বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আফগানিস্তান রূপকথা চলছে

সালেক সুফী

কাল লখনৌতে হেসে খেলে ৭ উইকেটের ব্যাবধানে অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে আফগানিস্তান নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে।  বিশ্বকাপে আফগান রূপকথা চলছে। ৭ ম্যাচে ৪ জয়ে আফগানিস্তান ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা নিশ্চিত করেছে। শেষ দুটি ম্যাচে কঠিন প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয় পেলে খেলতে পারে এমনকি সেমিফাইনাল। যেভাবে আফগানিস্তান শিরোপাধারী ইংল্যান্ড, ১৯৯২ এবং ১৯৯৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান এবং শ্রীলংকাকে হারিয়েছে, আশা করাই যেতে পারে আফগান জয়ের। মাত্র তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলছে আফগানিস্তান। ইতিমধ্যেই আফঘানিস্থানের আকাশ ছোয়া অর্জন অকুন্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছে ক্রিকেট বোদ্ধা, অনুরাগীদের।

কাল আফগানিস্তানের জয় অনুমিত ছিল। লাখনৌয়ের ধীর ঘূর্ণি উইকেটে চার জন বিশ্বমানের স্পিনার (নবি, রশিদ ,মুজিব , নূর) নিয়ে খেললো আফগানিস্তান। টস জয় করে ১৭৯ রানের মামুলি সংগ্রহ করেছিল নেদারল্যান্ডস। অনায়সে সেই টার্গেট মাত্র ৩১.৩ ওভার খেলে ১৮১/৩ পেরিয়ে যায় আফগানিস্তান। অর্জিত হয় ৭ উইকেট ব্যাবধানে বিশাল জয়। পয়েন্টস টেবিলে আফগানিস্তানের অবস্থান এখন ৫ম, সেরা চার দলের হাত ছোয়া দুরুত্বে।

টস জয় করে ব্যাটিং সীধান্ত নেয়া নেদারল্যান্ডস শুরুতেই ওয়েসলি বারেসির উইকেট হারিয়েছিল। কিন্তু এর পর ম্যাক্স ও.দাউদ (৪২) এবং কলিন আকারমানের (২৯) সাবলীল ব্যাটিং ডাচ ইনিংসকে কক্ষ পথে রেখেছিলো।  কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ রান যোগ করার পর ছন্দ হারালো টিউলিপের দেশ নেদারল্যান্ডস। তুখোড় আফগানিস্তান ফিল্ডিংয়ের কবলে চার চারটি ( ম্যাক্স ও দাউদ, কলিন আকারমান ,সাইব্র্যান্ড এন্জেলব্রেখট এবং স্কট এডওয়ার্ডস) কাটা পড়লো রান আউট হয়ে।  হকচকিয়ে গেলো ডাচ বাহিনী।  মোহাম্মদ নবি ( ৩/২৮) এবং নূর আহমদের ( ২/৩১) আঁটোসাঁটো স্পিন সামাল দেয়া সম্ভব হয় নি বাদ বাকি ব্যাটসম্যানদের।  ১৭৯ রানের মামুলি সংগ্রহে শেষ হয়েছিল ইনিংস।

জবাবে আফগানিস্তান শুরুতে রামানুল্লাহ গুরবাজ ( ১০) এবং ইব্রাহিম জাদরানের (২০) উইকেট হারালেও রাহমাত শাহ ( ৫২) এবং অধিনায়ক (৫৬*) দৃঢ়তার সঙ্গে হাল ধরে আফগানিস্তানকে সহজেই ৭ উইকেটে জয়ের দিকে নিয়ে যায়। ক্রমান্বয়ে চৌকষ খেলোয়াড় হিসাবে বিকশিত জমাতুল্লাহ আমারজাঈ ৩১ রানে অপরাজিত থাকে।

আফগানিস্তান প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে পরাজয়ের পর থেকেই তুখোড় ব্যাটিং, বোলিং এমনকি ফিল্ডিং করছে। অন্য কোনো দলের সাহস নেই চার জন স্পিনার নিয়ে খেলার। ভেবে দেখুন যে দলের  দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ নেই।  যে দলের ক্রিকেটারদের হাতে খড়ি হয়েছে পেশোয়ারের শরণার্থী শিবিরে, যারা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে ভারত, ইউএই অথবা শ্রীলংকায় তারা এই বিশ্বকাপে একের পর এক চমক দিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করছে।  আফগান রূপ কথা থেকে বাংলাদেশের মত দলগুলোর অনেক কিছুই শেখার আছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

nine − five =