা দলকে চেপে ধরে।

১০২ রান তুলতেই ৬ উইকেট খুয়িয়েছে ওরা।  কিন্তু তখন বড় দেরি হয়ে গাছে।  প্রথম ইনিংসে ৩৫৩ রান এগিয়ে থাকার সুবাদে সফরকারী দল এগিয়ে আছে ৪৫৫ রানে।  আজ সকালে দান ছেড়ে দিলেও বাংলাদেশের সামনে রানের হিমালয় চূড়া।  সেই চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছানো বাংলাদেশের ধরা ছোয়ার বাইরে।  অনেকটা নিশ্চিত করেই বলা যায় আরো একটি বিশাল টেস্ট পরাজয় এবং দেশের মাটিতে লজ্জাজনক ধবল ধোলাইয়ের মুখোমুখী বাংলাদেশ।

এবারের দুই টেস্টের তিন ইনিংসে বাংলাদেশ ২০০ রানেই পৌঁছাতে পারেনি। বোলিং সহায়ক উইকেট ভালো বলে যে কোনো ব্যাটসম্যান আউট হতে পারে।  কিন্তু তিন তিনটি ইনিংসে অধিকাংশ বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান দৃষ্টিকটূ ভাবে নিজেদের উইকেট অবলীলায় বিলিয়ে দিয়েছে। সিলেট এবং চগ্রামে মোমিনুল এবং চট্টগ্রামে জাকির ছাড়া একমাত্র নৈশ প্রহরী হিসাবে দায়িত্ব পালন করা তাইজুল ইসলাম ছাড়া কেউ দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করেনি।

এভাবেই যদি খেলতে থাকে বাংলাদেশ তাহলে মাত্রাতিরিক্ত বেতন দিয়ে কোচিং স্টাফ রেখে কি ফায়দা? ২০২৪ বাকি সময়ে বাংলাদেশকে ভারত, পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ খেলতে হবে, দেশে খেলতে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা।  এই ধরনের ব্যাটিং নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হবে বাংলাদেশ। শুধু ব্যাটিং কেন জঘন্য ফিল্ডিং করেছে বাংলাদেশ। কোনো অজুহাত খাটবে না এই ধরনের ছন্নছাড়া খেলার।

দেখলাম বিসিবির তহবিলে বিপুল অর্থ জমা পড়েছে।  বিসিবি বাণিজ্য করার ভাবনায় আছে। দুই দশকের অধিক সময় ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। অথচ আজ পর্যন্ত টেস্ট কালচার গড়ে উঠলো না। দেশের মাটিতে লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেট হয় নিয়ম রক্ষার তাগিদে।  না হয় ভালো উইকেটে খেলা, না উদ্দেশ্য থাকে তরুণ নতুন প্রতিভাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা।  দেখেও শিখেনা শ্রীলংকা বা ভারত দল থেকে। চুক্তিতে থাকা তথাকথিত তারকা খেলোয়াড়দের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এভাবে চলতে থাকলে একসময় বাংলাদেশের টেস্ট স্টেটাস খোয়ানোর মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

তবু চাইবো দ্বিতীয় ইনিংসে যেন যুদ্ধ করে বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

fourteen − four =