ব্রুনোর জোড়া গোলে উরুগুয়েকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে পর্তুগাল

মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের জোড়া গোলে এক ম্যাচ বাকী রেখেই কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। এইচ গ্রুপে সোমবার রাতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পর্তুগাল ২-০ গোলে হারায় প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করা উরুগুয়েকে। ম্যাচের ৫৪ ও দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে গোল দুটি  করেন ব্রুনো। এই জয়ে গেল বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে উরুগুয়ের কাছে হারের বদলাও নিলো পর্তুগাল।

এ জয়ে ২ খেলায় ২ জয়ে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপ থেকে প্রথম দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করলো পর্তুগাল। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১টি হার ও ড্রতে মাত্র ১ পয়েন্ট উরুগুয়ের। গ্রুপের অন্য দুই দল ঘানা ৩ ও দক্ষিণ কোরিয়ার পয়েন্ট ১। শেষ ষোলোতে যাবার এখনো সুযোগ আছে ঘানা, দক্ষিণ কোরিয়া ও উরুগুয়ে তিন দলেরই।

পর্তুগাল জয় দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করলেও, প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে। বিশ্বকাপের মঞ্চেই পর্তুগালের বিপক্ষে সুখস্মৃতি আছে উরুগুয়ের। গেলবারের বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে পর্তুগালের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছিলো উরুগুয়ে।

তারকা ফুটবলার লুইস সুয়ারেজকে ছাড়াই লুসাইলের লুসাইল স্টেডিয়ামে পর্তুগালের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে নামে উরুগুয়ে। ম্যাচ শুরুর পর প্রথম ৫ মিনিটের মধ্যে ১টি করে আক্রমণ করে পর্তুগাল ও উরুগুয়ে। কোন আক্রমনই  দুই দলের ভক্ত সমর্থকদের  আনন্দ দিতে  পারেনি। দলের তারকা খেলোয়াড়  ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে ঘিরে  আক্রমণ ভাগ সাজানো পর্তুগাল প্রথম আক্রমনে যাওয়ার পর  বল দখলে নেয় পর্তুগাল। মূলত মাঝমাঠ থেকে আক্রমণের পরিকল্পনা করে তারা।

তবে সতীর্থদের কাছ থেকে বল পেলেও উরুগুয়ের ডিফেন্স ভাঙ্গতে পারছিলেন না রোনালদো। ৩২ মিনিটের এগিয়ে যাবার দারুন সুযোগ পেয়েছিলো উরুগুয়ে। স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানির পাস থেকে বল পেয়েই ডি বক্সের মধ্যে ড্রিবলিং করে ঢুকে যান মিডফিল্ডার রডরিগো বেনটানকার। সামনে ছিলো পর্তুগালের গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। এগিয়ে এসে বেনটানকারের শট রুখে দিয়ে উরুগুয়েকে গোল বঞ্চিত করেন কস্তা।

ঐ আক্রমণের পর সমানতালে লড়তে থাকে পর্তুগাল ও উরুগুয়ে। আক্রমণের চেষ্টা করেও প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে এসে আটকে যায় দু’দলের চেষ্টাগুলো। ৪২ মিনিটে বড়সড় ধাক্কা খায় পর্তুগাল। ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার নুনো মেন্ডেস। শেষ পর্যন্ত কোন গোল ছাড়াই শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ। এই অর্ধে ৭০ শতাংশ বল দখলে ছিলো পর্তুগালের।  প্রথমার্ধে পর্তুগাল ৮টি ও উরুগুয়ে ৪টি আক্রমণ চালায়।

বিরতির পর মাঠে ফিরেই উরুগুয়েকে চেপে ধরে পর্তুগাল। খুব দ্রুতই সাফল্য পেয়ে যায় তারা। মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের গোলে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। স্ট্রাইকার রাফায়েল লিয়াওর পাস থেকে গোল মুখে শট নেন ব্রুনো। বল গোল মুখে যাবার সময় বলে স্পর্শ করার চেষ্টা করেন রোনালদো। তবে তার স্পর্শ ছাড়াই বল জালে প্রবেশ করে। গোলের আনন্দে মেতে উঠে পর্তুগিজরা (১-০)।

গোল হজমের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় উরুগুয়ে। উরুগুয়ের আক্রমনের চাপে রক্ষণাত্মক খেলতে থাকে পর্তুগাল। ৭৮ মিনিটে মিডফিল্ডার গিওর্গিয়ান ডি আরাসকায়েটার ক্রস থেকে সুয়ারেরেজ শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন পর্তুগালের গোলরক্ষক। ৮৫ মিনিটে সুয়ারেজের আরও একটি শট পর্তুগালের গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।

৯০ মিনিটে ভিএআরের সিদ্বান্তে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। পেনাল্টি থেকে ম্যাচের ও নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ব্রুনো। ব্রুনোর জোড়া গোলে ২-০ লিড নিয়ে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে  পর্তুগাল। শেষ অর্ধের ইনজুরির সময়ের ১১তম মিনিটে রেফারির শেষ বাঁশিতে জয় নিশ্চিত হয় পর্তুূগালের।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

7 + 7 =