বিশ্ব ক্রিকেটের তলানির দুটি দল সংক্ষিপ্ত টেস্ট ম্যাচ খেলেছে

সালেক সুফী: কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাকিস্তানের মুলতানে বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটের তলানিতে থাকা দুটি দল পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিন দিনে সংক্ষিপ্ত সময় টেস্ট ম্যাচ শেষ করেছে। ভাবতে বিস্মিত হতে হয় একসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রচন্ড দাপটে বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করেছে। পাকিস্থানও ছিল শক্তিশালী দল।  স্পিন সহায়ক নিচু বাউন্সের উইকেটে টস জিতে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩০ রান. জবাবে সাজিদ খান আর নাম আলীর ঘূর্ণি বলের তোপে ১৩৭ রানে শেষ হয় পাকিস্তান ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে জামিল ওয়ারিকোনের (৭/৩২) ঘূর্ণি বলে বিপর্যস্ত হয়ে পাকিস্তান করতে পেরেছিলো ১৫৭।  কিন্তু প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান এগিয়ে থাকার সুবাদে পাকিস্তান ২৫০ রান লিড পায়। দ্বিতীয় ইনিংসে সাজিদ (৫/৫০) আর নোমান (৪/৩৭) স্পিন ভেল্কিতে ১২৩ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইনিংস।  ১২৭ রানে জয়ী হয়ে ২ ম্যাচ সিরিজে ১-০ এগিয়ে যায় পাকিস্তান। ৫ দিনে ৪৫০ ওভার খেলার সংস্থান থাকলেও তিন দিনের কম সময়ে ১৭৭.২ ওভারে সমাপ্ত টেস্ট ম্যাচটি পাকিস্তানে খেলা সংক্ষিপ্ততম টেস্ট ম্যাচ।

কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব ক্রিকেটের দুটি শীর্ষ স্থানীয় দল অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত বর্ডার গাভাস্কার সিরিজটি ছিল শ্রেষ্টত্বের লড়াই। রেকর্ড সংখক দর্শক পার্থ, এডিলেড, ব্রিসবেন, মেলবোর্ন এবং সিডনিতে উপস্থিত হয়ে প্রতিদ্বন্তিতাপূর্ণ ক্রিকেট দেখেছে।  সিরিজের ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার অনুকূলে ৩-১ হলেও সিরিজ জুড়েই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। এবারে মুলতানে খেলা টেস্ট ম্যাচটি নিয়ে সেই ধরণের কোন আকর্ষণ না থাকলেও ভিন্ন কারণে রেকর্ড খাতায় নাম লিখলো।

পাকিস্তান যখন প্রথম সারির সব পেসারকে বিশ্রাম দিয়ে তিন স্পিনারকে স্কোয়াড ভুক্ত করে তখনি আঁচ করা গিয়েছিলো ঘূর্ণি উইকেট হবে. তবে শীতের সময়ে উইকেট এতটা স্পিন নিবে আঁচ করা যায় নি। টস জয় করে ব্যাটিং নিয়ে পাকিস্তান কিন্তু শুরুতে জয়ডন সিলসের পেস বোলিংয়ে একসময় ৪/৪৬ বিপদে পড়েছিল। সেই অবস্থায় পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ে ভালো ব্যাটিং করা সাউদ শাকিল ( ৮৪) উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (৭১) সঙ্গী করে ৫ম উইকেট জুটিতে ১৪১ রান জুড়ে দিলে পাকিস্তানের ইনিংস ২৩০ রানে শেষ হয়। জবাবে ব্যাট করতে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নোমান আলী ( ৫/৩৯) আর সাজিদ খানের ( ৪/৬৫) যুগল ঘূর্ণি বলের মোকাবেলায় মাত্র ২৫.২ ওভারে ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায়। ৯৩ রানের লিড পায় পাকিস্তান।

দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার জমেল ওয়ারিকনের (৭/৩২) পাকিস্তান দলের ইনিংস ১৫৭ রানে গুটিয়ে দিলেও কঠিন উইকেটে ২৫০ রানের লিড পে পাকিস্তান। জানাই ছিল এই উইকেটে প্রলয় নৃত্য করবে পাকিস্তান স্পিনাররা।  দ্বিতীয় ইনিংসে সাজিদ খান (৫/৫০) ,আবরার ( ৪/২৭) দাপটে ১২৩ রানে শেষ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  ১২৭ রানে টেস্ট জয় করে পাকিস্তান। ৯ দলের টেস্ট রাংকিংয়ে পাকিস্তানের অবস্থান এখন ৮ম ,তলানিতে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  ভাবতে অবাক লাগে একসময়ে প্রচন্ড প্রতাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সকল ফরম্যাটে বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করতো।  ইমরান, মিয়াঁদাদ, জাহির আব্বাস, ওয়াসিম আকরামদের পাকিস্তান কম দাপুটে ছিল না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 + 12 =